মেয়ে বলে কলকাতার ছেলেকে ফোন, তুলে নেয় নগ্ন ভিডিয়ো, ৩৬ লাখের প্রতারণা, ধৃত যুবক

অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা বাড়ছে। এই সমস্ত প্রতারকদের লক্ষ্য হল সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। এর জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছে প্রতারকরা। তার মধ্যে একটি হল সেক্সটরশন। এই সেক্সটরশনের ক্ষেত্রেও আবার বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করছে প্রতারকরা। মূলত সাধারণ মানুষকে যৌনতার ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেল করে প্রতারকরা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রতারকরা কখনও নিজেদের পুলিশ আবার কখনও কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিক পরিচয় দিয়ে লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এই ধরনের একটি মামলায় ৩৬ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ এক যুবককে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের সাইবার থানার পুলিশ। 

আরও পড়ুন: সেক্সটরশনে এবার নয়া কৌশল, অশ্লীল ভিডিয়ো কলের পর ফোন করছেন ‘আইপিএস’

জানা গিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম জাহিদ। হরিয়ানার বাসিন্দা ওই যুবককে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। শুক্রবার তাকে স্থানীয় ফিরোজপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত ট্রানজিট রিমান্ডের নির্দেশ দেন। এরপরে কলকাতায় আনা হচ্ছে ওই যুবককে। জানা যাচ্ছে, ওই যুবকের বিরুদ্ধে যৌনতার ফাঁদে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বছরখানেক আগে। কলকাতার এক যুবককে মহিলা পরিচয় দিয়ে ভিডিয়ো কল করে সে। সেই ফোন ধরতেই ঘটেছিল বিপত্তি। অভিযোগ, কলকাতার যুবককে নগ্ন হতে বলেছিল প্রতারক। সেই মতো তিনি নগ্ন হয়ে যান। এরপরেই সেই অবস্থার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে প্রতারকরা। এরপর তারা কেন্দ্রীয় এজেন্সি প্রতিনিধি বলে দাবি করে কলকাতার যুবককে ফোন করে।

শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিভিন্ন সমাজ মাধ্যম পেজে সেই নগ্ন ভিডিয়ো পোস্ট করে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা। তাতে স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন কলকাতার যুবক । তিনি সত্যি-সত্যি প্রতারকদের কেন্দ্রীয় এজেন্সির প্রতিনিধি ভেবেছিলেন। এরপর বিষয়টি মিটমাটের জন্য কয়েকলক্ষ টাকা দাবি করেছিল প্রতারকরা। সেইমতো যুবক ওই টাকা দেওয়ার পর জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৩৬ লক্ষ টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে। পরে বুঝতে পারেন তিনি প্রতারকদের ফাঁদে পা পড়েছেন।

এই ঘটনায় লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানান যুবক। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে হরিয়ানার একটি প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পা দিয়েছিলেন কলকাতার ওই যুবক। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ এর আগে প্রথমে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। এরপর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জাহিদের কথা জানতে পারে পুলিশ। অবশেষে হরিয়ানায় হানা দিয়ে জাহিদকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। এই ঘটনার সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। একই সঙ্গে কতজনের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।