Bangladesh: বাংলাদেশে কালী মন্দিরে আগুন, সন্দেহের বশে ৭ জনকে হাত – পা বেঁধে পেটাল জনতা, মৃত ২

বাংলাদেশের ফরিদপুরে মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২ নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে মারল উন্মত্ত জনতা। এই ঘটনায় ৫ জন নির্মাণশ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনা বাংলাদেশের ফরিদপুর উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লি এলাকার। ঘটনার পর উত্তেজনা প্রশমনে সেখানে BGB মোতায়েন করেছে প্রশাসন। কী ভাবে মন্দিরে আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখা হয়েছে।

হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় মন্দিরে আগুন

ফরিদপুরের পঞ্চপল্লি এলাকা হিন্দু অধ্যুষিত। সেখানে রয়েছে একটি কালী মন্দির। মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি প্রাথমিক স্কুল। সেখানে শৌচাগার নির্মাণের কাজ করছিলেন কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক। স্থানীয়দের দাবি, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ তাঁরা দেখেন মন্দির জ্বলছে। পাশে স্কুলে থাকা নির্মাণ শ্রমিকরাই মন্দিরে আগুন লাগিয়েছেন বলে দাবি করতে থাকেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা।

অভিযোগ, এর পরই কয়েকশ’ উন্মত্ত জনতা স্কুলে থাকা নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। হাত পা বেঁধে ৭ জন নির্মাণ শ্রমিককে পেটানো হয় বলে অভিযোগ। এর পর তাদের কেরোসিন ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ।

সন্দেশের বশে নৃশংস মার

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলেও সুবিধা করতে পারেনি তারা। প্রায় ৬ ঘণ্টা পর ফাঁকা রাউন্ড ফায়ার করতে করতে আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে ২ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাকি ৫ জনের মধ্যে ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

স্থানীয় পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনায় নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর আক্রমণ করে জনতা। হতাহতরা সবাই মধুখালি এলাকার বাসিন্দা।’

স্থানীয় এক আওয়ামি লিগ নেতা বলেন, ‘মন্দিরে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি উন্মত্ত জনতা নির্মাণ শ্রমিকদের আক্রমণ করেছে। আমরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি।’

ঘটনার পর এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিন প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করেছে প্রশাসন।

বাংলাদেশে হিন্দু মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ নতুন কিছু নয়। তবে মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এরকম পালটা হামলা সাম্প্রতিককালে দেখা যায়নি সেদেশে। ২০২১ সালের দুর্গাপুজোয় বাংলাদেশ জুড়ে ব্যাপক হিন্দু বিরোধী হিংসা ছড়ায়। তাতে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়। ভাঙা হয় একের পর এক মন্দির ও মণ্ডপ। সেই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বাংলাদেশের হাসিনা সরকারকে।