Mamata Banerjee on SSC Case Verdict: ‘বেআইনি অর্ডার’, ২৬০০০ চাকরি বাতিলের নির্দেশ নিয়ে হাই কোর্টকেই কার্যত আক্রমণ মমতার

আজই কলকাতা হাই কোর্ট এসএসসি দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করে জানায়, ২০১৬ প্যানেলের প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল হবে। এই আবহে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের প্রতিক্রিয়া দিলেন। হাই কোর্টের রায়কে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিলেন তিনি। চাকুলিয়ার এক জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘এই অর্ডার বেআইনি অর্ডার। হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করছি।’ কলকাতা হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলে জানান তিনি। অপরদিকে এই রায় নিয়ে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও এক হাত নেন মমতা। বলেন, ‘বলছে বোমা ফাটাবে। বোমা কী? ২৬ হাজার লোকের চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। মানুষের জীবনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার নাম বোমা। কোর্ট কী রায় দেবে আগে জানলি কী ভাবে? সোমবার রায় দেবে, শনিবার জানলি কী ভাবে? যদি রায় নিজেরা লিখে না দিস?’

এদিকে এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারও জানিয়েছেন, তারা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। তাঁর বক্তব্য, পাঁচ হাজার অভিযুক্তর জন্য ২৬ হাজারের চাকরি কেন যাবে? হাই কোর্টের রায় নিয়ে রাজ্য সরকারের বক্তব্য, সব চাকরি বাতিল না করলেই পারত হাই কোর্ট। সিবিআই তদন্তে যে সব চাকরি বেআইনি বলে প্রমাণিত হয়েছে, সেই চাকরিপ্রাপকদেরই নিয়োগ বাতিল করা যেত। (আরও পড়ুন: চাকরি গেল প্রায় ২৬ হাজারের, তবে ক্যানসার আক্রান্ত সোমার নিয়োগ বাতিল করল না HC)

এদিকে চাকরিপ্রাপকদের হয়ে মামলা লড়া আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায় নিয়ে বলেন, ‘এই রায় পুরোপুরি ত্রুটিপূর্ণ। এই মামলায় আসল বিষয়টি বুঝতে পারেনি হাই কোর্ট। আমি আশা করে, পাঁচ মিনিটে এই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেবে সপ্রিম কোর্ট।’ সিবিআই যে প্রক্রিয়ায় এসএসসি মামলার তদন্ত করেছে, তার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ সবির রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ রায়দান করে বলে, ২০১৬ সালে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দ্বাদশে নিয়োগ পাওয়া এসএসসি চাকরিপ্রাপকদের সবার চাকরি বাতিল হবে। পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত বলে, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের চাকরি বৈধ হতে পারে না। অন্যদিকে চাকরিহারাদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে সব বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রাপ্ত বেতনের ওপর ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে চাকরিহারাদের। এর জন্যে চাকরিহারাদের ৪ সপ্তাহ সময় দিয়েছে হাই কোর্ট। এই টাকা জেলাশাসকের কাছে জমা করতে হবে তাঁদের। পরে জেলাশাসক পরবর্তী ২ সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা হাই কোর্টে জমা দেবেন।

অপরদিকে এসএসসি-কে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুরও নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। ২৩ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ওমএমআর শিট পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টেন্ডার ডেকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলল আদালত। এর পাশাপাশি এসএসসির সার্ভারে দ্রুত ওএমআর শিট আপলোড করতে বলেছে হাই কোর্ট। এদিকে হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত জারি রাখবে সিবিআই। নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘যাকে প্রয়োজন, তাকেই হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই’।