চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন শুরু, শুভেন্দু–অভিজিৎকে কাঠগড়ায় তুলে অনশন তমলুকে

কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক–অশিক্ষক কর্মীর চাকরি গিয়েছে। এবার এই ঘটনার জেরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তুলে আন্দোলনে নামলেন চাকরিহারা শিক্ষক– অশিক্ষক কর্মীদের একটা বড় অংশ। শুভেন্দু অধিকারীর গড় তমলুক জেলা সদরে অনশন করছেন তাঁরা। এই লোকসভা কেন্দ্রেরই প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সুতরাং স্নায়ুর চাপ বেড়েছে। কারণ আন্দোলনকারী শিক্ষকরা দাবি করছেন, তাঁরা ষড়যন্ত্রের শিকার। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির মামলা বহুদিন ধরে শুনানি হয়েছে এই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেই। যিনি এখন বিজেপি প্রার্থী। তাই তমলুককে আন্দোলনের জন্য বেছে নিয়েছেন শিক্ষকরা।

লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এবার চাপে পড়ে গিয়েছে। রবিবার দিন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক সেলের নেতৃত্বে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে। চাকরিহারা শিক্ষকরা এখন তমলুকের হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন এলাকায় মঞ্চ বেঁধে আন্দোলন করছেন। ইতিমধ্যেই অনশন কটা দিন পার করে ফেলেছে। শিক্ষকদের দাবি, ২০১৬ সালের যোগ্যদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। অবিলম্বে এই যোগ্যদের চাকরিতে ফেরাতে হবে। কারণ তাঁরা যোগ্যতা প্রমাণ করে চাকরি পেয়েছেন। আর তা না হলে আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌কংগ্রেসের একমাত্র লক্ষ্য বিজেপির আসন হ্রাস করা’‌, অধীরের মন্তব্য নিয়ে জয়রামের বার্তা

কিন্তু শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আন্দোলন কেন?‌ এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর জবাবে শিক্ষকদের দাবি, অভিজিৎ–শুভেন্দুর আঁতাতেই ২৬ হাজার শিক্ষক–অশিক্ষক কর্মীরা চাকরিহারা হয়েছেন। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি মইদুল ইসলাম বলেন, ‘আগে থেকেই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের যোগসাজশ ছিল। সেটা এখন প্রমাণিত। তাই বিচারপতির পদে আগাম ইস্তফা দিয়ে তিনি বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। চাকরি ফিরে পেতে তাই শুভেন্দু অধিকারীর জেলা এব‌ং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কেন্দ্রকেই আমরা বেছে নিয়েছি।’‌

পরিস্থিতি কি জটিল হচ্ছে?‌ শিক্ষকদের আন্দোলন একটা চাপ তো তৈরি করেছেই। তার উপর লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে। শুভেন্দু অধিকারী যে বিষয়টি তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল সেটাই এখন ব্যুমেরাং হয়েছে। এই আন্দোলনে সামিল হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি এবং মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। সুতরাং বিপুল পরিমাণ শিক্ষক এই তীব্র দাবদাহকে সঙ্গী করে অনশন আন্দোলনে বসেছেন। তাতে তাঁদের শরীর খারাপ হতে পারে। আর তা যদি হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়বে। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি মইদুল ইসলামের বক্তব্য, ‘আমরা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় আছি। আগামী সোমবার পর্যন্ত ধরনা–অনশন চলবে।’‌ চাকরিহারা শিক্ষক ‌ব্রজেন্দ্রলাল গিরির কথায়, ‘‌নিয়ম মেনেই নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছি। যোগ্য তালিকায় নাম ছিল। আর তাই শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছি।’‌