‘‌সেলফ স্টাডিই এই সাফল্য নিয়ে এসেছে’‌, মাধ্যমিকে তৃতীয় হয়ে জানালেন নৈঋতরঞ্জন

গতকাল রাতেও যা ছিল অজানা, অকল্পনীয় আজ, বৃহস্পতিবার সকাল হতেই সেটাই ঘটল। একরাশ টেনশন নিয়ে টিভির সামনে বসে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শুনছিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সাংবাদিক বৈঠক। তিনি মেধাবী ছাত্র। কিন্তু এমনটা তাঁর সঙ্গে ঘটবে সেটা অজানা ছিল। কল্পনাও করতে পারেননি বাস্তবটা এত খুশি বয়ে নিয়ে আসবে। মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশ হতেই দেখা যায়, এবারও কলকাতাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে জেলা। ১ থেকে ১০ স্থানের মেধা তালিকায় এবার স্থান পেয়েছে মোট ৫৭ জন। এবারের ফলাফলে সার্বিকভাবে প্রথম এবং মেয়েদের মধ্যে প্রথম দুটো স্থানই অধিকার করেছে জেলার পড়ুয়ারা। এবারের মাধ্যমিকে তৃতীয় হয়েছে তিনজন। তাদের মধ্যে রয়েছে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র নৈঋতরঞ্জন পাল। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১।

এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর গোটা পরিবারে খুশির হাওয়া বয়ে নিয়ে এল। কিন্তু নৈঋত কী বলছেন?‌ এখন এটাই সবাই শুনতে চান। এই সাফল্যের বিষয়ে নৈঋত বলেন, ‘‌এতটা সাফল্য পাবো আশা করিনি। তবে এই ফলাফলে ভাল লাগছে। দিনে সাড়ে পাঁচ থেকে ৬ ঘন্টা পড়তাম আমি। আর টেস্ট পরীক্ষার পরে অবশ্য পড়াশোনার সময়টা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। আর সেলফ স্টাডিই এই সাফল্য নিয়ে এসেছে। মিশনে মূলত শ্রেণিকক্ষের শিক্ষকদের কাছে শেখা ও নিজের পড়াশোনার উপরেই বেশি করে জোর দিয়েছিলাম। সেটাই এমন সাফল্য নিয়ে এল।’‌

আরও পড়ুন:‌ ‘‌আমি চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই’‌, মাধ্যমিকে প্রথম হয়ে ইচ্ছাপ্রকাশ চন্দ্রচূড়ের

মাধ্যমিক পরীক্ষার পড়ার ফাঁকে সময় কাটত কেমন করে?‌ এই প্রশ্ন করা হয় নৈঋত রঞ্জন পালকে। তাঁর বক্তব্য, ‘‌পড়াশোনা ছাড়া অবসর সময়ে গানবাজনা এবং গল্পের বই পড়া চলত। তবে মোবাইল নিয়ে আমি সময় কাটাতাম না। কোনও অভ্যাস আমার নেই। মোবাইলের কোনও ব্যবহার মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে লাগেনি। বরং বিকেলে খেলাধূলা করতাম রোজই।’‌ এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছেন সাম্যপ্রিয় গুরুম। তিনি পুরুলিয়া জেলা স্কুলের ছাত্র। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯২। তৃতীয় হয়েছেন বালুরঘাট হাইস্কুলের উদয়ন প্রসাদ, পুষ্পিতা বাশুরি, নৈঋতরঞ্জন পাল।

এবারের মাধ্য়মিক পরীক্ষায় প্রথম দশজনের মধ্যে রয়েছে মোট ৫৭ জন ছাত্রছাত্রী। এই মেধাতালিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে ৮ জন, দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ৭ জন, বাঁকুড়া, মালদা, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৪ জন, বীরভূম থেকে ৩ জন, উত্তর ২৪ পরগনা, কোচবিহার, হুগলি থেকে ২ জন এবং নদিয়া, হাওড়া, পুরুলিয়া, কলকাতা থেকে ১ জন পড়ুয়া রয়েছে। পরীক্ষায় ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৪১১ জন। এবারের মাধ্যমিকে পাশের হার সবচেয়ে বেশি উত্তরবঙ্গের কালিম্পং জেলায়। পাশের হারে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। আর তৃতীয় স্থানে কলকাতা।