Hindu marriage: প্রয়োজনীয় রীতি-অনুষ্ঠান ছাড়া হিন্দু বিবাহ বৈধ নয়, পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

হিন্দু বিবাহ শুধু মাত্র নাচ-গান, খানা-পিনা বা বাণিজ্যিক লেনদেনের অনুষ্ঠান হতে পারে না। প্রয়োজনীয় প্রথা এবং আচার ছাড়া হিন্দু বিয়ে অবৈধ। দুই প্রশিক্ষিত বিমান চালকের বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত একটি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বি ভি নাগারথনা এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চ এমনই পর্যবেক্ষণ করে বলেছে, হিন্দু বিবাহ হল একটি ‘সংস্কার’ এবং একটি ধর্মানুষ্ঠান, ভারতীয় সমাজে এর ব্যাপক মর্যাদা রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ‘‌সপ্তপদী’‌ ছাড়া হিন্দু আইনে বিবাহ বৈধ নয়, বড় রায় দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট

সুপ্রিম কোর্টের মতে, হিন্দু বিবাহ ততক্ষণ পর্যন্ত ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইনের অধীনে স্বীকৃতি পাবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত যথাযথ আচার এবং অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঞ্চালিত হবে। সুপ্রিম কোর্ট জোর দিয়ে বলেছে, শুধুমাত্র একটি বিয়ের শংসাপত্রই হিন্দু বিবাহ আইনের অধীনে বৈধ বিয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। এটি একটি আচার যেটাকে ভারতীয় সমাজে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। 

মামলার বয়ান অনুযায়ী, ওই দুই পাইলট হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী অনুষ্ঠান না করেই বিয়ে করেছিলেন। তারা বিবাহবিচ্ছেদের ডিক্রি চেয়েছিলেন। বেঞ্চ তাঁদের বিবাহ সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করার পরামর্শ দেয়। ভারতীয় সমাজে বিয়ে কতটা পবিত্র তাও ওই দম্পতিকে মনে করিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘বিবাহের অনুষ্ঠান নাচ গান এবং খাওয়া দাওয়া বা যৌতুক এবং উপহারের দাবির মতো চাপ তৈরি করার লক্ষ্য হতে পারে না। এই ধরনের অভিযোগের পরে ফৌজদারি মামলা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি একটি পবিত্র অনুষ্ঠান, যা একজন পুরুষ এবং একজন মহিলার মধ্যে সম্পর্ক তৈরির জন্য পরিচালিত করা হয়। এতে ছেলে এবং মেয়ে ভবিষ্যতে একটি পরিবারের জন্য স্বামী ও স্ত্রীর মর্যাদা অর্জন করে, যা ভারতীয় সমাজের ভিত্তি।’

বেঞ্চ আরও বলেছে, হিন্দু বিবাহ বংশবৃদ্ধি সহজ করে এবং পারিবারিক ঐক্যকে মজবুত করে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধকে শক্তিশালী করে। এই বিবাহ পবিত্র কারণ এটি দুই ব্যক্তির মধ্যে আজীবন, মর্যাদাপূর্ণ, সমান, সম্মতিপূর্ণ এবং সুস্থ সম্পর্ক স্থাপন করে। 

হিন্দু বিবাহ আইনের বিষয়গুলি বিবেচনা করে বেঞ্চ বলেছে, বিবাহ যথাযথ অনুষ্ঠান এবং রীতি মেনে সম্পাদিত না হলে আইনের ৭(১) ধারা অনুযায়ী এটিকে বিবাহ বলা যাবে না। এই ধরনের আচার ও অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সপ্তপদী বা সাত পাক । এই রীতি না মানলে সেটি বিয়ে বলে গণ্য হবে না। 

আদালত বলেছে, হিন্দু বিবাহে একটি ধর্মানুষ্ঠান এবং পবিত্রতা রয়েছে৷ ঋখ বেদ অনুযায়ী, সাত পাক শেষ করার পর বর কনেকে বলে, সাত ধাপের মাধ্যমে আমরা বন্ধু হয়েছি (সখা) আমি যেন তোমার বন্ধুত্ব থেকে বিচ্ছিন্ন না হই। স্ত্রীকে অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রসঙ্গত, এর আগেও এই ধরনের পর্যবেক্ষণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।