Kunal Ghosh: কান্নাকাটির ফল মিলছে, ডেরেকের সঙ্গে বৈঠকে কুণাল, উদ্যোগে ব্রাত্য

এতদিনের এই যে কড়া কড়া কথা, দলের একাংশের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ তাতে এবার ইতি পড়তে পারে। সূত্রের খবর, ব্রাত্য বসুর মধ্য়স্থতায় এবার ডেরেক ও ব্রায়েনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন কুণাল ঘোষ। দলের অন্দরে ব্রাত্য বসু কুণালের অন্য়তম বন্ধু বলেই পরিচিত। সেই ব্রাত্যের উদ্য়োগেই এই বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে। 

আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে. শুক্রবার সকালে ব্রাত্য কুণালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ডেরেকের সঙ্গে বৈঠকে বসতে তিনি অনুরোধ করেন। কুণাল জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি বৈঠকে বসতে রাজি আছেন। কিন্তু সেখানে ব্রাত্যকেও থাকতে হবে। আসলে তিনি ডেরেকের সঙ্গে একান্তে কোনও বৈঠক করতে রাজি হননি। …সেই মতো দক্ষিণ কলকাতার একটি ঠিকানায় ডেরেকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কুণাল ঘোষ। 

সূত্রের খবর, কুণালের সঙ্গে দলের এই পরিস্থিতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছেও দরবার করেছিলেন এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। কুণালকে লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছিল। তারপর থেকেই কুণালের সঙ্গে বৈঠক করার ব্যাপারে, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার ব্যাপারে দলের অন্দরে নানা তোড়জোড় শুরু করে। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোটপর্বের মধ্য়ে কুণালের সঙ্গে দলের এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে নানা কথা উঠতে থাকে। কারণ কুণাল যেভাবে মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন তাতে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি বাড়ছিল। এমনকী মন্ত্রিসভার এক সদস্যের বিরুদ্ধেও তিনি আঙুল তুলেছিলেন। দলের অন্দরে কোণঠাসা হওয়ার পরে কিছু কর্মীকে দেখে কান্নাকাটিও করেছিলেন কুণাল। 

এদিকে মঙ্গলবার উত্তর কলকাতায় একটি ক্লাবের রক্তদান অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন কুণাল ঘোষ। তখন মঞ্চে ছিলেন দলত্যাগী তৃণমূল নেতা তথা ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। মঞ্চে তাপসবাবুর ভূয়সী প্রশংসা করেন কুণাল। পরদিনই বিবৃতি দিয়ে তাঁকে পদ থেকে বহিষ্কারের কথা জানায় তৃণমূল। এমনকী কুণালের কোনও বক্তব্যকে তৃণমূলের বক্তব্য বলে প্রচার করা যাবে না বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়।

এদিকে দলের মুখপাত্রের পদ থেকে আগেই সরে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর দল তাঁকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এমনকী তারকা প্রচারকের তালিকাতেও আর নাম নেই কুণালের। কার্যত একলা কুণাল! 

তিনি কখনও বলছিলেন, তিনি তৃণমূল কর্মী ছিলেন আছেন থাকবেন। কখনও আবার বলছেন থাকার চেষ্টা করব। সেই সঙ্গেই এদিন তিনি বলেন, পদে নয় পথে আছি। এরপই স্লোগান ওঠে কুণাল ঘোষ জিন্দাবাদ। এরপর আর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। কথা বলতে গিয়ে ধরে আসে কুণালের গলা। চোখে জল। কুণালের এই চোখে জল দেখে আবেগে ভেসে যান কর্মীদের একাংশও। বার বার রুমাল দিয়ে চোখের জল মোছেন তিনি।

কুণালের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে গিয়েও দিব্যি তারকা হয়ে বসে রয়েছেন অনেকে( দেব)। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেই। তবে তাঁর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনও আফসোস নেই তার। এমনটাই জানিয়েছেন কুণাল। সেই কুণালের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের যে বরফ তৈরি হয়েছিল সেটা হয়তো এবার গলে জল হতে পারে। 

বৈঠক শেষে কুণাল এবিপি আনন্দে বলেন, তৃণমূলে ছিলাম, আছি থাকব। বৈঠকে গিয়েছিলাম। আমি তো দলেরই কর্মী। যে ইস্যুগুলি ছিল সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্যক্তিগত সন্তোষ অসন্তোষের বিষয় ছিল না।