World Asthma Day 2024 Asthma For Pollution Best Diet Food Habit Sleeping Habit Exercise Tips By Padma Shri Awardee Mukesh Batra Bengali News

World Asthma Day 2024 Diet And Exercise Tips: ৭ মে বিশ্ব অ্যাজ়মা দিবস (World Asthma Day 2024) । অ্যাজ়মার মতো ক্রনিক রোগ অনেকের জীবনযাপন পাল্টে দেয়। জীবনধারার পরিবর্তন এনে দেয়। বর্তমান সময়ে দূষণের পরিমাণ বাড়ছে। আর দূষণ অ্যাজ়মার একটি বড় কারণ। এই অবস্থায় অ্যাজ়মার সমস্যা কীভাবে সামাল দেওয়া যায় ? অ্যান্টিপলিউশন ডায়েট নামের কোনও ডায়েট কি করতে পারেন অ্যাজ়মার রোগীরা ? এই বিষয়ে এবিপি লাইভ বাংলার সঙ্গে কথা বললেন ডক্টর বাত্রাস হেলথকেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পদ্মশ্রী পুরষ্কারপ্রাপ্ত  চিকিৎসক মুকেশ বাত্রা।

(ছবি ঋণ – পিক্স্যাবে)

অ্যান্টিপলিউশন ডায়েট আদতে কী ? 

অ্যান্টিপলিউশন ডায়েট বলতে আদতে বোঝানো হয়, এমন এক ধরনের খাবার, যা আমাদের দূষণের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু সত্যিই কি এমন কোনও ডায়েট হয় ? এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক মুকেশ বাত্রা বললেন, নির্দিষ্টভাবে এই নামের কোনও ডায়েট হয় না। দূষণ এখন সর্বত্র। তাই দূষণের হাত থেকে বাঁচতে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা দরকার। এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে যে যে খাবার, তাদেরই বলা যায় অ্যান্টিপলিউশন ডায়েট।

রাতের খাবার সঠিক সময়

ডায়েটের বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার আগে চিকিৎসক জানালেন কিছু অভ্য়াসের কথা। অ্যাজ়মা রোগীদের অতি অবশ্যই যে অভ্যাস থাকা উচিত, তা হল রাতের খাবার সন্ধ্যে থাকতে খেয়ে নেওয়া। অর্থাৎ যাকে আমরা বলে থাকি, আর্লি ডিনার। সাধারণত বেশিরভাগ চিকিৎসকরা রাত আটটার সময় খাবার খেয়ে নিতে বলেন। চিকিৎসক মুকেশ বাত্রার কথায়, আটটায় না হলেও অন্তত শুতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে খাবার খেয়ে নেওয়া জরুরি। 

খেতে হবে হালকা খাবার

রাতের খাবার শুধু তাড়াতাড়ি খেলেই হবে না। খেতে হবে হালকা খাবার (Asthma diet)। হালকা খাবার দ্রুত হজম হয়। পাশাপাশি মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে। রাতের জন্য এই ফর্মুলা মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক মুকেশ বাত্রা। তাঁর অবশ্য কারণও রয়েছে। চিকিৎসকের কথায়, একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, অধিকাংশ সময় অ্যাজমার সমস্যা রাতেই হয়। রাতে অ্যাজমার বাড়বাড়ন্ত হয় বলেই কিছু প্রিভেনটিভ রেমিডি বা রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। আর সেই ব্যবস্থার মধ্যেই অন্যতম হল হালকা খাবার সঠিক সময় খেয়ে নেওয়া।

(ছবি ঋণ - পিক্স্যাবে)
(ছবি ঋণ – পিক্স্যাবে)

পেট ভারী হলে…

পেট ভারী থাকলে অ্যাজ়মা রোগীদের কী সমস্যা হতে পারে, তাও বিশদে জানালেন চিকিৎসক মুকেশ বাত্রা। তাঁর কথায়, পেট ভারী হলে খাবারের উপরের দিকে একটি চাপ তৈরি হয়। এই চাপ কিছুটা ফুসফুসের উপরেও পড়ে। যার ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়। এছাড়াও, খাবারের মধ্যে থেকে কিছু নির্দিষ্ট খাবার বাদ দেওয়ার কথাও জানালেন তিনি।

টক ও ঠাণ্ডা খাবারে বিপদ কেন বেশি

রাতের খাবার খাওয়ার সময় দুই ধরনের খাবার পাত থেকে বাদ রাখার পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক মুকেশ বাত্রা। তাঁর কথায়, টক ও ঠাণ্ডা খাবারে অ্যাজ়মার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই এই দুই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা ভাল। ঠাণ্ডা খাবার থেকে ফুসফুসের সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এছাড়াও, বায়ুনালিগুলির সমস্যা হতে পারে। তাই ঠাণ্ডা খাবার অ্যাজ়মা রোগীদের জন্য অস্বাস্থ্যকর। কিন্তু টকজাতীয় খাবারে (Asthma food habit) কী সমস্যা ? সে বিষয়টিও বুঝিয়ে বললেন পদ্মশ্রী প্রাপক মুকেশ বাত্রা। টকজাতীয় খাবার গলায় গৌণ (সেকেন্ডারি) সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এর থেকে ফুসফুসে ছড়াতে পারে সংক্রমণ। তাই রাতের দিকে এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিলেন তিনি।

শ্বাসের ব্যায়াম – খাবার খাওয়ার পাশাপাশি শ্বাসের ব্যায়ামও জরুরি। এমনটাই জানালেন চিকিৎসক মুকেশ বাত্রা। সাধারণত যখন জোরে হাঁটা হয় বা দ্রুত কথা বলা হয়, তখন শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। শ্বাসকষ্টের সমস্যায় লাগাম টানতে ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা যেতে পারে। 

  • ব্রিদিং এক্সারসাইজের মধ্যে প্রাণায়াম করা যায়। রোজ সকাল বিকাল ১০ মিনিট করে এই ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  • কপালভাতিও অনেকে করে থাকেন শ্বাসের সমস্যা দূর করতে। এটিও ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ায়।
  • নাদিশোধন অপেক্ষাকৃত বেশি পরিচিত প্রাণায়াম। এটি নিয়ম মেনে রোজ করতে পারলে অ্যাজ়মার সমস্যা অনেকটাই সামাল দেওয়া যায়।

নিরামিষ আহারে (Asthma veg diet) কেন উপকার ?

অ্যাজ়মা রোগীদের নিরামিষ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক মুকেশ বাত্রা। তাঁর কথায়, নানা দিক থেকে নিরামিষ ডায়েট উপকারী হতে পারে অ্যাজ়মায়। 

  • দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপের সঙ্গে গভীর যোগাযোগ রয়েছে অ্যাজ়মার। আবার সাধারণত প্রাণীজ খাদ্য যেমন মাংস, ডিম শারীরিক ও মানসিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেয়। 
  • এই সমস্য়ার সমাধান করতে পারে নিরামিষ আহার। নিরামিষ খাবারের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি পরিমাণে থাকে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের শারীরিক ও মানসিক উত্তেজনা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোশের মধ্যে থাকা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসও কমিয়ে দেয়। এর ফলে সামগ্রিক স্ট্রেস অনেকটাই কমে যায়। এই কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভেগান বা ভেজিটেরিয়ান ডায়েটের একটি ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে সম্প্রতি।

ফাস্ট ফুডের (Asthma fast food) বদলে বাড়ির খাবার

ফাস্ট ফুডের বদলে বাড়ির খাবার সবসময় ভাল। কিন্তু অ্যাজ়মা রোগীদের জন্য একটু বিশেষ ভাবে ভাল বলে জানালেন চিকিৎসক মুকেশ বাত্রা। তাঁর কথায়, ফাস্ট ফুডও একই ভাবে স্ট্রেসের কারণ হতে পারে। সেই স্ট্রেস সামাল দিতেই পারে বাড়িতে রাঁধা গরম খাবারে ভরসা রাখা ভাল। এই ধরনের খাবার থেকে অ্যাজ়মার সমস্যা কম হয়।

এছাড়াও, খাবারে যা যা থাকা জরুরি

কী খাচ্ছি, তা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ, কারণ খাবারের মধ্যে জরুরি পুষ্টিগুণগুলি পাওয়া যাচ্ছে কি না তা দেখতে হবে। এমনই কিছু জরুরি পুষ্টির কথা বললেন চিকিৎসক।

  • ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
  • ভিটামিন ডি
  • ম্যাগনেশিয়াম

এছাড়াও, হলুদ ও আদাও পাতে রাখা জরুরি বলে জানালেন চিকিৎসক। কারণ এই দুটি উপাদান অ্যাজ়মার সমস্যা অনেকটাই সামাল দেয়।

নির্দিষ্ট সময় ঘুম (Asthma sleeping habit)

খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি ঘুমটাও জরুরি। আর ঘুমোনোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় মেনে চলার পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক। তাঁর কথায়, রাত ১০টা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত ঘুমের সেরা সময়। এর বাইরেও ঘুমোনো যায়। কিন্তু সময় ঠিক রাখতে হবে। একেকদিন একেকসময় ঘুমোলে অ্যাজ়মার সমস্যা বাড়তে পারে।

শোওয়ার সময় মাথা কিছুটা উঁচু রাখা ভাল। কারণ ঘুমের মাঝে শ্বাসকষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়াও,বাঁদিক ফিরে শুলেও এক নিয়ম প্রযোজ্য। হাঁটুর মাঝে একটি বালিশ রাখলে তা আরও ভাল।

(ছবি ঋণ - পিক্স্যাবে)
(ছবি ঋণ – পিক্স্যাবে)

মন শান্ত রাখাই আসল চাবিকাঠি

রোজকার জীবনের সমস্যাও অ্যাজ়মার সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু এই সমস্যাগুলি আমাদের জীবন থেকে সহজে যাওয়ার নয়। তাহলে কী করণীয় ? চিকিৎসক মুকেশ বাত্রা বললেন, এই সমস্যাগুলি যাতে মনকে প্রভাবিত না করে, সেদিকেই নজর দিতে হবে। এর জন্য মনকে শান্ত রাখার প্রক্রিয়া শিখে নেওয়া জরুরি। তেমনই একটি প্রক্রিয়ার হদিস দিলেন নিজেই। সোজা হয়ে বসে চোখ বুজে এক নাক দিয়ে নিশ্বাস নিয়ে অন্য নাক দিয়ে ছাড়তে হবে। ঘুমিয়ে পড়ার মতো অনুভূতি হবে, কিন্তু ঘুমোলে চলবে না। এভাবে রোজ ব্যায়ামটি করলে মন শান্ত রাখার অভ্যাস তৈরি হয়। এছাড়াও, একই উপকার মেলে প্রাণায়াম করলেও। যেভাবে হোক, মন শান্ত রাখাটাই আসল। তাহলে অ্যাজমার থেকে অনেকটা রেহাই মেলে বলেই জানালেন চিকিৎসক।

আপনার পছন্দের খবর এবার হোয়াটসঅ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে।

আরও পড়ুন –  Pet Care In Summer: গরমে ঘন ঘন অসুস্থ হতে পারে পোষ্য, কী কী রোগের ভয় ? যত্ন নেবেন কীভাবে ?

Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )

Calculate The Age Through Age Calculator