সন্তান, ব্যবসা দুটোকেই লালন করেছেন সমান তালে, ৫৫-এর প্রেমা যেন এক আদর্শ মায়ের প্রতিচ্ছবি

মাতৃ দিবস, মানে মায়ের দিন। প্রকৃতপক্ষে মায়েদের যে কী অবিশ্বাস্য শক্তি এবং জীবনের প্রতি নিজেকে কতোটা উৎসর্গ করেন তাঁরা, সেটিকেই  উদযাপন করে এই দিন। একাধারে ঘরে- বাইরে যেভাবে তাঁরা সবদিক সামঞ্জস্য রেখে চলেন তার কুর্নিশ জানাতেই হয়। বাড়িতে তাঁরা যেমন সকলের আদর যত্ন ও খেয়াল রাখেন একইসঙ্গে কর্মক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষতা নিয়ে আসে। 

যে সব কর্মক্ষেত্রে আগে নারীদের অংশগ্রহণ খুবই কম ছিল, এখন সেসব চাকরিতেও নারীর জয়জয়কার। সংগঠন, মাল্টিটাস্কিং বা বহুমুখী প্রতিভা এবং একসঙ্গে অনেক চাপ মোকাবিলার ক্ষেত্রেও পারদর্শী নারীদের সংখ্যা  দিন দিন বাড়ছে। আজ, মহিলারা সমস্ত বাধা বিপত্তিকে লঙ্ঘন করে নিজের নিজের কর্মক্ষেত্রে সুদক্ষতা অর্জন করছেন। 

প্রেমার কাহিনীও ঠিক তেমনিই জীবনযুদ্ধে লড়াই করে সাফল্য অর্জনের। তিনি এমন একজন একাকী মা যিনি শুধুমাত্র ট্রাকিং ব্যবসায়ের দায়িত্ব গ্রহণ করে থেমে থাকেননি অন্যদেরও এই ক্রমবর্ধমান শিল্পে যোগদানের জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন।

২০১৭ সালে স্বামীর অকাল প্রয়াণের পর নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে গিয়েও অ্যামাজনের সঙ্গে ট্রাকিং পার্টনার হিসেবে সফর শুরু করেন এই ৫৫ বছর বয়সী মহিলা । একমাত্র মেয়ের দেখভালের সঙ্গে সঙ্গে কেরিয়ারে এই আমূল পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন তিনি। 

আরও পড়ুন: জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে? নিজেকে শান্ত রাখতে মাথায় রাখুন এই মোক্ষম ১০ টিপ্স

একজন মা কতটা দৃঢ়সংকল্প হতে পারে, তাঁর পরিচয় দিয়েছেন তিনি।  তাঁর নিজের পড়াশুনা ফিনান্স এবং মার্কেটিং নিয়ে হলেও, প্রেমা লজিস্টিকের জগতে ডুবে গিয়েছিলেন। অ্যামাজনের ট্রাকিং পার্টনার প্রোগ্রামের সহায়তায়, তিনি তার ছোট ব্যবসা, সিমার এক্সপ্রেস সলিউশনসকে অ্যামাজনের সাথে সফল ট্রাকিং ব্যবসায় রূপান্তরিত করেন, অর্জন করেন অসাধারণ ব্যবসার প্রসার এবং সাফল্য ।

মহামারী পরিস্থিতি চলাকালীন তিনি ভেঙে পড়েননি, বরং  নিজের ব্যবসায়িক ধারণা এবং অ্যামাজনের সহায়তাকে কাজে লাগিয়ে, প্রেমা নিজেকে রূপান্তরের সুযোগ খুঁজেছেন প্রতিনিয়ত। শুধু তাই নয়, প্রতিকূলতার মুখে নমনীয়তা ও অসাধারণ দৃঢ়তা বজায় রেখে নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করেছেন বারবার। এই নমনীয়তা তাঁকে তাঁর প্রাপ্য সাফল্য এনে দিয়েছে।

গত কয়েক বছরে তার ব্যবসায় আয় বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৫৫% । তার কাহিনী প্রতিটি মা কে অনুপ্রেরণা যোগায়, ঘর-সংসার-কর্মক্ষেত্র একই সঙ্গে সমান তালে বজায় রাখার। সফল ট্রাকিং সংস্থা চালানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজের মেয়েকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য পাঠিয়ে তাঁর স্বপ্ন সফলভাবে পূরণ করেছন তিনি। এইভাবেই জীবনের সমস্ত ভূমিকায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন তিনি।

প্রেমা জানান,  ‘অ্যামাজন ইন্ডিয়ার সাথে যুক্ত হওয়া আমার কাছে একটি ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা। এই অংশীদারিত্ব আমাকে একজন মায়ের সব দায়িত্বের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে একটি সফল কেরিয়ার গড়তে  সহায়তা করেছে। আমি অন্যান্য মহিলাদেরও লজিস্টিকের সম্ভাবনার দিকটি অন্বেষণ করতে বলবো – এটা একটা প্রগতিশীল শিল্প যা সফলতার পথ দেখায়। আমি ও আমার মেয়ে, টিম অ্যামাজনের কাছ থেকে যে অমূল্য সমর্থন পেয়েছি তার জন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ।’

প্রেমার মতো ট্রাকিং পার্টনারদের সাথে কাজ করার পাশাপাশি, অ্যামাজন ভারত জুড়ে ৩৫০ টিরও বেশি ট্রাকিং পার্টনারদের সাথে সহযোগিতা করেছে। এই পার্টনাররা দেশব্যাপী গ্রাহকের প্যাকেজগুলি সময় মতো, নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ উপায়ে সরবরাহ নিশ্চিত করে।  অ্যামাজন এই ট্রাকিং সংস্থাগুলিকে তাদের ড্রাইভারদের জন্য স্বাস্থ্য এবং দুর্ঘটনা বীমা সুবিধাগুলি সহজ করে এবং নিরাপদ ড্রাইভিং এবং সঠিক প্যাকেজ সরবরাহের জন্য প্রযুক্তি-চালিত সমাধান দেয়।

অরুণ কুমার সিং, ভারতের অ্যামাজন ট্রান্সপোর্টেশন সার্ভিসেসের ডাইরেক্টর জানান, ‘প্রেমার কাহিনী অত্যন্ত অনুপ্রেরণামূলক, যা মায়েরা কিভাবে তাদের সন্তানদের জন্য কর্মক্ষেত্র এবং বাড়ি উভয় ক্ষেত্রেই কঠোর পরিশ্রম করেন তার দুর্দান্ত প্রমাণ। প্রেমার মতো ট্রাকিং অংশীদাররা আমাদের কাজকর্মের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং আমি আরও বেশি সংখ্যক মহিলা এবং কর্মজীবী মায়েদের এই জাতীয় সুযোগগুলি বিবেচনা করতে উত্সাহিত করব’। 

অ্যামাজন এমন একটি বৈচিত্র্যময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মীবাহিনী গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে নারীরা বহু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা এবং উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, ফলে প্রতিষ্ঠান জুড়ে উদ্ভাবন এবং উন্নতি সুনিশ্চিত হচ্ছে।