Pok Protests:পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বিক্ষোভ ধামাচাপা দিতে ২৩০০ কোটি মঞ্জুর শরিফ সরকারের

বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে মূল্যস্ফীতি ও বিদ্যুতের দামের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে পাকিস্তানে। অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। কিন্তু ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি আর থামিয়ে রাখতে পারছে না সাধারণ মানুষকে। বিক্ষোভের তাপমাত্রা বাড়ছে। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) এখন প্রতিবাদ অব্যাহত। এমনই পরিস্থিতিতে বড় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।

পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। পাকিস্তানের মানুষ ক্ষুধা ও বেকারত্বে অতিষ্ঠ। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। চলতি বছরে পাকিস্তানের জিডিপি ২.১ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই কারণে, মানুষ গত মাসেও পিওকে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল। অন্যদিকে, পিওকে-র খারাপ পরিস্থিতি সম্পর্কে, পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনও স্বীকার করেছে যে সেখানে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

  • সরকার ২,৩০০ কোটি টাকার তহবিল প্রকাশ করেছে

পিওকে পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, দেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার ২,৩০০ কোটি টাকার তহবিল প্রকাশ করেছে। পিওকে-তে ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে, শাহবাজের সভাপতিত্বে একটি জরুরী বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, ইসলামাবাদে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে একটি বিশেষ বৈঠকে এই তাৎক্ষণিক তহবিল অনুমোদন করা হয়েছিল। এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে পিওকে-র তথাকথিত প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হকের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতা ও জোটের মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। এদিন,রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি রবিবার সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের সমস্যাগুলি ঠাণ্ডা মাথায় সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন।

  • পিওকে-তে বিক্ষোভরত মানুষের কী দাবি

১) উৎপাদন খরচে বিদ্যুৎ দিতে হবে।

২) পাকিস্তান সরকার ময়দার উপর ভর্তুকি শেষ করেছে যেখানে জাতিসংঘের নির্দেশ রয়েছে যে পিওকে-র জনগণকে ময়দা সহ ৩০ টি আইটেমে ভর্তুকি দেওয়া উচিত। কিন্তু পাকিস্তান সরকার তা মানছেন না।

৩) পিওকে আমলাতন্ত্র এবং ৫৩ জন মন্ত্রীকে দেওয়া বিলাসবহুল সুবিধা দেওয়া যাবে না। তাঁদের বিলাসবহুল গাড়ি, দামি বাড়ি এবং টিএ-ডিএ বাতিল করতে হবে।

  • কিন্তু কীভাবে এতটা উত্তেজনা বাড়ছে পাকিস্তানে

কয়েক দিন আগে, নিত্যদিনের জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান দাম নিয়ে পিওকেতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। লোকজন শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছিল, কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে বসে। এতে নারী, এমনকি স্কুলের শিশুরাও আহত হয়। পুলিশি সহিংসতা দেখে, সেখানকার লোকেরা আরও বড় বিক্ষোভের ঘোষণা করে বসে এরপর। অবশেষে এখন তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন। পুলিশ আবারও বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করলে আন্দোলনকারীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। এরপর তাঁরা পাল্টা হামলা চালিয়েছেন পুলিশের ওপর। এই হামলায় একজন পুলিশ নিহত এবং শতাধিক লোক আহত হয়েছেন, যাঁদের বেশিরভাগই পুলিশ বলে খবর।

উল্লেখ্য, পুলিশ সদস্যের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি জোর দিয়েছিলেন যে পিওকে-র জনগণের দাবিগুলি আইন অনুসারে সমাধান করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও পিওকে-তে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং সমস্ত পক্ষকে আমজনতার দাবিগুলি সমাধানের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।