‘‌এটা আমার প্রতীকী প্রতিবাদ’‌, এনডিএ সরকারের শপথের সময় কালীঘাটে নিষ্প্রদীপ মমতা

দু’‌দিন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে ২৯জন জয়ী সাংসদ গিয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদদের সাফ জানিয়ে দেন, নিজের নিজের লোকসভা কেন্দ্রে গিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। সে কাজ শুরু করেছেন দলীয় সাংসদরা। কিন্তু এবার এনডিএ সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকী নয়াদিল্লিতে রবিবার যখন নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সঙ্গীরা শপথ পাঠ করছেন তখন কলকাতায় কালীঘাটে নিজের ঘর অন্ধকার রেখে ‘প্রতীকী প্রতিবাদ’ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে সূত্রের খবর। এই খবর চাউর হতেই শুরু হয়েছে জোর চর্চা।

বাংলায় বিজেপি পেয়েছে মাত্র ১২টি আসন। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২৯টি আসন। গোটা দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। শরিক ধরে এখন এনডিএ সরকার গড়ে উঠেছে। রবিবার রাতেই হয়েছে শপথগ্রহণ। আর এই তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে তৃণমূল কংগ্রেস অংশগ্রহণ করবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতি ভবনে রবিবার সন্ধ্যায় শপথগ্রহণ করেন নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন এনডিএ মন্ত্রিসভা। রাজনাথ সিং, অমিত শাহ–সহ বিজেপির প্রথমসারির নেতাদের শপথ পাঠ চলার সময়ে নিজের ঘরে আলো না জ্বালিয়ে নীরবেই প্রতিবাদ পালন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, ‘চিটিংবাজি করে কেন্দ্রে এই সরকার গড়ে উঠেছে। তার বিরুদ্ধে এটা আমার প্রতীকী প্রতিবাদ।’

আরও পড়ুন:‌ ‘‌একবছরের মধ্যে উড়ালপুলের কাজ শুরু করাবই’‌, এবার অ্যাকশন মুডে কীর্তি আজাদ

এই সরকার গড়ে উঠলেও তা কতদিন চলবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’‌ব্রায়েন। এই এনডিএ সরকার নানা কারচুপি করে এবং অন্যায় পথে গড়ে উঠেছে বলে দাবি তৃণমূলনেত্রীর। নির্বাচনের সময় অন্যায় রুখতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন। তাই প্রধানমন্ত্রীর শপথ বয়কট করে অন্ধকার ঘরে থেকে প্রতিবাদের পথ বেছে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটে শনিবার দলীয় বৈঠকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক সরকার তৈরি করছে।’

এই বৈঠকে এবং তার আগে নির্বাচনের ফলাফলের দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। প্রধানমন্ত্রীর আসন মোদীর ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল। দেশে এবারের রায় মোদীর স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে দিয়েছে মানুষজন। তাঁর কথায়, ‘এত বড় হারের পরে মোদীবাবুর উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর পদ অন্য কাউকে ছেড়ে দেওয়া।’ তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান বিজেপি নেতা প্রহ্লাদ জোশী। কিন্তু তৃণমূল সুপ্রিমোর ঠিক করে দেওয়া অবস্থান মেনেই সুদীপ এবং অন্য কোনও নেতাই ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন না। যোগ দেয়নি সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টি–সহ অনেকেই।