শপিং করতে ভালবাসেন না এমন মহিলা হয়তো দেখাই যাবে না। বাইরে বের হলেই খাওয়া দাওয়ার পাশাপাশি উইন্ডো শপিং করতে ভালোবাসেন মহিলারা। অন্যদিকে অনলাইনের যুগে প্রায়শই করা হয় টুকটাক শপিং। কিন্তু শপিং করার নেশা এতটাই বেড়ে যাবে যে ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও শপিং করবেন? এমন ঘটনাও কি ঘটে? হ্যাঁ, সম্প্রতি ইংল্যান্ডে এমন একটি ঘটনায় রীতিমতো চমকে গেছেন সকলে।
প্যারাসমনিয়া কী?
ঘুমের মধ্যে কথা বলা বা হাঁটাহাঁটি করার রোগকে বলা হয় প্যারাসমনিয়া। অনেকে এটিকে ‘নিশির ডাক’ও বলে। তা বলে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে অনলাইনে কেনাকাটা, তাও আবার লক্ষাধিক টাকার জিনিস কিনে ফেলা, এই ঘটনা বোধহয় প্রথম কারোর সঙ্গে ঘটলো। ঘটনাটি ঘটেছে ইংল্যান্ডের কেলি নাইপস নামের এক মহিলার সঙ্গে।
(আরো পড়ুন: কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোর সেরা রাস্তা! বিশেষ ফল খেতে হবে এভাবে— ভিডিয়োয় দাবি মহিলার)
সম্প্রতি কেলি নামক ওই মহিলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে অনলাইন সাইট থেকে প্রায় ৩ হাজার পাউন্ডের বেশি কেনাকাটা করে ফেলেন। ভারতীয় মুদ্রায় ৩০০০ পাউন্ড অর্থাৎ ৩ লক্ষ টাকারও বেশি কেনাকাটা করেন কেলি। ৪২ বছর বয়সী কেলিকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করায় তিনি বলেন,”ব্যাপারটা মজার শুনতে লাগলেও কিন্তু আদৌ ব্যাপারটা অতটাও মজার নয়। প্রতি রাতে আমি ভীষণভাবে আতঙ্কে থাকি। নিজের অজান্তে কি করে ফেলি, নিজেই বুঝতে পারি না।”
আর পাঁচটা মহিলার মত অনলাইনে জিনিসপত্র দেখার অভ্যাস ছিল কেলির। বর্তমানে পোশাক থেকে মুদির জিনিসপত্র সবকিছুই যে অনলাইনে পাওয়া যায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কেলিও প্রতিদিন অনলাইনে জিনিসপত্র দেখতেন, কখনও আবার অ্যাড কার্ট করেও রাখতেন। কিন্তু সেটি যে এমন বিরল রোগে পরিণত হবে তা তিনি বিন্দুমাত্র টের পাননি।
এই প্রসঙ্গে চিকিৎসকরা বলেছেন, প্যারাসমনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কী করেন, তা তারা নিজেরাও জানেন না। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কথা বলা, গান গাওয়ার মত কাজ তারা অবলীলায় করে ফেলতে পারেন। আসলে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশ ঘুমের মধ্যেও সচল থাকে যার ফলে জেগে থাকাকালীন তারা যে সমস্ত কাজ করেন, এই কাজ তারা ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও করতে পারেন।
(আরো পড়ুন: সবার আগে পরিবার, জানেন কোন কোন রাশির মানুষ মেনে চলেন এই কথা)
প্যারাসমনিয়ায় রোগে আক্রান্ত কেলি প্রতিরাতে এমন কিছু জিনিস কিনেছেন যা আদৌ তাঁর দরকার নেই। আবার এমনও কিছু জিনিস কিনেছেন, যা ফেরত যোগ্য নয়। শুধু কেনাকাটা নয়, ঘুমের মধ্যে নিজের ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্য তিনি একবার জালিয়াতদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, যার ফলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া গিয়েছিল ৩০ হাজার টাকা।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই রোগের কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। তবে কেলিকে আপাতত সিপ্যাপ যন্ত্রের সাহায্যে ঘুমের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও কিছু থেরাপি নিয়মিত করতে হবে কেলিকে, এই ভাবেই হয়ত এক সময় তিনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।