Jamai Shoshti: অরণ্যের মধ্যেই লুকিয়ে জামাইষষ্ঠীর ইতিহাস, জানেন হঠাৎ কীভাবে শুরু হল এই দিনটি

বর্ষা আসতে এখনও কিছুটা দেরি। প্রচন্ড গরমে রীতিমতন নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে সকলের। কিন্তু এর মধ্যেই বাঙালির বাড়িতে বাড়িতে রীতিমতো তোরজোড় শুরু হয়ে গেছে জামাইষষ্ঠীর। গৃহকর্ত্রীর আদেশে দোকান বাজারে দেওয়া হয়েছে লম্বা লিস্ট। জামাইষষ্ঠীর দিন প্রত্যেকটি বাঙালি গৃহস্থ বাড়িতে এলাহি আয়োজন করা হবে শুধুমাত্র জামাইদের উদ্দেশ্যে। আনন্দে মুখরিত হয়ে উঠবে, প্রত্যেকটি মেয়ের বাড়ি।

জামাইষষ্ঠী হল বাঙালির এমন একটি অন্যতম রীতি, যার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে বহু অজানা ইতিহাস। ইতিহাস বলছে, জ্যৈষ্ঠ মাসের এই তিথির সঙ্গে জামাই-এর কোনও সম্পর্কই নাকি ছিল না প্রথমে। এই তিথি নাকি ছিল অরণ্যের। আসলে প্রাচীন অরণ্য ষষ্ঠী থেকেই শুরু হয় জামাইষষ্ঠী।

(আরো পড়ুন: শ্বাসকষ্ট সারাতে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন ‘মাছ প্রসাদ’ খেতে! কোথায় কখন চলে এই রীতি)

অরণ্য ষষ্ঠী কী? 

 

দেবী ষষ্ঠীর আশীর্বাদে যে সন্তান লাভ হয়, তা সকলেরই জানা। মা ষষ্ঠীর আশীর্বাদে মায়ের কোল আলো করে জন্ম নেয় সন্তান। তাই সন্তান লাভের আশায় বা সন্তানের কল্যাণের উদ্দেশ্যে বছরে ১২ টি ষষ্ঠী পালন করার রীতি ছিল গ্রাম বাংলায়। দুর্গা ষষ্ঠী, নীল ষষ্ঠীর মতোই এমন একটি ষষ্ঠী ছিল অরণ্য ষষ্ঠী। এক সময় অরণ্যের মাঝে এই ষষ্ঠী পালন করা হতো।

অরণ্য না থাকলে বাড়ির উঠোন বা দালানকেও ছোটখাটো বাগান বানিয়ে সেখানে ব্রত পালন করতো বাড়ির মায়েরা। তবে এই অরণ্য সৃষ্টির সঙ্গে শুধুমাত্র সন্তানের মঙ্গল কামনাই জড়িয়ে রয়েছে তা নয়, এই রীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রকৃতির উদ্দেশ্যে আরাধনাও।

(আরো পড়ুন: শ্বাসকষ্ট সারাতে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন ‘মাছ প্রসাদ’ খেতে! কোথায় কখন চলে এই রীতি)

কেন পালন করা হতো অরণ্য ষষ্ঠী? 

 

কথিত রয়েছে, একবার দেবী ষষ্ঠী এক গৃহবধূকে শিখিয়েছিলেন অরণ্য ষষ্ঠী ব্রত পালন করার সমস্ত নিয়ম কানুন। ওই বিশেষ দিনে ব্রত পালন করার সময় ওই গৃহবধূ বাড়িতে ডেকেছিলেন নিজের মেয়ে এবং জামাইকেও। জামাই আসার পর দই-চন্দনের ফোঁটা দিয়ে জামাইকে আম কাঁঠাল খেতে বলেন ওই মহিলা। সেই থেকে অরণ্য ষষ্ঠীর সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গেছে জামাইষষ্ঠীর নাম।

বর্তমানে রীতিমতো তিথি নক্ষত্র মেনে জামাই এবং মেয়েকে নিমন্ত্রণ করে জামাই আদর করেন শাশুড়িরা। আজ অরণ্য ষষ্ঠী পালন না করা হলেও অরণ্য ষষ্ঠীর সেই রীতি একইভাবে পালন করে ঘরে ঘরে জামাইষষ্ঠী উদযাপন করা হয়। এই ভাবেই জ্যৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠী তিথিতে ঘরে ঘরে পালন করা হয় জামাইষষ্ঠী।