অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও এখন বিভিন্ন রোগের সম্মুখীন হচ্ছেন। ডায়াবিটিস বা কোলেস্টেরল ছাড়াও বেশ কিছু স্ত্রীরোগও এই তালিকায় রয়েছে। গর্ভাশয়ে সিস্টের সমস্যা এর মধ্যে অন্যতম। তবে এর পাশাপাশি বেশ কিছু রোগও রয়েছে যার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। এই রোগগুলিতে ঋতুস্রাবের সময় প্রচণ্ড ব্যথা হয়। এমনকী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণও হয়। তেমনই একটি জটিল স্ত্রীরোগ হল অ্যাডেনোমায়োসিস। জরায়ুর জটিল রোগগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এই রোগটি চিকিৎসা ছাড়া সারানোও মুশকিল।
অ্যাডেনোমায়োসিস আসলে কী?
জরায়ু একটি ত্রিভুজের মতো অঙ্গ। যার দুই পাশে থাকে ডিম্বাশয় বা ওভারি ও নিচের দিকে থাকে সার্ভিক্স। জরায়ুর দেওয়ালে এন্ডোমেট্রিয়াম, মায়োমেট্রিয়াম ও পেনিমেট্রিয়াম নামের তিনটি স্তর থাকে। সবচেয়ে ভিতরের দেওয়ালটি হল এন্ডোমেট্রিয়াম ও সবচেয়ে বাইরেরটি পেনিমেট্রিয়াম। মাঝের মায়োমেট্রিয়াম স্তরটিতেই দেখা দেয় অ্যাডেনোমায়োসিস। এই রোগে মায়োমেট্রিয়ামের কোনও কোনও কোশ হঠাৎ করেই আকারে বড় হতে থাকে। এর ফলে জরায়ুর দেওয়াল আরও পুরু হতে থাকে। কখনও কখনও বড় হয়ে যাওয়া কোশগুলি এন্ডোমেট্রিয়াম স্তর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তবে এটি কিন্তু এন্ডোমেট্রিয়োসিস নয়। এন্ডোমেট্রিয়োসিস রোগের প্রকৃতি কিছুটা আলাদা।
কোন বয়সে এই সমস্যা হতে পারে?
সাধারণত ৩৫ থেকে ৫০ বছর বয়সি মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মা হওয়ার পরে জরায়ুতে এই রোগ দেখা দেয়। মেনোপজের সময় কিছু ক্ষেত্রে রোগটি নিজে থেকেও সেরে যায়। তবে সবসময় তেমন নাও হতে পারে। অনেক সময় গুরুতর হয়ে ওঠে অ্যাডেনোমায়োসিস। তখন চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। এমনকী অস্ত্রপচারও করা হতে পারে।
লক্ষণ কী কী?
সাধারণত ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এই রোগের প্রধান লক্ষণ। এছাড়াও বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। প্রচণ্ড পেটে ব্যথাও, পেট ফুলে থাকার লক্ষণও দেখা দেয়। জরায়ুর দেওয়াল পুরু হয়ে যায় বলে পেটের আয়তনও কিছুটা বেড়ে যায়। এছাড়াও মিলনের সময় তীব্র যন্ত্রণাও এই রোগের একটি লক্ষণ।