মেসির হাতেই কাপ! কেন বলছে নেটপাড়া । trivia in internet showing messi and argentina winning fifa world cup 2022

অনুষ্টুপ রায় বর্মণ: ফুটবল দুনিয়ার নতুন সেরার সেরা কে হবে তা জানতে বাকি আর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। ২০ বছর বাদে কাপ ফিরবে লাতিন আমেরিকায় (Latin America) নাকি ব্রাজিলের (Brazil) রেকর্ড ছুঁয়ে পর পর দুইবার বিশ্বকাপ জিতবে ফ্রান্স (France)? এই প্রশ্নে ইতিমধ্যেই আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছে এই বিশ্ব।

আর্জেন্টিনার (Argentina) সমর্থকরা ইতিমধ্যেই মেসির (Messi) হাতে কাপ ওঠার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। তেমনই বহু ফ্রান্স সমর্থক এমবাপের (Kylian Mbappé) তরুণ রক্তের তেজে আর্জেন্টিনার পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। নেটপাড়া সরগরম রোনাল্ডো (Cristiano Ronaldo) বড় নাকি মেসি এই প্রশ্নে। পাশপাশি ঘুরপাক খাচ্ছে ব্রাজিল সমর্থকদের সমর্থনের প্রশ্ন। কার দিকে পাল্লা ভারী সমর্থনের? এ যেন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগের রাতের দমবন্ধ করা উত্তেজনা। ফুটবল উত্তেজনায় শেষবার হাত সেঁকে নেওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে বিশ্ববাসী।

এরমাঝেই নেটনাগরিকরা এনে ফেলেছেন বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ। শেষ হাসি আসলে মেসিই হাসবেন তা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছেন এই যুগের নস্ত্রাদামুসরা। বিভিন্ন ট্রিভিয়া ঘুরে বেড়াচ্ছে নেটপাড়ার আকাশে বাতাসে। এই ট্রিভিয়া দেখলে আপনার মনে হতেই পারে কাপ মেসির হাতে ওঠা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। আসুন দেখে নিই কোন অঙ্কে নেটবাসীরা কাপ তুলে দিচ্ছে মেসির হাতে।

মরক্কো যোগ

এই তালিকায় শুরুতেই আসছে মরক্কোর (Morocco) নাম। ১৯৮৬ সালে যখন শেষবার বিশ্বকাপ ওঠে আর্জেন্টিনার হাতে। সেই সময় নীল-সাদা স্কোয়াডের অধিনায়ক ফুটবলের রাজপুত্র মারাদোনা (Maradona)। সেই বছর বিশ্বকাপের ‘এফ’ গ্রুপে ছিল মরক্কো। তাঁদের সঙ্গে একই গ্রুপে ছিল ইংল্যন্ড (England), পোল্যান্ড (Poland) এবং পর্তুগাল (Portugal)। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সেই বিশ্বকাপে গ্রুপের শীর্ষে থেকে পরের রাউন্ডে পৌঁছে যায় মরক্কো। একইভাবে ২০২২ বিশ্বকাপেও গ্রুপের শীর্ষে ছিল তারা।

গ্রুপের তৃতীয় ম্যাচে পেনাল্টি মিস

বিশ্বের হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি গ্রুপ লিগের তৃতীয় ম্যাচে মেসি পেনাল্টি মিস করার পরেই আমাদের জানিয়ে দেয় যে মারিও কেম্পেস (Mario Kempes) ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনার গ্রুপ লিগের তৃতীয় খেলায় পেনাল্টি মিস করেছিলেন। পাশাপাশি সেই বছর চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল হোস্ট দেশ আর্জেন্টিনা নিজে। ১৯৮৬ সালে দিয়েগো মারাদোনাও (Diego Maradona) বুলগেরিয়ার (Bulgaria) বিরুদ্ধে গ্রুপ লিগের তৃতীয় খেলায় পেনাল্টি মিস করেন এবং আর্জেন্টিনা অবশ্যই মেক্সিকোয় (Mexico) অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। এরপরেই ২০২২ সালে লিওনেল মেসিও পোল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয়ের পরেও পেনাল্টি মিস করেন এবং এটি ছিল দলের তৃতীয় ম্যাচ।

পিএসজি কানেকশন

বিশ্বকাপের সঙ্গে এক অসাধারণ যোগ রয়েছে ফরাসি ক্লাব পিএসজি-র (PSG)। এমন চার জন খেলোয়াড় রয়েছেন এই বিশ্বে যারা ক্লাব ফুটবলে পিএসজি-তে যোগ দেওয়ার পরের বছরেই অথবা সেই বছরেই দেশের জার্সিতে জিতেছেন বিশ্বকাপ।

এই তালিকায় শুরুতেই রয়েছেন ব্রাজিলের রাই (Raí)। ১৯৯৩ সালে ব্রাজিলের সাও পাওলো (São Paulo) থেকে পিএসজি-তে আসেন রাই। এরপরের বছর ১৯৯৪ সালে বিশ্বকাপ যেতে ব্রাজিল।

আরও পড়ুন: Cristiano Ronaldo, FIFA World Cup 2022: রোনাল্ডোর সঙ্গে ঝামেলার কারণেই ইস্তফা, বিস্ফোরণ ঘটালেন ফের্নান্দো স‌্যান্টোস

তালিকায় দ্বিতীয় নাম বের্নার্ড লামা (Bernard Lama)। ১৯৯৮ সালে দ্বিতীয়বার পিএসজি-তে ফিরে আসেন তিনি। সেই বছরই ফ্রান্স দলের জার্সি গায়ে একটিও ম্যাচ না খেলে বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখেন লামা। ফরাসি দলের গোলরক্ষক ফাবিয়ান বার্থেজের (Fabien Barthez) বদলি হিসেবে দলে ছিলেন তিনি।

এরপরেই রয়েছে ব্রাজিলের আরেক ম্যাজিশিয়ান রোনাল্ডিনহো (Ronaldinho)। ২০০১ সালে পিএসজি-তে আসেন রোনাল্ডিনহো। ২০০২ বিশ্বকাপে জাপানের (Japan) নিসান স্টেডিয়ামে (Nissan Stadium) জার্মানিকে (Germany) আটকে শেষবার বিশ্বকাপ জিতে নেয় ব্রাজিল। ২০০২ সালেই শেষবার কোনও লাতিন আমেরিকান দল বিশ্বকাপ হাতে তোলে।

এই তালিকায় শেষ নাম ফ্রান্সের কিলিয়ান এমব্যাপে। ২০১৭-১৮ মরসুমে মোনাকো (Monaco) থেকে লোনে পিএসজি-তে আসেন এমবাপে। ২০১৮ সালে পাকাপাকি যোগ দেন পিএসজি-তে। ২০১৮ সালেই ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এমবাপে।

এই তালিকায় মেসির নাম যুক্ত হবে কিনা সেই প্রশ্নে সরগরম নেটপাড়া। মেসি পিএসজি-তে যোগ দিয়েছেন ২০২১ সালে আর এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২০২২-এর বিশ্বকাপে ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি।   

লিটল মাস্টার সচিন

১৮ ডিসেম্বর কাতারে যদি মেসি বিশ্বজয় করতে পারেন তাহলে তাঁর সঙ্গে এক অদ্ভুত মিল তৈরি হবে ক্রিকেটের ঈশ্বর সচিন তেন্ডুলকরের (Sachin Tendulkar)। নেটজগতের এক মিমে দেখা গিয়েছে এই তুলনা। চার পয়েন্টের এই তুলনায় প্রথমেই রয়েছে দুজনের জার্সির নম্বর। দুই খেলার এই দুই সেরা প্লেয়ারেরই জার্সির নম্বর ১০।

আরও পড়ুন: FIFA World Cup Final 2022: মেসির আর্জেন্টিনা ফাইনালে যেতেই ট্রেন্ডিংয়ে এসবিআই-এর পাসবুক!

২০০৩ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠার ঠিক আট বছর পরে ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জেতেন লিটল মাস্টার। অন্যদিকে ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠেন মেসি। সেই বিশ্বকাপে সচিনের মতোই হেরে যান তিনি। একইভাবে ঠিক আট বছর বাদে ফের ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছেন মেসি।

আরও এক মিল রয়েছে দুই জনের। প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালের খেলায় ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন দুজনেই। ১৮ ডিসেম্বর রবিবার যদি সব জল্পনার অবসান করে কাপ হাতে তুলে নেন মেসি, তাহলে ফের একবার মিলে যাবে এই দুই সেরার ভাগ্য।

মেসি কাপ জিতবেন নাকি শেষ হাসি হাসবে ফ্রান্স তা বলবে সময়। কিন্তু বাস্তব জীবনের খেলার আগেই ভারচুয়াল জগতে যে মেসি প্রায় বিশ্বকাপ জিতে গিয়েছেন তা বলাই বাহুল্য।     

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)