Great barrier reef: বাঁচানো যাবে কি গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ? গবেষণাগারে তৈরি কোরালের লার্ভা আশা দেখাচ্ছে

দিনদিন বেড়ে চলেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। আর বিশ্ব উষ্ণায়নের শিকার হচ্ছে পৃথিবীর তাবৎ প্রাণী ও উদ্ভিদজগত। ক্ষতিগ্ৰস্তদের তালিকায় বেশ কয়েক বছর ধরে নাম রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব সমুদ্রে থাকা গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের। গত সাত বছরে অনেকটাই ক্ষয় হয়েছে এই ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’-এর। দূষণের জন্য পৃথিবীর উষ্ণতা বেড়ে যাওয়াই এর অন্যতম কারণ। উষ্ণতা না কমলে কুইন্সল্যান্ডের উত্তর-পূর্বের এই রিফকে তার প্রাকৃতিক রূপে বাঁচিয়ে রাখাও কঠিন।

তবে সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানীর গবেষণায় কিছুটা আশা আলো দেখা গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মেরিন সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা কোরাল বা প্রবালের লার্ভা সংরক্ষণের জন্য বেশ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করছিলেন। চলতি মাসে তেমনই একটি পরীক্ষা সফল হয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের‌। তাঁদের কথায়, হালকা ওজনের ক্রায়োমেশ দিয়ে একটি বিশেষ পদ্ধতিতে কোরালের লার্ভা সংরক্ষণ করা যাচ্ছে। তাদের মেশ প্রযুক্তির সাহায্যে -১৯৬ ডিগ্ৰি সেলসিয়াস উষ্ণতায় কোরালের লার্ভা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে।

প্রসঙ্গত গত সাত বছরে চারবার গ্ৰেট ব্যারিয়ার রিফের ব্লিচিং হয়েছে। এতে ধীরে ধীরে কমে আসছে রিফের প্রজাতি বৈচিত্র্য। ফলে বিপদের খাঁড়া ঝুলছে অসংখ্য প্রজাতির উপর। ব্লিচিং প্রক্রিয়ায় জলের ইকোসিস্টেম নষ্ট হলে হারিয়ে যাবে অনেক প্রজাতি। গত মাসে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার ও আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন অফ কনজারভেশন অফ নেচার যৌথভাবে একটি রিপোর্ট পেশ করে। সেই রিপোর্টে গ্ৰেট ব্যারিয়ার রিফকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ইন ডেঞ্জার’ (বিপদগ্রস্ত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ) তালিকাভুক্ত করা হয়।

সমুদ্রের নিচে জঙ্গলের মতো গ্ৰেট ব্যারিয়ার রিফে একক রিফের সংখ্যা প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি। অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বে ২২৫৩ কিমি জুড়ে রয়েছে এই হেরিটেজ।

ক্রায়োজেনিকস নিয়ে গবেষণা করতে করতেই এই অসামান্য আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা। কোরাল লার্ভা অনেক কম তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা গেলে ভবিষ্যতে যেকোনও সময় এটি নির্দিষ্ট প্রজাতির বংশবিস্তারে সাহায্য করবে। অসংখ্য প্রজাতির এই রিফের জন্য মেশ প্রযুক্তি গবেষণা কতটা সফল হচ্ছে, এবার সেটাই দেখার।‌ এতে সফল হলে একই উপায়ে অসংখ্য প্রজাতির লার্ভা সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। কিছুটা হলেও কৃত্রিম উপায়ে বাঁচানো যাবে পৃথিবীর অন্যতম ঐতিহ্যকে।