PhonePe-তে আসতে পারে ৮ হাজার কোটির বিনিয়োগ! Flipkart থেকে আলাদা হল সংস্থা

PhonePe-এর সম্পূর্ণ মালিকানা থেকে আলাদা হল Flipkart। কেন? কারণ খুব শীঘ্রই বিপুল হারে বিনিয়োগ টানতে চলেছে ফোনপে। এখনও পর্যন্ত এটিই সংস্থায় করা সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হতে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি সেই টাকা ফোনপে পেয়ে যায়, তাহলে তারাই সংস্থার দামের নিরিখে দেশের এক নম্বর ফিনটেক সংস্থা হয়ে দাঁড়াবে।

ওয়ালমার্টের অধীনস্থ Flipkart সিঙ্গাপুর এবং PhonePe সিঙ্গাপুরের শেয়ারহোল্ডাররা সরাসরি PhonePe ইন্ডিয়ার শেয়ার কিনেছেন। PhonePe-কে সম্পূর্ণ ভারতীয় সংস্থায় পরিণত করার বিষয়ে চলতি বছরের শুরুতে তোড়জোর শুরু হয়। অক্টোবরে, ভারতে আইপিও করার পরিকল্পনা করে PhonePe। আর তার আগেই রেজিস্টার্ড সংস্থা সিঙ্গাপুর থেকে ভারতে স্থানান্তরিত করে তারা। পড়ুন: UPI, অনলাইন লেনদেনে করলে এই ৫টি বিষয়ে থাকুন সাবধান

ফ্লিপকার্ট-সহ বেশিরভাগ কনজিউমার ইন্টারনেট সংস্থাই কিন্তু বিদেশি ডোমিসাইলে কাজ চালায়। এর মাধ্যমে কর সংক্রান্ত সুবিধা আদায় করে তারা। ফোনপে আদপে মেড ইন ইন্ডিয়া সংস্থাই। তাদের সমস্ত অফিস, ডেটা সেন্টার, কর্মী ভারতেই।

২০১৫ সালে Flipkart-এর প্রাক্তন আধিকারিক- নিগম, রাহুল চারি এবং বার্জিন ইঞ্জিনিয়ার মিলে PhonePe-র সূচনা করেছিলেন। ইউনিফাইড পেমেন্ট ইন্টারফেস (UPI) লেনদেনের বৃদ্ধি সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই সংস্থার পরিচিতি বেড়েছে। ফোনপে-র প্রায় ৪০ কোটিরও বেশি রেজিস্টার্ড ব্যবহারকারী রয়েছেন। UPI-তে মোট যত টাকা লেনদেন হয়, তার ৪৭%-ই ফোনপে দিয়ে।

২০১৬ সালে ফ্লিপকার্ট ফোনপে-কে অধিগ্রহণ করে নেয়। এরপর ২০২০ সালে ফ্লিপকার্ট PhonePe-কে আংশিকভাবে একটি পৃথক সত্তা হিসাবে আলাদা করে দেয়। PhonePe এরপর ওয়ালমার্ট-সহ এক ঝাঁক হেভিওয়েট বিনিয়োগকারীদের থেকে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল সংগ্রহ করে। এর ফলে সংস্থার মোট মূল্য দাঁড়ায় ৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ওয়ালমার্ট-ই বর্তমানে PhonePe-এর বৃহত্তম শেয়ারহোল্ডার।

PhonePe শুধু পেমেন্টের ভরসায় থাকছে না। তার প্ল্যাটফর্মে সোনা, বিমা এবং মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রির মতো ব্যবসা করার চেষ্টা করছে। আসন্ন বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা এক রাউন্ডেই প্রায় $৭০০ মিলিয়ন থেকে $১ বিলিয়ন বিনিয়োগ তুলতে পারে। জেনারেল আটলান্টিকের নেতৃত্বে এই বিনিয়োগ সম্পন্ন হলে সংস্থার মোট ভ্যালুয়েশন দাঁড়াবে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

২০২১-২২ অর্থবর্ষে PhonePe-র আয় ১৩৮% শতাংশ বেড়ে ১,৬৪৬ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। তবে সংস্থার লোকসান (ESOP খরচ বাদে) ৬৭১ কোটি টাকা।

কিন্তু এত বেশি ভ্যালুয়েশন কীভাবে হয়?

এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল, এই ধরনের ভ্যালুয়েশন বা সংস্থার মোট দাম, কীভাবে স্থির হয়। একটি সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক। ধরুন, আপনার একটি চপের দোকান রয়েছে। আপনি ২ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত পুঁজি নিয়ে সেই দোকান খুলেছেন। মাসে ১০ হাজার টাকার চপ বিক্রি করছেন। অর্থাত্, আপনার বাত্সরিক আয় দাঁড়াচ্ছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।

এরপর আপনি এক ধনী বিনিয়োগকারীর কাছে গেলেন। গিয়ে বললেন, ‘আমার ব্যবসায় ২ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করুন। আমি আপনাকে দোকানের ২০% মালিকানা দেব। আর এই ২ লক্ষ টাকায় আমি পাশে আরেকটি দোকান খুলব। এক বছরের মধ্যেই আমি আয় দ্বিগুণ করব।’

যদি বিনিয়োগকারী আপনাকে ২ লক্ষ টাকা দেন, সেক্ষেত্রে আপনার ব্যবসার ২০%-এর দাম দাঁড়াবে ২ লক্ষ টাকা। আপনার মোট(১০০%) ব্যবসার দাম/ভ্যালুয়েশন হবে ১০ লক্ষ টাকা। আরও পড়ুন: Video: PhonePe-র QR কোড জ্বালিয়ে দিচ্ছেন Paytm কর্মীরা! পুলিশে দায়ের অভিযোগ

এভাবে সংস্থার আরও ভাগের বিনিময়ে আপনি যত বেশি অঙ্কের বিনিয়োগ আনতে পারবেন, সংস্থার মোট ভ্যালুয়েশন ততই বেড়ে যাবে। উপরের উদাহরণ সাপেক্ষে, আপনি যদি ২ বছর পর আরও ২০% মালিকানা বিক্রি করে ৪ লক্ষ আনেন, তখন আপনার ব্যবসার দাম হবে ২০ লক্ষ টাকা। এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়, প্রথমে যিনি ২ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, তাঁরও অংশীদারিত্বের দাম এবার বেড়ে ৪ লক্ষ টাকা দাঁড়াবেন। ফলে কেউ নতুন স্টার্টআপ-এ কেন বিনিয়োগ করেন, তা সহজেই বোঝা যায়।