Gold Storage: মায়ানমার সীমান্তের ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ থেকে সোনা মজুত কলকাতায়, তদন্তে ডিআরআই

এতদিন সোনা পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়ার ঘটনা সামনে এসেছিল। এবার তিলোত্তমার বুকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে চোরাই সোনা বলে খবর। তাও আবার ৫০০ কেজি। যার বাজার দর অন্তত ২৫০ কোটি টাকা। এই চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশ্যে এনেছেন ডিরেক্টর অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। এখানে তদন্তকারীদের দাবি, থাইল্যান্ড, লাওস এবং মায়ানমার সীমান্তের ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ থেকে সোনা এনে মজুত করা হয়েছে খাস কলকাতায়। তারপর তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

কে এই পাচার চক্রের মাথা?‌ ডিআরআই সূত্রে খবর, কলকাতাকে ‘ট্রানজিট ক্যাম্প’ করে চোরাই সোনা পাচারের এই চক্রের কিংপিং কৈলাস মাহেশ্বরী নামে এক ব্যক্তি। এই ব্যক্তির একটি টিম আছে। যাদের দিয়ে এই সোনা পাচারের কাজ করানো হয়। আর কন্ট্রোল করে কৈলাস মাহেশ্বরী। গত দু’বছর ধরে কলকাতাকে ব্যবহার করে সোনা পাচার করা হচ্ছিল। এবার এই আন্তর্জাতিক চক্রের এই ‘কিংপিন’কে হন্যে হয়ে খুঁজছে ডিআরআই।

ঠিক কী তথ্য পাওয়া গিয়েছে?‌ অর্থমন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন এই গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, কলকাতার নির্দিষ্ট একটি বাণিজ্যিক এলাকায় ওই চোরাই সোনার ‘স্ট্যাক ইয়ার্ড’ রয়েছে। বাট, কয়েন এবং বিস্কুটের আদলে সেখানে মজুত কমপক্ষে ৫০০ কেজি সোনা। এখান থেকেই রোজ ২০ থেকে ৩০ কেজি সোনা পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ডিসেম্বর মাসেই ‘স্মাগলিং ইন ইন্ডিয়া’ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ডিআরআই। সেই রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, গত ২০২১–২২ অর্থবর্ষে তারা বাজেয়াপ্ত করেছে ৮৩৩ কেজি চোরাই সোনা। যার বেশিরভাগই এসেছে মায়ানমার, বাংলাদেশ থেকে। মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ঘুরে ভায়া অসম পৌঁছেছে কলকাতায়।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ সূত্রের খবর, মিরাটের এই বাসিন্দা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মন্ত্রিসভার এক প্রভাবশালী সদস্যের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। ডিআরআই সূত্রে দাবি, চোরাই সোনা পাচার করার জন্য বেতন ও কমিশনভূক ৩০–৩৫ জন ক্যারিয়ার আছে কৈলাসের। এমনকী এই কাজ মহিলারাও করে। সবসময় তারা দু’জন ক্যারিয়ারকে ব্যবহার করে এই কাজ করে। কারণ একসঙ্গে দু’জনের খবর ‘লিক’ হওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করে কৈলাস। একজন ধরা পড়লেও, অন্যজন নির্বিঘ্নে পৌঁছে যেতে পারে। আবার গোল্ড কন্ট্রোল অ্যাক্ট অনুযায়ী, এক কোটি টাকার কম মূল্যের সোনা নিয়ে ধরা পড়লে সহজেই জামিন পাওয়া যায়। তাই কৈলাস গ্যাংয়ের ক্যারিয়াররা এক কোটির বেশি মূল্যের বাট, কয়েন বা বিস্কুট পাচার করে না। চলতি মাসেই দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস থেকে ডিআরআইয়ের হাতে ধরা পড়ে ওই গ্যাংয়ের দুই ক্যারিয়ার। তাদের জেরা করেই এই গোটা ঘটনা জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা।