Pavel Antov Postmortem Report: ওড়িশায় পুতিন বিরোধী রুশ রাজনীতিবিদের মৃত্যু কীভাবে? সামনে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট

সম্প্রতি ওড়িশার রায়গড় জেলার এক হোটেলে মৃত্যু হয়েছে রুশ রাজনীতিবিদ পাভেল আন্তভ। পুতিন বিরোধী হিসেবে পরিচিত এই রুশ আইনপ্রণেতার মৃত্যু ঘিরে ক্রমেই ঘনিয়ে আসছে রহস্য। যদিও প্রাথমিক ভাবে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে যে পাভেলের মৃত্যুর নেপথ্যে ‘আন্য কারও’ হাত আছে বলে মনে হচ্ছে না। এরই মাঝে এবার প্রকাশ্যে এল পাভেলের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। ময়নাতদন্ত অনুযায়ী, পাভেলের বাঁদিকের ফুসফুস এবং লিভারে ব়্যাপচার রয়েছে। তা পড়ে গিয়েই হয়েছে বলে অনুমান। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে ‘দুর্ঘটনা’র উল্লেখ রয়েছে। যদিও পাভেলের শরীরে থাকা বেশ কিছু চোট মৃত্যুর আগের বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই এই একই হোটলে পাভেলের এক বন্ধু, ভ্লাদিমির বিদেনভ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। এদিকে ভারতে ছুটি কাটাতে আসার কয়েকদিন আগেই ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতা করে একটি বিবৃতি দিয়েছিনেল ন পাভেল। সব মিলিয়ে পাভেলের মৃত্যু ঘিরে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকে।

জানা গিয়েছে, দিল্লির এক ট্রাভেল এজেন্টের ১৪ দিনের প্যাকেজে রায়গড় ঘুরতে গিয়েছিলেন পাভেল। তাঁর সঙ্গে ভ্লাদিমির বিদেনভ এবং এক দম্পতি ছিল – মিখাল তুরোভ, নাতালিয়া পানেশেঙ্কো। পুলিশ মঙ্গলবার বলেছে, বিদেনভের মৃত্যুর পর সম্ভবত নিজেই জানলা দিয়ে লাফিয়েছিলেন পাভেল। ২৪ ডিসেম্বর পাভেলের মৃত্যুর পর ২৬ ডিসেম্বর তাঁর দেহের ময়নাদতন্ত হয় রায়গড় জেলা হাসপাতালে। তাঁর বাঁদিকের পাঁজরের হাড় ভাঙা বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত জমাট বেঁধেছিল তাঁর। এদিকে এই চোটগুলির বেশ কয়েকটি মৃত্যুর আগের হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে বলা হয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে।

এদিকে জেলা পুলিশকে এই মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে সাহায্য করছে সিআইডি। সিআইডির তরফে জানানো হয়েছে, পারিপার্শিক প্রমাণ খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে যে পাভেলকে কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলেছিল নাকি তিনি নিজেই জানলা দিয়ে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিআইডি। এদিকে পাভলের সঙ্গে থাকা রুশ দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওড়িশা পুলিশের ডিজিপি সুদীন বনসল অবশ্য প্রাথমিক ভাবে দাবি করেছেন যে ঘটনায় কোনও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত মেলেনি। এদিকে পাভেল এবং বিদেনভের শেষকৃত্য নাকি ওড়াশিয়া সম্পন্ন করার জন্য সম্মতি জানানো হয়েছে তাঁদের আত্মীয়র তরফে। সেই সংক্রান্ত নথি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিজি অরুণ বোথরা।

এদিকে রায়গড়ের যে সাই ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে পাভেল ছিলেন, তার ম্যানেজার কৌশিক ঠক্কর জানিয়েছেন, প্রথমদিন এসে পাভেল এবং বিদেনভ নীচ তলায় ২০৩ নং ঘরে ওঠেন। তাঁদের সঙ্গে থাকা দম্পতি দোতলার ৩০৩ নং ঘরে ওঠেন। পরে অবশ্য তাঁরা নীচ তলারই ২০৮ নং ঘরে চলে আসেন। এদিকে ২১ তারিখ বিদেনভের মৃত্যর পর থেকেই মুষড়ে পড়েছিলেন পাভেল। তিনি খাবার অর্ডার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে পাভেলের ঘর বদল করে দেওয়া হয় এবং তিনি দোতলার ৩০৯ নং ঘরে চলে যান। ২৪ তারিখ সকালে পাভলেকে ঘরে দেখতে না পেয়ে হোটেলকর্মীরা খোঁজাখোঁজি শুরু করেন। তখনই হোটেলের সামনে মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে।