Gautam Adani on Rajiv Gandhi: মোদী নন, রাজীব গান্ধীর আমলেই আমার ব্যবসার উন্নতি শুরু হয়, অকপট গৌতম আদানি

রাজীব গান্ধী হোক বা নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী যে-ই থাকুন না কেন, তাঁদের প্রয়াসের কারণেই আজ তিনি এত বড় ব্যবসা দাঁড় করাতে পেরেছেন। ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া এক সাম্প্রতিক সাক্ষাত্কারে এমনটাই জানালেন দেশের ধনীতম ব্যক্তি গৌতম আদানি। তিনি জানান, আজ থেকে প্রায় ৩ দশক আগে, রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীনই তাঁর ব্যবসায় দ্রুত উন্নতি শুরু হয়।

‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমি একই রাজ্যের। এই কারণে আমার বিরুদ্ধে অনেকেই খুব সহজেই ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলেন। এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে আমাকে নিয়ে এই ধরনের প্রচার চালানো হচ্ছে,’ বলেন দুঁদে শিল্পপতি। আরও পড়ুন: একা গৌতম আদানিই ভারী পড়লেন ২২ কোটি মানুষের পাকিস্তানের শেয়ার বাজারের উপর!

কিন্তু তাঁকেই নিয়েই কেন এমন অভিযোগের বন্যা? এর উত্তরে গৌতম আদানি বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট সময়ের উপর ভিত্তি করে সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমাদের গোষ্ঠীর সাফল্য দেখা হচ্ছে। আর সেটা দেখে তাঁরা পক্ষপাতিত্বে ভুগছেন। কিন্তু বাস্তব এটাই যে, আমার এই পেশাগত সাফল্য কোনও নির্দিষ্ট নেতার কারণে নয়। বরং বেশ কয়েকজন নেতা এবং সরকারের নীতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কারণে। গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এটা হয়েছে।’

আরও ব্যাখা করে তিনি জানান, অনেকেই এটা জেনে অবাক হবেন যে, এর সবই শুরু হয়েছিল রাজীব গান্ধীর প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে। তিনি যখন প্রথম এক্সিম (রপ্তানি-আমদানি) নীতির উদারীকরণ করেছিলেন, সেই সময়ে আমার ব্যবসা বাড়তে শুরু করে। রাজীব গান্ধী না থাকলে আমি ব্যবসায় কখনই উন্নতি করতে পারতাম না।

তিনি জানান, এরপর আরেকবার বড় সুযোগ পেয়েছিলেন ১৯৯১ সালেষ। সেই সময়ে নরসিমহা রাও এবং মনমোহন সিংয়ের যুগলে ব্যাপক অর্থনৈতিক সংস্কারের সূচনা হয়েছিল। অন্য অনেক ব্যবসায়ীর মতো, আমিও সেই সংস্কারের সুবিধা পেয়েছিলাম।

তাঁর কর্মজীবনের ‘তৃতীয় টার্নিং পয়েন্ট’ ছিল ১৯৯৫ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বিজেপির কেশুভাই প্যাটেলের নির্বাচন। কেন? তিনি জানালেন, এরপরেই তিনি উপকূল অঞ্চলের উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করেন। আর সেই সময়েই তিনি মুন্দ্রায় তাঁর প্রথম বন্দর তৈরি করার সুযোগ পান।

‘চতুর্থ টার্নিং পয়েন্ট ছিল ২০০১ সালে। সেই সময়ে গুজরাটে মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অধীনে উন্নয়নে ব্যাপক জোর দেওয়া হয়েছিল। তাঁর নীতি এবং সেগুলির বাস্তবায়নের ফলে শুধুমাত্র সেই রাজ্যের অর্থনৈতিক চিত্রই পরিবর্তিত হয়নি… এতে শিল্প ও কর্মসংস্থানেরও জোয়ার এসেছিল। তার আগে কখনও এতটা হয়নি,’ জানালেন আদানি গ্রুপের প্রধান।

ফাইল ছবি: পিটিআই

(PTI)

আর এখন তিনিই দেশের প্রধানমন্ত্রী। গৌতম আদানি জানান, ‘আজ, তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বের ফলে আমাদের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে একই রকমের পুনরুত্থান হচ্ছে। এক নতুন ভারত দেখছে বিশ্ব।

শুধু প্রধানমন্ত্রীরাই নন। অন্য সফল শিল্পপতিদের দেখেও তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন বলে জানান। রিলায়েন্স গোষ্ঠীর ধীরুভাই আম্বানির কথা উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘ভারতের লক্ষ লক্ষ উদ্যোক্তাকে অনুপ্রেরণা দেন ধীরুভাই আম্বানি। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে একজন সাধারণ মানুষ, বড় মূলধন বা সহায়তা ছাড়াই, সমস্ত বাধা পেরিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের ব্যবসায়িক সংগঠন গড়ে তোলেন। শুধু তাই নয়, একটি ভবিষ্যতও তৈরি করে গিয়েছেন। আমিও পরিবারের প্রথম ব্যবসায়ী এবং একটি সাধারণ জায়গা থেকে উঠে এসেছি। আমি ওনার থেকে অনেক অনুপ্রেরণা পেয়েছি।’ আরও পড়ুন: খুব জলদিই বিশ্বের বাদশা হবেন গৌতম আদানি, হবেন ধনীতম ব্যক্তি, অনুমান বিশেষজ্ঞদের

আজ বিশ্বের অন্যতম বড় সংস্থা তাঁর। বন্দর, বিদ্যুত্ সরবরাহ থেকে শুরু করে মুদিদ্রব্য সর্বক্ষেত্রে ছড়িয়ে তাঁর ব্যবসা। এত বড় ব্যবসা একা সামলান কীভাবে? এর উত্তরে আদানি জানান, ‘আমাদের সব ব্যবসায়ী পেশাদার, সুযোগ্য সিইও-রা দেখেন। আমি তাঁদের রোজের কাজে নাক গলাই না। আমার কাজ ওই স্ট্র্যাটেজি তৈরি, মূলধন জোগাড় করা ও সমস্ত কিছুর উপর নজর রাখাতেই সীমাবদ্ধ। আর ঠিক এই কারণেই আমি শুধু এত বড় ও বৈচিত্রপূর্ণ সংস্থাই সামলাচ্ছি না, আরও বহু নতুন ব্যবসা ও অধিগ্রহণের বিষয়েও কাজ করার সময় পাই।’