যশোর রোডের ৩০৫টি শিরিষ গাছ কাটার নির্দেশ ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের

বাংলাদেশের অংশে অনেক আগেই সড়ক বানাতে গিয়ে কাটা পড়ছে যশোর রোডের বহু ঘটনার সাক্ষী শিরিষ গাছগুলো। এবার পশ্চিমবঙ্গের অংশে অবশিষ্ট গাছগুলো কাটার নির্দেশ দিলো ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ শহরের ১ নম্বর রেলগেটে যানজট কমাতে রেলওয়ে উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে। এই জন্য বারাসাত থেকে বনগা পর্যন্ত যশোর রোড ধারে মোট ৩০৫টি শতাব্দী প্রাচীন শিরিষ গাছ রাজ্য সরকারের বন দফতরের অনুমতি নিয়ে কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারতের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ।

এর প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সেই আন্দোলনে স্থানীয় মানুষজন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ছাড়াও বিভিন্ন গণসংগঠনগুলো। সেই আন্দোলনের জেরে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।

২০১৮ সালে গাছ কাটার স্থগিতাদেশ দিয়েছিল আদালত। বুধবার সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আদালত জানিয়েছে, ৩০৫টি গাছ কাটার আগে ১৫০০ টি গাছ লাগাতে হবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে। এই মামলার ফলে যশোর রোডের সম্প্রসারণের কাজ আটকে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তরণ এলাকার মানুষ কলকাতা তথা বাংলাদেশের সঙ্গে সংযোগ রক্ষার পথ যশোর রোডের ওপরে নির্ভর করে। এই সড়কপথেই বাংলাদেশের সঙ্গে চলে হাজার হাজার কোটি রুপির বাণিজ্য।

বারাসাত থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত যশোর রোড সম্প্রসারণের জন্য ৪ হাজার ৩৬ টি গাছ কাটার পরিকল্পনা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পূর্ত দফতর। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল গণসংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব ডেমোক্র্যাটিক রাইটস (এপিডিআর)। তখন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিশিতা মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ গাছ কাটার স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময় প্রধান বিচারপতি যতীন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে উড়ালপুল বানানোর জন্য ৩০৫ টি গাছ কাটার নির্দেশ দেন। তবে শর্ত হিসেবে থাকছে, একটি গাছ কাটার আগে ৫টি গাছ লাগাতে হবে।

সেই শর্তকে চ্যালেঞ্জে জানায় এপিডিআর। এই প্রেক্ষিতেই বুধবার হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তবে আদালতে তরফে জানানো হয়েছে, গাছ কাটার বদলে তারা কাছাকাছি একই প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে কি না সেদিকে নজর রাখবে আদালত।