শবর যুবকের হেফাজতে মৃত্যুতে প্রাক্তন ওসির ৮ বছরের কারাদণ্ড

শবর যুবকের হেফাজতে মৃত্যুতে ২৫ বছর পর সাজা হল প্রাক্তন ওসির। বড়বাজার থানা এলাকা এই ঘটনায় সোমবার সাজা শোনান বিচারক জাহাঙ্গির কবির। মৃত যুবকের নাম বুধন শবর (২৭)। ১৯৯৭ সালের এই ঘটনায় সুবিচার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখেছিলেন সমাজকর্মী মহাশ্বেতা দেবী। সেই চিঠিকে জনস্বার্থ মামলা হিসাবে গ্রহণ করে পুরুলিয়া আদালতে পাঠান প্রধান বিচারপতি। সেই মামলায় সোমবার বড়াবাজার থানার প্রাক্তন ওসি অশোক রায়ের ৮ বছরের কারাবাসের সাজা হয়েছে। সঙ্গে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাঁকে।

ঘটনার সূত্রপাত ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। স্ত্রীকে নিয়ে ভাঙিরদিঘি যাচ্ছিলেন বুধনবাবু। তখন তাঁকে গ্রেফতার করে বড়াবাজার থানার পুলিশ। স্বামীর খোঁজে থানায় যান স্ত্রী শ্যামলী। সেখানে তিনি দেখেন, বুধনবাবুকে বাসডাকাতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। লক আপে তাঁকে বেদম মারছে ২ পুলিশকর্মী। ১১ ফেব্রুয়ারি বুধনবাবুকে আদালতে পেশ করে পুলিশ। আদালত ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এর মধ্যে বুধনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। স্থানীয়রা দেখেন, পুলিশের মারে বুধন ঠিক মতো হাঁটতে পারছেন না। ১৭ ফেব্রুয়ারি বুধনকে ফের আদালতে পেশ করে পুলিশ। তাঁকে জেলে পাঠান বিচারক। পরদিন জেলের সেল থেকে বুধনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

এই ঘটনায় বড়াবাজার বাজার তৎকালীন ওসি অশোক রায়ের বিরুদ্ধে বুধনকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বুধনের মৃত্যুর বিচার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লেখেন মহাশ্বেতা। সেই চিঠিকেই মামলার আবেদন বলে গ্রহণ করে পুরুলিয়া আদালতে পাঠিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি। ওই বছর ৮ জুলাই আদালত এই মামলায় CBI তদন্তের নির্দেশ দেয়। ২০০২ সালে মামলার চার্জশিট পেশ করে পুলিষ ২০০৩ সালে চার্জ গঠন হয়। তার পর দীর্ঘ শুনানির পর সোমবার মামলার রায়দান করল পুরুলিয়া আদালত। এই মামলায় অভিযুক্ত ১ ASI-কে ৮ বছরের সাজা শুনিয়েছে আদালত।