‘আর্জেন্টিনায় মানিয়ে নেওয়াটা জামালের জন্য কঠিন হবে’

কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় মেসিদের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন আর্জেন্টিনার মানুষকে অভিভূত করেছে। উন্মাদনায় নতুন মাত্রা পেয়েছে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে ‘ফুটবল উন্নয়ন বিনিময়’ শুরু হতে যাচ্ছে। এই তো রিভার প্লেটের কর্মকর্তারা ঢাকায় এসে একাডেমি করার দিকে আগ্রহ দেখিয়েছেন। এদিকে আবার বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া সেখানকার দক্ষিণের ভিয়েদমা শহরের অন্যতম ক্লাব সো দা মায়োতে খেলতে জোর তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত সেখানে খেলার সুযোগ হলেও মানিয়ে নেওয়াটা কতটুকু সহজ হবে- এ নিয়ে ঘোরতর সংশয় প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের সাবেক আর্জেন্টাইন কোচ দিয়েগো আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানি।

২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশের ফুটবলটাকে হাতের তালুর মতো করে চেনেন ক্রুসিয়ানি। লাল-সবুজ দলের দায়িত্ব পালনের পর আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ডাগ আউটে ছিলেন। মাঝে বড় বিরতি দিয়ে গত মৌসুমে তো সাইফ স্পোর্টিংয়ে কোচিং করিয়েছেন। সেই সূত্রে জামাল ভূঁইয়াকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তার অধীনেই খেলেছেন ৩২ বছর বয়সী মিডফিল্ডার।

হঠাৎ আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের দলে জামালের খেলার খবর তাদের পত্রপত্রিকায় পড়ে ক্রুসিয়ানি একটু অবাকই হয়েছেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে শেখ রাসেল ছেড়ে সোল দা মায়ো ক্লাবে খেলতে আসার বিষয়টি তার কাছে একটু অন্যরকমই মনে হয়েছে।

বুয়েন্স আয়ার্স থেকে ৬০ বছর বয়সী কোচ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আমি নিউজে দেখেছি জামাল এখানকার ক্লাবে খেলতে চাইছে। আশা করছি সে সাফল্য পাবে। তবে আমার কিছু কথা রয়েছে।’

এরপরই নিজের শঙ্কাটা প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘সে যে তৃতীয় বিভাগের লিগে (সৌখিন লিগ) খেলতে যাচ্ছে সেখানে সাধারণত ভালো ফুটবল হয় না। অতিমাত্রায় শরীর নির্ভর খেলাটাই বেশি চলে, সেটা নির্মম পর্যায়ে যায়। পাশাপাশি খারাপ মানসিকতা নিয়েও খেলে অনেকে। এমন পরিবেশে জামালের জন্য সেখানে মানিয়ে নেওয়াটা কঠিন হবে।’

শঙ্কার পাশাপাশি ইতিবাচক কথাও বলতে ভুল করেননি সাফে আরমান-আলফাজদের একসময়ের কোচ, ‘তারপরও আমি তার জন্য শুভকামনা জানাই।যদিও এই ক্লাবটির ইতিহাস তেমন সমৃদ্ধ নয়। ছোট একটি ক্লাব। আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ নয়। হয়তো কোম্পানি গঠন করে জামালের বেতন দেবে। এর পিছনে রাজনীতি ও ব্যবসায়িক বিষয় আছে। হয়তো ক্লাবটি দ্বিতীয় বিভাগে উঠতে চাইছে।’

ম্যারাডোনা-মেসিদের দেশে খেলতে যাবেন জামাল। সেই ক্লাবকে এরই মধ্যে জানিয়েও দিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত তার বর্তমান ক্লাব শেখ রাসেল থেকে ছাড়পত্র পাননি। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জামাল নিজেই বললেন, ‘কাল সকালে শেখ রাসেল কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা আছে। সেখানে ছাড়পত্র পাবো কিনা জানা যাবে। আসলে আমি শুধু নিজের জন্য আর্জেন্টিনা যেতে চাইছি না, সেখানে খেলতে পারলে বাংলাদেশের ফুটবলেরও ব্র্যান্ডিং হবে। জানি সেখানে মানিয়ে নেওয়াটা সহজ হবে না। তবে খেলার সুযোগ পেলে নিজের শতভাগ উজার করে খেলবো।’

জামাল এর আগে ভারতের কলকাতায় লিগে মোহামেডানের হয়ে খেলেছেন। এবার  নিজের ক্যারিয়ার আরও সমৃদ্ধ করতে সুদূর আর্জেন্টিনায় পাড়ি জমাতে চাইছেন। তা যদি সত্যি হয় তাহলে দেশের ফুটবলের জন্য হবে নতুন সূচনা।