বাখমুতে রাশিয়ার জয় নিশ্চিত?

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত শহর দখলের লক্ষ্যে আক্রমণ জোরদার করেছে রুশবাহিনী। ডোনেস্কের ধ্বংসপ্রাপ্ত এই শহরটি দখলের মাধ্যমে অঞ্চলটির আরও ভেতরের দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা রুশ বাহিনীর। অন্যদিকে, প্রবল রুশ আক্রমনের মধ্যেও খনিজ সমৃদ্ধ শহরটিকে আঁকড়ে রেখেছে ইউক্রেনীয় সেনারা।

রাশিয়া জানায়, বাখমুত দখলের এই যুদ্ধ হবে গত এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। বাখমুত দখলের মাধ্যমে শিল্প অঞ্চল ডনবাসকে আরও সুরক্ষিত করার পরিকল্পনা করছে তারা।  

ইউক্রেন বলেছে, কৌশলগত দিক থেকে বাখমুত তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও শহরটি রক্ষায় তারা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

শহরটির সামরিক প্রশাসনের প্রধান ওলেক্সি রেভা বলেন, ‘বাখমুত রক্ষার জন্য প্রবল যুদ্ধ চলছে’।

এক সময় ৭০ হাজার বাসিন্দার শহরটিতে এখন মাত্র সাড়ে চার হাজার মানুষের বসবাস। ইউক্রেন সামরিক বাহিনীর এক সদস্য বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে জানান, কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই রুশ বাহিনী বাখমুত দখলের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

ইউক্রেন সংসদ সদস্য সেরহি রাখমানিন বলেন, ‘আজ নয় কাল বাখমুত ছাড়তে হবে আমাদের। যেকোনো মূল্যে সেটিকে ধরে রাখার কোনো মানে হয় না। তবে এই মুহূর্তে বাখমুত ধরে রাখার কিছু উদ্দেশ্য আছে। প্রথমত, যথাসম্ভব রুশ বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে এবং দ্বিতীয়ত, এর ফলে রুশ বাহিনীর গোলাবারুদের পরিমাণও কমতে থাকবে’।

তিনি আরও বলেন, ‘এক্ষেত্রে দুটি উপায় অবলম্বন করতে পারে ইউক্রেন। সংগঠিত পশ্চাদপসরণ অথবা যুদ্ধহীনভাবে শহরটি রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দেওয়া। দ্বিতীয়টি কোনোভাবেই হতে দিতে পারিনা আমরা’।

এসব কিছুর মধ্যেও ইউক্রেনের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এলো বসন্ত। শীতের দিনগুলোতে গ্যাস সংকটে তীব্র ঠান্ডায় প্রয়োজনীয় উষ্ণতা পায়নি ইউক্রেনবাসী।

বুধবার (১ মার্চ) রাতের ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের এই প্রবল শীতেও লড়াই করে যাওয়ার প্রশংসা করেছেন। তবে বাখমুতের পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষজনক অগ্রগতির কোন তথ্য দিতে পারেননি তিনি।

বাখমুত দখলের এই যুদ্ধ প্রায় ৭ মাস আগে শুরু হলেও কয়েকসপ্তাহ ধরে রুশ বাহিনী বেশি তৎপর হয়ে উঠেছে। শহরটিতে রুশ বাহিনী তিন দিক থেকে এমনভাবে আক্রমণ করেছে যে পশ্চিম ছাড়া আর কোনো দিকে যাওয়ার উপায় নেই ইউক্রেনীয়দের।

ইউক্রেন সামরিক বাহিনী আরও জানায়, রুশ সেনারা ইউক্রেনের জাপোরিজ্জিয়ার মধ্যভাগ ও খেরসন অঞ্চলের দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সূত্র: আল জাজিরা