আলু পোস্ত, মাছের মাথা এসব ছাড়া অনুব্রত মণ্ডলের মুখে ভাত উঠত না। বরাবরই খাদ্যরসিক বলেই পরিচিত কেষ্ট মণ্ডল। শুধু খেতে নয়, খাওয়াতেও ভালোবাসতেন কেষ্ট মণ্ডল। দলের অন্দরে এমনটাই চর্চা। তবে ইদানিং আসানসোল জেল থেকে কলকাতায় যাওয়া আসার পথেও শক্তিগড়ের ধাবায় তাকে দেখা গিয়েছে তিনি বেশ কবজি ডুবিয়েই লুচি, কচুরি খাচ্ছেন। এমনকী সম্প্রতি দিল্লি যাওয়ার আগে দেখা গিয়েছে পুলিশের সামনেই শক্তিগড়ের ধাবায় সঙ্গীদের নিয়ে লুচি খাচ্ছেন অনুব্রত। তবে রাজধানীতে যাওয়ার পরে সেই কেষ্ট মণ্ডলের রুচিতেও এবার কিছুটা পরিবর্তন। বলা যায় শুধু বাঙালি খাবারেই নয়, রীতিমতো বিলেতি খাবারে রসনা মেটাচ্ছেন অনুব্রত। রাজধানীতে গিয়ে এ যেন এক অন্য অনুব্রত!
সূত্রের খবর, দিল্লি রাউস অ্য়াভিনিউ কোর্টে পেশ করার পর অনুব্রতর জন্য ম্যাকডোনাল্ডস থেকে খাবার আনিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই মেনুতে ছিল বার্গার ও সুগার ফ্রি কোল্ড কফি। তবে অপর একটি সূত্র বলছে আইনজীবীদের মারফৎই কেষ্টর জন্য় এই স্পেশাল মেনু আনা হয়েছিল। তবে এখানেই শেষ নয়, বীরভূমে মাছে ভাতে থাকা অনুব্রতর নাকি দিল্লিতে গিয়েও মাছের জন্য় বড্ড মন কেমন করছে। সেকারণে তার জন্য মাছ ভাতের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এমনকী সম্প্রতি দিল্লিতে গিয়ে তিনি ডিনারে মিষ্টি চেয়েছিলেন। তবে সেই রাতে তাড়াহুড়োর মধ্যে মিষ্টির ব্যবস্থা করতে পারেনি ইডি। তবে দিল্লিতে বসেও কখনও মাছ-ভাতে কখনও আবার ম্যাকডোনাল্ডের বার্গারে কামড় বসাচ্ছেন কেষ্ট মণ্ডল।
আসলে অনুব্রতর ডায়বেটিস রয়েছে। সেই সঙ্গে ফিসচুলা, পাইলসের সমস্যাও রয়েছে। সেকারণে তার স্বাস্থ্য রক্ষার ব্যাপারে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না ইডি। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হচ্ছে। পাশাপাশি রসনা তৃপ্তিতেও কোনও ত্রুটি থাকছে না। এমনকী মাঝেমধ্যেই মেনুতে সুগার ফ্রি সন্দেশ চাইছেন তিনি। যতটা সম্ভব সেই আবদারও মেটাচ্ছে ইডি।
এর সঙ্গেই একটু হাঁটাহাঁটি করলেই হাঁফিয়ে যান অনুব্রত। অনেকের মতে বীরভূমে থাকাকালীন হাঁটাহাঁটির বিশেষ অভ্যাস ছিল না অনুব্রতর। একেবারের ঘরের দুয়ারে গাড়ি আসত। সেই গাড়ি চড়েই বীরভূমে চক্কর কাটতেন তিনি। এদিকে ইডির তদন্তকারীদের হাত ধরে একটু হাঁটলেই হাঁফিয়ে যাচ্ছেন কেষ্ট মণ্ডল। সম্প্রতি একটু হাঁটার পরেই তাকে জিজ্ঞাসা করতে দেখা যায়, গাড়ি কোথায়? এরপর তিনি রাস্তার পাশেই বসে পড়েন। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে? তিনি বলেছিলেন, আমার তো সমস্যা রয়েছে।