M‌amata Banerjee: ‘‌স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আইনজীবীদের বরাদ্দ করলাম’‌, আলিপুর কোর্টে ঘোষণা মমতার

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আওতায় এবার আনা হচ্ছে আইনজীবীদেরও। আলিপুর জজ কোর্টে ঋষি অরবিন্দের মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আইনজীবী যাঁরা কোভিডে মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক মামলায় এখন জড়িয়ে পড়েছে রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্ট অথবা সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। তার মাঝেই মঙ্গলবার আলিপুর জজ কোর্টের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, এবার থেকে রাজ্যের আইনজীবী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় চলে আসছেন। ফলে তাঁরাও রাজ্যের সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালে ৫ লক্ষ টাকার চিকিৎসা পরিষেবা বিনামূল্যেই পাবেন।

ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে অনেকে মাস্টারস্ট্রোক বলে মনে করছেন। কারণ আগে কখনও আইনজীবীরা এমন পরিষেবা পাননি। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‌আমি আইনজীবীদের জন্য মনে করি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হওয়া উচিত। একটা স্পেশাল ক্যাম্প করে আইনজীবীদের জন্য ব্যবস্থা করা হবে। তার জন্য মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলে তিনদিন সময় নিয়ে করা হবে। কারণ অনেক সময় তাঁরা ইনস্যুরেন্স করেন, টাকা পান না। স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে অসুবিধা হয়। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আইনজীবীদের জন্য বরাদ্দ করলাম। ৫ লক্ষ টাকা করে আপনারা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা পাবেন। সরকারি হাসপাতালে আমাদের কোনও পয়সা লাগে না। আইনজীবী যাঁরা কোভিডে মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হোক।’‌ এটা বড় ঘোষণা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

আর কী ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ এদিন আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক, আলিপুর আদালতে এবার থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত মূল্যের মামলা করা যাবে। এতদিন পর্যন্ত এই সুযোগ ছিল শুধুমাত্র ব্যাঙ্কশাল কোর্ট ও শিয়ালদা কোর্টে। তার ফলে সেখানকার আইনজীবীরা আরও বেশি করে মামলা পাবেন বলে আশা করেন মুখ্যমন্ত্রী। দুই,তিনি অনুরোধ করেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে যে, রাজ্যের যে লিগাল এইড সার্ভিস আছে সেখানে যেন তরুণ আইনজীবী যাঁরা সবে সবে এই পেশায় পা রেখেছেন তাঁদের যেন সুযোগ দেওয়া হয়। মন্ত্রী তাতে সায়ও দিয়েছেন।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ আলিপুর কোর্টে শ্রী অরবিন্দের মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখান থেকেই তিনি বিচারপতিদের উদ্দেশে বলেন, ‘‌ক্ষমতায় আসার পর আমি একটি সিপিএম ক্যাডারের চাকরি খাইনি। তাহলে তোমরা কেন খাচ্ছ?‌ বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্য়ায়ের একটি রায় দেখেছিলাম। সেখানে তিনি সংশোধনের কথা বলেছেন, বাতিলের কথা বলেননি। এখন রোজ চাকরি বাতিল হচ্ছে। গতকালও দু’‌জন আত্মহত্যা করেছে। নীচের তলায় যদি কেউ অন্যায় করে, আমার দলের হলেও আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। যাঁরা অন্যায় করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিন। কিন্তু চাকরি আইন অনুযায়ী ফিরিয়ে দিন। তাঁদের আবার সুযোগ দিন, আবার পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দিন। আদালত যা বলবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করব। অসহায় মানুষের ওপর এভাবে অত্যাচার করবেন না। দয়া করে রাজ্যের বদনাম করে, ছাত্র–যৌবনের মুখের গ্রাস কেড়ে নেবেন না। পরপর জনস্বার্থ মামলা হচ্ছে। আসলে পলিটিক্যাল লিটিগেশন।’‌