ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। এর আগে নেতানিয়াহু সরকারের বিচারব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য বিতর্কিত পরিকল্পনা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছিলেন গ্যালান্ত।

সোমবার (২৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু একটি বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে ডেকে পাঠান এবং তাকে বলেন যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে গ্যালান্তের প্রতি তার আর আস্থা নেই।

বিচার বিভাগের ক্ষমতা সীমিত করার পরিকল্পনা দেশটি জনগণকে বিক্ষোভের দিকে নিয়ে গেছে। ইয়োভ গ্যালান্ত এটিকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য ‘তাৎক্ষণিক এবং বাস্তব বিপদ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

গত শনিবার রাতে এক সংক্ষিপ্ত টেলিভিশন বিবৃতিতে গ্যালান্ত বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা রাগান্বিত ও হতাশ। এমন তীব্রতা তিনি আগে কখনও দেখেননি।

বরখাস্তের পরপরই গ্যালান্ত টুইটারে লিখেছেন, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তা সব সময়ই আমার জীবনের লক্ষ্য ছিল এবং থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন যে সংস্কারগুলো আদালতকে তাদের ক্ষমতা বাড়াতে বাধা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এ জন্য গত নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোট দিয়েছে।

নেতানিয়াহুর উগ্র ডানপন্থী সরকার আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে যে সংস্কারের পরিকল্পনা করেছে, তাতে দেশটির বিচার বিভাগের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়বে। প্রায় তিন মাস ধরে গণবিক্ষোভ চললেও নেতানিয়াহু এখনও তার পরিকল্পনায় অটল আছেন।

ইসরায়েলের বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিড গ্যালান্তের বরখাস্তকে সরকারের ‘নতুন আইন’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন, নেতানিয়াহু গ্যালান্তকে বরখাস্ত করতে পারেন, কিন্তু তিনি বাস্তবতা বা ইসরায়েলের জনগণকে থামাতে পারবেন না, যারা ডানপন্থী জোটের উন্মাদ সিদ্ধান্ত প্রতিহত করার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ গ্যালান্তের প্রশংসা করে বলেছেন যে গ্যালান্ত দেশের নিরাপত্তাকে সব স্বার্থের ওপরে রেখেছেন।

এদিকে রবিবার রাতে আইনিব্যবস্থার পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। প্রায় তিন মাস ধরে চলা গণবিক্ষোভে এবার বিক্ষোভকারীরা তেল আবিবের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করে। ফলে দেশটিকে তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণবিক্ষোভ দেখতে হচ্ছে। এ আইন ডানপন্থী জোট সরকারের বিচার বিভাগের ক্ষমতা সীমিত করার বিতর্কিত পরিকল্পনার অংশ বলে জানায় তারা।

‘ইসরায়েলকে একনায়কত্বে পরিণত করার প্রচেষ্টা’ প্রতিহত করার জন্য বিক্ষোভের আয়োজকরা চলতি সপ্তাহকে ‘প্যারালাইসিস সপ্তাহ’ ঘোষণা করে।

আয়োজকদের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, সমাবেশে আনুমানিক ৬ লাখ ৩০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে। স্থানীয় মিডিয়া বলছে, কেবল রাজধানী তেল আবিবেই সমাবেত হয়েছিল ২ লাখ ইসরায়েলি। 

সূত্র: বিবিসি