A‌bhishek Banerjee: পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাকে প্রার্থী দেখতে চান?‌ ফেসবুক পেজে জনতার দরবার অভিষেকের

কলকাতা হাইকোর্টে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে জট কাটতেই এবার প্রার্থী বাছাই করতে অভিনব কৌশল নিল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে কার্যত জনতার দরবার বসানোর উদ্যোগ নিলেন। আর ‘কাকে আপনার এলাকায় পঞ্চায়েতে প্রার্থী করতে চান? সরাসরি আমাকে এই মোবাইল নম্বরে জানান’ বলে জনতার উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ফেসবুক পেজে আম জনতার কাছে আবেদন রাখায় ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় নেতাদের একাংশের রাতের ঘুম হচ্ছে না। অনেকেই নিজের মতো করে প্রার্থী দেবেন বলে ঠিক করেছিলেন। কিন্তু অভিষেক সেটাই তুলে দিলেন জনতার হাতে।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ কলকাতা হাইকোর্ট পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না বলে দেওয়ায় মে মাসে স্থানীয় স্তরের ভোট হবে—একপ্রকার নিশ্চিত। তাই হাতে আর সময় নেই। এই কারণে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই ফেসবুক পেজে বজবজ ১ ও ২ থেকে শুরু করে অধিকাংশ অঞ্চল থেকে প্রার্থী হিসেবে নতুন নতুন নাম উঠে এসেছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর যাঁরা এতদিন প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে ক্ষমতা ভোগ করেছেন, তাঁদের স্বচ্ছতা বা অস্বচ্ছতার বিস্তারিত তথ্য অভিষেকের ফেসবুক পেজে চলে এসেছে। এবার এই পদ্ধতিতে তড়িঘড়ি প্রার্থী বাছাই করে নিতে চাইছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ আপাতত এই এলাকা দিয়ে শুরু হলেও একই ফরম্যাট থাকবে প্রতিটি জেলার জন্য। সুতরাং মানুষের ঠিক করা প্রার্থীকে মানুষই জয়ী করবেন। আর এভাবেই অশান্তি ছাড়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাফল্য পাবে তৃণমূল কংগ্রেস বলে সূত্রের খবর। তবে আমজনতার এই রিপোর্টই ভাবাচ্ছে ক্ষমতাসীন নেতাদের। তাঁদের ধারণা ছিল, দাপুটে নেতা হওয়ায় গতবারের মতো এবারও তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করবে তাঁদের। কিন্তু ওই রিপোর্ট হাতে পাওয়ায় সেটি আর হচ্ছে না। এখন এই রিপোর্টে কী আছে, সেটা জানার চেষ্টা করছেন নেতারা। তাই নিজের নাম প্রস্তাবের আগে দশবার ভাবছেন তাঁরা।

ঠিক কী জমা পড়েছে ফেসবুকে?‌ তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, অস্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের নামে বিস্তর নালিশ জমা পড়েছে ওই ফেসবুক পেজে। যা এবার প্রার্থী বাছাইয়ে সাহায্য করবে নেতৃত্বকে। ফলে অনেকেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট নাও পেতে পারেন। অভিষেক দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব নেওয়ার পর কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দেখলেই তাঁকে সরিয়ে দিচ্ছেন। বজবজ ১ নম্বর সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষের অস্বচ্ছতার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছিল। তাঁকে সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বজবজ ২ নম্বর পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতিকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিধায়ক জয়দেব হালদার, ডায়মন্ডহারবার টাউন সভাপতিকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অভিষেক এই আহ্বান করেছেন আমজনতার কাছে। এই পদ্ধতিতে জনসংযোগের রাস্তাও তৈরি করলেন অভিষেক বলে মনে করা হচ্ছে।