Punjab Kings: | Punjab Kings:


কলকাতা: ঘণ্টা কয়েক পরেই শুরু হতে চলেছে আইপিএলের (IPL 2023) ১৬তম সংস্করণ। একদিকে যেখানে কলকাতা নাইট রাইডার্স, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, চেন্নাই সুপার কিংসের মতো দলগুলি গত বারের হতাশা ঝেড়ে ফেলে আবারও খেতাব জয়ের আশায় বুক বাঁধছে, সেখানে দিল্লি ক্যাপিটালস, পঞ্জাব কিংস (Punjab Kings) প্রথমবার আইপিএল ট্রফি নিজেদের ঘরে তোলার লক্ষ্যে। খাতায়-কলমে টুর্নামেন্টের অন্য়তম শক্তিশালী দল হয়েও, গত মরসুমে অল্পের জন্য প্লে-অফে নিজেদের জায়গা পাকা করতে পারেনি পঞ্জাব। সাত ম্যাচ জিতে লিগ তালিকায় ছয় নম্বরে শেষ করেছিল তাঁরা। নতুন মরসুমে নতুন কোচ ও অধিনায়কের অধীনেই ভাগ্যবদলের আশায় কিংস। এ মরসুমে কি অবশেষে খরা কাটিয়ে খেতাব জিততে পারবে পঞ্জাব? কেমন হয়েছে তাঁদের দল? 

পঞ্জাবের শক্তি

পঞ্জাব কিংসের সবচেয়ে শক্তিশালী পক্ষ হল তাঁদের ব্যাটিং। দলের অধিনায়ক শিখর ধবন (Shikhar Dhawan) যেন ধারাবাহিকতার অপর নাম। একমাত্র ব্যাটার হিসাবে তাঁর দখলে বিগত সাত মরসুমের প্রতিটিতে ৪৫০-র অধিক রান করার কৃতিত্ব রয়েছে। পঞ্জাবের নতুন অধিনায়ক আইপিএলের সর্বকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকও বটে। দলের সাফল্য অনেকটাই তাঁর ধারাবাহিকতার ওপর নির্ভরশীল। পাশাপাশি বড় বড় ছয় হাঁকানোর ক্ষেত্রে পঞ্জাব লিয়াম লিভিংস্টোনের (Liam Livingstone) জুড়ি মেলা ভার। এই নিলামেই আবার স্যাম কারানকে (Sam Curran) ১৮.৫ কোটি টাকার রেকর্ড মূল্য়ে দলে নিয়েছে পঞ্জাব। ইংলিশ তারকা কিন্তু টপ অর্ডার থেকে মিডল অর্ডার, যে কোনও স্থানে ব্যাটিং করতে পারেন।

গত মরসুমে ভানুকা রাজাপক্ষও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সকল প্রভাবিত করেছিলেন। গত মরসুমে শ্রীলঙ্কান তারকার ১৫৯.৬৯-র স্ট্রাইক রেটই তাঁর দক্ষতার পরিচয়বাহক। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে নিজের পারফরম্যান্সে ঘরোয়া ক্রিকেটে আলোড়ন সৃষ্টিকারী শাহরুখ খানও কিন্ত

ু এই পঞ্জাব দলেরই সদস্য।

পঞ্জাবের দুর্বলতা

এমন মারকাটারি ব্যাটিং লাইন আপ কিন্তু যে কোনও দলেরই সম্পদ। তবে আগ্রাসন কিন্তু দুইমুখো তলোয়ার। একদিকে যেমন পঞ্জাবের আগ্রাসী ব্যাটাররা ক্লিক করলে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন, সেখানেই অনেক সময় অতিআগ্রাসন কিন্তু পঞ্জাব দলের পক্ষেও ক্ষতিকারক হতে পারে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে গত বছর শূন্য রানে পাঁচ উইকেট হারানো যার অন্যতম উদাহরণ।

জনি বেয়ারস্টো এ বারের আইপিএলে মাঠে নামতে পারবেন না। বেয়ারস্টো কিন্তু মারকাটারি ব্যাটিংয়ে একাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তাঁর অনুপস্থিতি পঞ্জাবের জন্য বড় ধাক্কা। পাশাপাশি কাগিসো রাবাডা, স্য়াম কারান, অর্শদীপ সিংহদের নিয়ে তৈরি পঞ্জাবের ফাস্ট বোলিং লাইন আপ শক্তিশালী হলেও, তাঁদের দলে রাহুল চাহার (Rahul Chahar) বাদে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিশেষজ্ঞ স্পিনার আর নেই। চাহারের ধারাবাহিকতা নিয়ে অতীতে বারংবার প্রশ্ন উঠেছে। আন্তর্জাতিক মানের স্পিনারের অভাব চিপক, কোটলার মতো স্পিনসহায়ক ময়দানে কিন্তু পঞ্জাবকে সমস্যায় ফেলতে পারে।

এক্স-ফ্যাক্টার

তবে পঞ্জাবে সমস্তরকম দুর্বলতা ঢেকে রাখার ক্ষমতা রাখেন দুই ইংলিশ অলরাউন্ডার স্যাম কারান ও লিয়াম লিভিংস্টোন। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং, তিন বিভাগেই লিভিংস্টোন ম্যাচ উইনার। ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষদের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। গত মরসুমে ১৮২.০৮ গড়ে ২৪০ রান করে নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন লিভিংস্টোন। বল হাতেও ছয় উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। অপরদিকে, স্যাম কারান গত মরসুমে চোটের কারণে আইপিএলে খেলতে পারেননি। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যাপকভাবে প্রত্যাবর্তন ঘটান তিনি। বিশ্বজয়ী ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বাধিক উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টে সেরাও হন কারান। তাঁর ফর্ম কিন্তু পঞ্জাবের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই তারকাই পঞ্জাব দলের এক্স ফ্যাক্টারও বটে।

গেমচেঞ্জার

স্যাম কারানের পাশাপাশি গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নজর নিজের অলরাউন্ড দক্ষতায় নজর কেড়েছিলেন জিম্বাবোয়ের সিকন্দর রাজাও। টুর্নামেন্ট ব্যাট হাতে ২২৩ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ১০ উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি। রাজার বিশ্বের বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি লিগে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি কিন্তু সুযোগ পেলে প্রতিপক্ষদের বেগ দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।

অতীতের হতাশা,গ্লানি মুছে ফেলে পঞ্জাব প্রথমবার আইপিএল খেতাব জিততে পারে কি না, সেটা সময়ই বলবে। তবে খেতাব জয়ের জন্য পঞ্জাব দলে কিন্তু যথেষ্ট বিকল্প রয়েছে। ১ এপ্রিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধেই ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে তাঁদের অভিযান। 

আরও পড়ুন: ১৫ বছরের অভিশাপ কাটবে কোহলিদের? কেমন হয়েছে এবারের আরসিবি দল?