Kurmi Protest: এ বার জেলাশাসকের দফতর লাগাতার ঘেরাও, জোরালো হচ্ছে আদিবাসী-মূলবাসী দ্বন্দ্ব?

পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়ায় আন্দোলন তুলে নিলেও ফের নতুন করে আন্দোলনে নামতে পারে কুড়মি সমাজ। তাঁদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দিন কয়েক আগেই চরম হায়রানির শিকার হয়েছিল এই দুই জেলা। কুড়মিদের দাবিদাওয়া নিয়েও নবান্নের সঙ্গে বৈঠক হলেও কোনও সমাধান সূত্রে মেলেনি। ফলে নতুন করে আন্দোলনে নামতে পারেন তাঁরা। ইতিমধ্যে সেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে কুড়মি সমাজ।

কুড়মিদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁদের জনজাতি তালিকাভুক্ত করতে হবে। কিন্তু নবান্নের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনও আশ্বাস মেলেনি। আবার এই দাবি নিয়ে আড়াআড়ি বিভাজন তৈরি হয়েছে কুড়মি ও আদিবাসী সংগঠনগুলির মধ্যে। একাধিক আদিবাসী সংগঠনের দাবি, কুড়মিদের মতো অ-আদিবাসীদের জনজাতি তালিকাভুক্ত করা যাবে না। এই দাবিতে ১৭ এপ্রিল থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে জেলাশাসকের দফতরে লাগাতার ঘেরাও আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। একটি আদিবাসী সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়েছে।

আদিবাসী ও মূলবাসীদের মধ্যে বিভাজন কেন?

বাম জমানার শেষ দিকে রাজ্যের জঙ্গলমহলে মাথাচাড়া দেয় মাওবাদী আন্দোলন। এই আন্দোলনে সামনে আদিবাদী ও কুড়মিদের রেখে ছিল মাওবাদীরা। কিন্তু পরবর্তীকালে এই আন্দোলন স্থিমিত হয়ে গেলে, নতুন করে মাথাচাড়া দেয় আদিবাসী ও মূলবাসীদের মধ্যে বিভাজন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এর পিছনে রয়েছে মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলির হস্তক্ষেপ। তাঁদের মতে, আদিবাসী ও মূলবাসীদের নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি এই বিভাজনের রাজনীতি করেছে। ভোট এলেই জোরালো হয় জনজাতি ও কুড়মিদের জাতিসত্তার দাবি-সহ নানান দাবিতে আন্দোলন।

এই বিভাজনের রাজনীতির জন্য রাজনৈতিক দলগুলি একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির নেতা সুখময় শতপথী সংবাদমাধ্যকে বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীই তো সভায় বলেন, কোথায় আমার কুড়মি ভায়েরা, মুর্মু ভাইয়েরা, আদিবাসী ভাইয়েরা। ভোটে ফয়দা নেওয়ার জন্য তৃণমূলই ভাগাভাগির সমস্যা জিইয়ে রেখেছে।’

তবে তৃণমূল এই অভিযোগ মানতে নারাজ। ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মুর অভিযোগ, ‘পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপিও এই জাতিসত্তার বিভাজনে মদত দিচ্ছে।’ সিপিএম আবার এই বিভাজনের জন্য তৃণমূল-বিজেপিকে দায়ি করেছে। দলের নেতা অমিয় পাত্র বলেন,’গত লোকসভা ভোটে আদিবাসী-কুড়মি ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়েই জঙ্গলমহল এলাকায় সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। বিধানসভা ভোটে একই ভাবে জেতে তৃণমূলও। দুই দলই নিজের রাজনৈতিক স্বার্থের বিভাজনের রাজনীতি করছে।’

তবে এর সঙ্গে আরও একটা প্রশ্ন উঠছে, জঙ্গলমহল এলাকায় উন্নয়নের কি ঘাটতি থেকে গিয়েছে? আদিবাসী ও মূলবাসীদের আন্দোলনের কি সেটাও একটি কারণ?