North Bengal Bandh: বন্‌ধের তকমা দিয়ে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে তাণ্ডব বিজেপির, আটক দুই বিধায়ক

কালিয়াগঞ্জের ঘটনার জেরে আজ, শুক্রবার ১২ ঘণ্টার বন্‌ধ ডেকেছিল বিজেপি। আর এই বন্‌ধকে সামনে রেখে রীতিমতো তাণ্ডব চালাল বিজেপি নেতা–কর্মীরা। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে নিজেদের শক্তিপ্রদর্শন করলেন তাঁরা। এখানে তাঁদের লোকসভা এবং বিধানসভায় ফল ভাল হওয়ায় বিধায়ক–সাংসদ রয়েছেন। আর তাই রাস্তায় নেমে ভাঙচুর, অবরোধ, চিৎকার এমনকী জনজীবন বিপর্যস্ত করার চেষ্টা করেন। আটক করা হয় বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এবং আনন্দময় বর্মণ–সহ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে।

এদিকে শিলিগুড়িতে বিজেপি নেতা–কর্মীদের অবস্থান বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এখানে নিত্যযাত্রীদের বন্‌ধ পালন করতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। রাস্তায় নেমে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকজনকে আটকও করে পুলিশ। তখনই আটক করা হয় মাটিগাড়া–নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণকে। অভিযোগ, বিজেপি নেতা–কর্মীদের আটক করার সময় হিলকার্ট রোডে পুলিশ ভ্যানের সামনে শুয়ে রাস্তা আটকান বিক্ষোভকারীরা। এমনকী সরকারি বাস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় র‌্যাফ। অবরোধ তুলতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এই ঘটনার জেরে আটক করা হয় শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে।

অন্যদিকে কোচবিহার চাকির মোড় এলাকায় সরকারি বাস ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। রাস্তা দিয়ে বাস যাওয়ার সময় লক্ষ্য করে ঢিল মারার অভিযোগ উঠেছে। তবে কোচবিহারে বনধে্ পড়েছে মিশ্র প্রভাব। পুরাতন মালদার ৮ মাইল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বিজেপি কর্মী–সমর্থকদের অবরোধ করতে দেখা যায়। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভের জেরে যানজট তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে মালদা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী যায়। গাড়ি চালক ও বিজেপি কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে বচসার সৃষ্টি হয়। প্রায় দীর্ঘ একঘন্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ বিজেপির ডাকা বন্‌ধকে সরাসরি উপেক্ষা করে জলপাইগুড়ির সরকারি প্রাথমিক স্কুলে অন্যদিনের মতোই স্বাভাবিক উপস্থিতি ছিল পড়ুয়াদের। মাথাভাঙা–কোচবিহার রাজ্য সড়কের ময়নাতলি মোড়ে বন্‌ধের নামে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিজেপি। ধূপগুড়িতে খোলেনি অধিকাংশ দোকানপাট। যানবাহনে বাধা দেওয়ায় নাজেহাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ধুপগুড়ির বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের। ইসলামপুরে বনধের কোনও প্রভাব পড়েনি। কোনও প্রভাব পড়েনি কালিম্পংয়ে। সেখানে দোকানপাট খোলা, যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। আলিপুরদুয়ারে টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। তাতে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হয়। জলপাইগুড়ি পোস্ট অফিস মোড়ে টোটো চালকদের উপর চড়াও হয় বিজেপি সমর্থকরা। নিশীথ প্রামাণিকের গড় ভেটাগুড়িতে দোকান খুললেও বিজেপি কর্মীরা জোর করে তা বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ। মালদায় মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহ করে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। গাড়ি আটকানো, দোকানপাট অফিস বন্ধ করার ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথি ঘোষ, যুব মোর্চার সভাপতি শুভঙ্কর চম্পতি, ইংরেজবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর–সহ প্রায় ১০ জন বিজেপির কর্মী।