দুই চোর ১২ লক্ষ টাকার গয়না চুরি করে গা–ঢাকা দিল, ধরা পড়ল সোনাগাছি থেকে

দু’‌জন চোর ১২ লক্ষ টাকার গয়না চুরি করে গা–ঢাকা দেয়। যাঁর বাড়ির গয়না চুরি হয়েছিল তিনি থানায় এসে হাজির। লিখিত অভিযোগ জমা করে পুলিশকে করুন অনুরোধ করেন। এটুকুই পরিবারের সম্বল–সম্পত্তি। দয়া করে উদ্ধার করে দিন। কিন্তু সেই চোর দু’‌জন তো বেপাত্তা। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। নানা জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে হাতে আসে একটি সূত্র। সেই সূত্রের উপর ভর করেই ওই দুই চোরকে গ্রেফতার করল পুলিশ সোনাগাছির পতিতাপল্লি থেকে। যা নিয়ে এখন বিস্তর চর্চা শুরু হয়েছে।

ঠিক কী ঘটেছে শহরে?‌ স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ২৭ এপ্রিল একটি বিয়ের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যান টুম্পা নস্কর। তিনি কলকাতা পুলিশের লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার বাসিন্দা। টুম্পা নস্কর সেই বিয়েবাড়ি থেকে ফিরে নিজের ঘরের আলমারিতে রেখে দেন লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না। এরপর মে মাসে একটি বিয়ের নিমন্ত্রণে যাওয়ার জন্য আলমারি থেকে গয়নার বাক্স বের করতে গেলে চোখ কপালে ওঠে টুম্পাদেবীর। কারণ ওই গয়নার বাক্সটিই সেখান থেকে উধাও। বাড়িতে তখন তোলপাড় অবস্থা। চুরি হয়ে গিয়েছে এত লক্ষ টাকার গয়না। সেটা বুঝতে পেরেই মাথায় বাজ পড়ে তাঁর। তখন তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

তারপর ঠিক কী ঘটল? পরিবার সূত্রে খবর, এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই‌ টুম্পা নস্কর এবং তাঁর স্বামী রাজু নস্কর লেদার কমপ্লেক্স থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। লেদার কমপ্লেক্স থানা তদন্তে নেমে জানতে পারে, এলাকার দুই চোর বুবাই এবং শানু এখন বেপাত্তা। তাহলে এই চুরির সঙ্গে তাদের যোগ থাকতে পারে। তখন এই দুই চোরের সন্ধানে নামে পুলিশ। আর টুম্পাদেবী গয়না হারিয়ে থানাতেই চোখের জল ভাসিয়ে দিয়েছেন। তাঁকে শান্ত করতে পারছিলেন না পুলিশ অফিসাররা।

পুলিশ কী তথ্য পায়?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, এই দুই চোরের খোঁজ করতে সোর্স লাগানো হয়। ওই সূত্রটি জানায়, এই ১২ লক্ষ টাকা দামের সোনার গয়না ওই দুই চোরই চুরি করেছে। তাই তারা গা–ঢাকা দিয়েছে। তবে বুবাই এবং শানুর নারী আসক্তি রয়েছে সেটাও সোর্স জানিয়ে দেয় পুলিশকে। তখন সোনাগাছিতে হানা দেয় পুলিশ। আর মাঝরাতে সোনাগাছি থেকেই গ্রেফতার করা হয় বুবাইকে। তারপর শানুকেও রাতে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না। তাদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, গৃহস্থরা দুপুরে যখন ঘুমাচ্ছিল তখনই তারা গয়না চুরি করে ফুর্তি করতে সোনাগাছিতে আসে। এমনকী সেখানে তিনদিন থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচও করেছে। আদালতে তোলা হলে বিচারক দুই চোরকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।