নদিয়ার দন্ত চিকিৎসককে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ, নেপথ্য কাহিনী ঠিক কী?

পেশায় দন্ত চিকিৎসক। কিন্তু তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকে কোটি কোটি টাকা। তাও আবার নানা উৎস থেকে। এই বিষয়ে তদন্ত করতে দিল্লি পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা এসে পৌঁছয় নদিয়ার ওই দন্ত চিকিৎসকের বাড়িতে। কারণ একটি আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে করছিলেন তাঁরা। সেটার সঙ্গে এই রহস্যজনক লেনদেনের যোগ রয়েছে বলে তথ্য মিলেছিল তাঁদের হাতে। নদিয়ার হাঁসখালি থানা এলাকার গোবিন্দপুরে এই দন্ত চিকিৎসকের বাড়িতে হানা দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তল্লাশি করা হয়। তার পর সেই চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া দন্ত চিকিৎসকের নাম অসীম বিশ্বাস। বুধবার তাঁকে রানাঘাট আদালতে তোলা হয়। বিচারক তিনদিনের ট্রানজিট রিমান্ডে ধৃতকে নয়াদিল্লি নিয়ে যাবার অনুমতি দিয়েছেন। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় প্রধান অভিযুক্ত পেশায় অ্যাকাউন্ট্যান্ট অঙ্কন বিশ্বাসের বাড়িতে হানা দেন দিল্লি পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা। তখন অঙ্কন বাড়িতে না থাকায় তাঁর বাবা অসীমকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু অসীম বিশ্বাস গোটা বিষয়টি চেপে যেতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, অঙ্কনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নানা উৎস থেকে কোটি কোটি টাকা জমা হতো। আর সেটা জানতেন তাঁর বাবা অসীম বিশ্বাস। ছেলে অ্যাকাউন্টেট, বাবা দাঁতের ডাক্তার। অথচ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে কোটি কোটি টাকা। এই ‘‌আননোন সোর্স’‌ জানতেই বাড়িতে আসে দিল্লি পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। সম্প্রতি অঙ্কনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে একটি উৎস থেকে ঢুকেছে ৭ কোটি টাকা! যার কোনও উত্তর দেননি অসীম। তাছাড়া বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকায় অসীমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কেন গ্রেফতার করা হল?‌ সূত্রের খবর, কোনও একটি চক্রের সঙ্গে জড়িত এই অঙ্কন বিশ্বাস। যা জানেন তাঁর চিকিৎসক বাবা অসীম বিশ্বাস। কিন্তু এই বিষয়ে তিনি মুখ খোলেননি। তদন্তকারীদের সন্দেহ অনেকদিন ধরেই হচ্ছিল। কিন্তু একসঙ্গে ৭ কোটি টাকা ঢোকায় বিষয়টিতে সিলমোহর দেন তদন্তকারীরা। তারপরই ছেলেকে না পেয়ে বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের আইনজীবী তন্ময় দে বলেন, ‘‌আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮৪, ৩৮৫, ৪২০ এবং ১২০বি ধারায় অভিযোগ এনে মামলা করেছে দিল্লি পুলিশ। আমরা আইনের সব দিক খতিয়ে দেখে জামিন চাইব।’‌