NBMC: পুতুলের বাঁশি চলে গিয়েছিল কিশোরের ফুসফুসে, বাজছিল ভেতরে, এরপর যা করল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল

শিলিগুড়ির এনজেপি থানা এলাকার আমবাড়ির কুন্দরদিঘি এলাকার বাসিন্দা বিবেক রায়। বয়স মাত্র ৯ বছর। একটা পুতুল মুখে নিয়ে খেলছিল ওই কিশোর। আচমকাই সেটা অসাবধানে চলে যায় ফুসফুসে। আর তারপরেই মহা সমস্যায় পড়ে যায় বিবেক। এরপর চিন্তায় পড়ে যান বিবেকের বাড়ির লোকজন। পরিবারের দাবি, ছেলেটি যখন শ্বাস প্রশ্বাস নিত তখন যেন ভেতর থেকে শোনা যেত। এদিকে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে কিশোরকে নিয়ে গিয়েছিল পরিবার। কিন্তু সেখানে সাধারণ কিছু ওষুধ দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু বাঁশিটি কোথায় গেল তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় পরিবার। এরপর গত ১৬ মে উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়াল কলেজে শিশুকে নিয়ে যায় পরিবার। সেখানে চিকিৎসকরা তার পরীক্ষা করেন। কিন্তু পরিবারের দাবি তখনও শ্বাস নেওয়ার সময় বাঁশির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল। এদিকে এক্স-রে করে বাঁশির অস্তিত্ব সম্পর্কে টের পাওয়া যায়নি। এরপর আর দেরি করেননি চিকিৎসকরা। সিটি স্ক্য়ান করানো হয়। তারপরই বোঝা যায় বাঁশিটি নাবালকের ডান দিকের ফুসফুসে আটকে রয়েছে। কিন্তু ফুসফুস থেকে বাঁশি বের করা যাবে কীভাবে? 

এদিকে ততক্ষণে পরিবারের টেনশন ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু ওই নাবালককে অপারেশন করাটা যথেষ্ট ঝুঁকির। এরপরই অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা  সিদ্ধান্ত নেন ব্রঙ্কোস্কপির মাধ্যমে বাঁশি বের করা হবে। সেই মতো ইএনটি বিভাগের প্রধান ডাঃ রাধেশ্যাম মাহতো সহ অন্য়ান্য় চিকিৎসকরা কার্যত সবরকম চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত নাবালকের ফুসফুস থেকে বাঁশি বের করতে সমর্থ হন চিকিৎসকরা। এরপরই স্বস্তি পায় পরিবার। স্বস্তি পায় বিবেক। আর চিকিৎসকদের এই সাফল্য়ে খুশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কারণ এই ধরনের বাঁশি ফুসফুসে থেকে গেলে তা থেকে মারাত্মক সংক্রমণ হতে পারত। সেকারণেই আর কোনও ঝুঁকি নেননি চিকিৎসকরা। 

তবে এদিনের এই ঘটনা অভিভাবক ও শিশুদের প্রতিও একটা বড় বার্তা দিল। কারণ অনেক বাড়িতেই শিশুরা বাঁশিযুক্ত খেলনা নিয়ে খেলাধুলা করে। তাদের সতর্ক হওয়া দরকার। না হলে বড় বিপদ হতে পারে।