ওড়িশার করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৯৫জনের। ধাপে ধাপে উদ্ধার করা হয়েছে তাঁদের দেহ। রেললাইনের পাশে সারি সারি লাশ। কিছুক্ষণ আগেও যাঁরা ছিলেন ট্রেনের কামরায় তাঁদেরই নিথর দেহ শুইয়ে রাখা হয়েছে রেললাইনের ধারে। এক এক করে বের করে আনা হচ্ছিল আহত যাত্রীদের। রক্তে ভেসে গিয়েছে শরীর। অ্য়াম্বুল্য়ান্সে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। কিন্তু তাঁদের তো রক্তের দরকার?
সেই সময় ঝাঁপিয়ে পড়লেন অসংখ্য় মানুষ।ছত্তিশগড় ক্য়াডারের আইএএস অবনীশ শরন একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে গভীর রাত পর্যন্ত রক্ত দেওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইন। স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে চান তাঁরা। বালাসোরের একটি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে এই লাইন। তিনি লিখেছেন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের রক্ত দিতে রক্তদাতাদের দীর্ঘ লাইন রাত পর্যন্ত। তাঁদের জন্য় অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসলে এটাই ভারতবর্ষ। যেখানে আহত গোবিন্দ মণ্ডলের জন্য রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন সফিক, রফিকরা। যেখানে আলমের চিকিৎসার জন্য রাত জাগেন প্রশান্ত, তারকরা। এটাই ভারতবর্ষ।
এমন তথ্যও সামনে আসছে, হাত ভেঙে গিয়েছে, মাথা ফেটে গিয়েছে, তবুও অচেনা সহযাত্রীকে বের করে আনার চেষ্টা করেছেন জখম যাত্রী। এই ছবি স্বস্তি দিয়েছে অনেককে। একটাই বার্তা এখনও বেঁচে রয়েছে সহমর্মিতা। দুর্গত সহনাগরিকের জন্য রাত জেগে রক্ত দিলেন অসংখ্যা বাসিন্দা।
সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য়া মানুষ একেবারে অসীম ধৈর্য্য নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁদের সকলের প্রিয়জন যে হাসপাতালে ভর্তি এমনটা নয়। তাঁরা অনেকেই জানেন না জখমদের পরিচয়। তবুও তাঁদের সুস্থতার জন্য়, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তাঁরা রক্ত দিতে এগিয়ে এসেছেন। এই ভিডিয়ো দেখে তারিফ করেছেন অনেকেই।
অনেকেই যখন তাঁদের প্রিয়জনের হারিয়েছেন। অনেকের প্রিয়জন যখন মৃত্যুর সঙ্গে পাল্লা লড়ছেন তখন তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন অচেনা সহ নাগরিকরা। আইএএসের পোস্ট করা ভিডিয়োতে সেই ছবিই সামনে এসেছে।