Coromandel Express Accident: ‘পরপর যেন ডিনামাইট ফাটছে, যাত্রীদের আর্তনাদ…’, শিউরে ওঠা অভিজ্ঞতা টিকিট পরীক্ষকের

আপন গতিতে ছুটছিল যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনেই টিকিট পরীক্ষক হিসাবে ডিউটিতে ছিলেন আশিস সুকুল। খুরদা রোড স্টেশন থেকে তিনি ট্রেনে উঠেছিল। অন্য়ান্যদিনের মতোই ডিউটিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এ-১ কোচের সিট নম্বর ৫এ বসেছিলেন আশিস। আচমকাই বিকট শব্দ। কিছু বুঝে ওঠার আগে পরিস্থিতি একেবারে ভয়াবহ হয়ে যায়। ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সেই রাতের স্মৃতি ভাবলেই শিউরে উঠছেন তিনি।

সংবাদমাধ্য়ম টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, তখন প্রায় সাতটা বাজে। তিনি জানিয়েছেন, আচমকা একটা বিকট আওয়াজ পেলাম। মনে হল যে একেবারে লাইন দিয়ে ডিনামাইট ফাটছে। সেই সঙ্গেই মনে হচ্ছিল কামরা লক্ষ্য় করে যেন কেউ পাথর ছুঁড়ছে। কামরার কাঁচের জানালাগুলো একেবারে গুড়িয়ে যাচ্ছিল। আতঙ্কে চিৎকার শুরু করে দেন যাত্রীরা। 

তিনি জানিয়েছেন, প্রায় ১ কিলোমিটার মতো টেনে নিয়ে যায় আমাদের কামরাটিকে।কিছুটা দূরে গিয়ে ট্রেনটা থামে। তবে তিনি কিছুতেই পরের দুটি বগিকে খুঁজে পাননি। সকলে চিৎকার করছিলেন মরে গেছে, মরে গেছে…এরপর আমি কন্ট্রোল রুমে ফোন করি। গোটা দুর্ঘটনার কথা জানাই। 

এদিকে ১০-১৫ মিনিটের মধ্য়ে অ্য়াম্বুল্যান্স পাঠানো হয়। তিনজন যাত্রীর সামান্য আঘাত লেগেছিল। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। তবে ওই টিকিট পরীক্ষক জানিয়েছেন, প্রতিটি কামরাই ভর্তি ছিল। কিন্তু ওই কামরাগুলির যাত্রীদের বড় কোনও চোট লাগেনি। 

এরপর রাত ১টা নাগাদ ফের যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের চাকা গড়াতে থাকে। প্রথম দিকে মাত্র ১০ কিমি গতিবেগে ট্রেন চলছিল। পরে সেটা ৪০ কিমি গতিবেগে স্পিড তোলা হয়। 

বাড়িতে মাত্র দেড় বছরের মেয়ে। সে হয়তো বুঝতেই পারছে না কত বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে তার বাবা। হয়তো একটু ওদিক হয়ে গেলেই পরিস্থিতি একেবারে ভয়াবহ হয়ে যেতে পারত। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের মতো দুমড়ে মুচড়ে যেতে পারত গোটা ট্রেনটি। কিন্তু সেটা শেষ পর্যন্ত হয়নি। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে যেতে পারত। কিন্তু এখনও সেদিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা ভাবতেই শিউরে উঠছে গোটা পরিবার।