Coromandel Express Accident: ‘চাদর সরাতেই দেখলাম…,’বালেশ্বরে মৃত্যু মিছিল, করমণ্ডল এক্সপ্রেস কাড়ল বাংলার একাধিক প্রাণ

বালেশ্বরের বাহানগা হাই স্কুল। সেই স্কুলের সামনেই বসেছিলেন বাংলার শ্যামপুরের এক পরিবার। দুচোখে শূন্যতা। কাছেই সাদা চাদরে মোড়া দেহ। স্কুলের ঘরের মধ্য়েও সারি সারি দেহ। পুলিশ কর্মীরা একে একে সেই দেহগুলিকে নম্বর দিচ্ছেন। চারপাশে মৃত্য়ুমিছিল। ফুঁপিয়ে কাঁদছেন অনেকেই। আর ওই সাদা চাদরের নীচেই হয়তো শুয়ে রয়েছেন বাংলার অনেকে। তাঁদের সনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে। কেউ হারিয়েছেন তাঁর স্বামীকে, কেউ হারিয়েছেন মাকে, পুত্রকে।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে অনেকেই চিকিৎসা করাতে চেন্নাইতে যান। যা কিছু সঞ্চয় সব নিয়ে চলে যান চেন্নাইতে চিকিৎসা করাতে। বহু পরিযায়ী শ্রমিকও ভিনরাজ্যে কাজ করার জন্য ওই করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন। দুর্ঘটনায় তাঁদের মধ্য়ে জখম হয়েছেন অনেকে। অনেকের আবার খোঁজ মিলছে না। হন্যে হয়ে খুঁজছেন পরিজনরা।

শ্যামপুরের বাসিন্দা এক মহিলা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, স্বামী কটকে চিকিৎসা করানোর জন্য যাচ্ছিলেন। পায়ে ব্য়াথা। এখানে চিকিৎসা করিয়ে কিছু হচ্ছিল না। পরে শুনলাম দুর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে গিয়েছে। ওই মহিলার বোন বলেন, একের পর এক লাশ পড়েছিল। জামাইবাবুকে খুঁজছিলাম। একটা চাদর সরাতেই দেখলাম…বুক ফাটা কান্না বালেশ্বরে। আর্তনাদে ভারী হচ্ছে ওড়িশার বাতাস। এত মৃত্যু! এত রক্ত!  এত হাহাকার!

এই ভয়াবহ ছবি বাহানগায়। পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলের বাসিন্দা ছিলেন সফিক কাজি। পেটের টানে ভিনরাজ্যে কাজে যাচ্ছিলেন। রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে হিসাবে কাজ করেন তিনি। বাড়িতে পাঁচ বছরের সন্তান। কথা ছিল সফিক ভিনরাজ্য়ে কাজ করে টাকা পাঠাবেন। কিন্তু সেটা আর হল না। করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন সফিক। সেই অভিশপ্ত ট্রেনেই শেষ হয়ে গেল তাঁর জীবন। শেষ হয়ে গেল একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য গোটা পরিবারের স্বপ্ন।

বাংলার বহু পরিবারে বিপর্যয় নামিয়ে আনল ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনা।