‘‌আমি চাই সত্যিটা বেরিয়ে আসুক’‌, করমণ্ডল দুর্ঘটনায় আহতদের দেখে মন্তব্য মমতার

করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে আজ, মঙ্গলবার কটকে যান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ট্রেন দুর্ঘটনার পরও তিনি অকুস্থলে এসেছিলেন। তখন থেকেই তিনি দুর্ঘটনার নেপথ্যে থাকা সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। এমনকী তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‌ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।’‌ এবারও সত্যিটা যেন বেরিয়ে আসে বলে মঙ্গলবার কটকে পৌঁছে জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য ওড়িশায় এলেন। এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং শশীা পাঁজা।

এদিকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে বাংলার এখনও ১০৩ জনের দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, মঙ্গলবার কটক মেডিক্যাল কলেজে আহতদের দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে অর্থোপেডিক বিভাগ–সহ অন্যান্য বিভাগে চিকিৎসাধীনদের দেখে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‌এখনও বাংলার ৩১ জন নিখোঁজ রয়েছে। তাঁদের বিষয়ে ওড়িশা সরকার এবং রেলের সঙ্গে সমন্বয় রেখে রাজ্য সরকার খোঁজার চেষ্টা করছে।’‌

অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফল মিষ্টি নিয়ে কটক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন। তারপর সেখান থেকে যান ভুবনেশ্বর এইমস হাসপাতালে এবং তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‌এতগুলি মানুষের প্রাণহানি হল। আমি চাই সত্যিটা বেরিয়ে আসুক। কোনও কিছু যেন ধামাচাপা না দেওয়া হয়। এখন অযথা তর্ক করার সময় নয়। মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত সকলের।’‌ এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বিরোধীদেরও বার্তা দিলেন তিনি। কারণ বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেছেন, এই দুর্ঘটনার পিছনে তৃণমূল কংগ্রেসের হাত আছে। সুতরাং রাজনৈতিক তরজা চলছেই।

তাছাড়া বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই নিহতদের পরিবারের জন্য ৫ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন। আহতদের মাথাপিছু দেওয়া হবে ১ লাখ টাকা। অল্প আহতদের দেওয়া হবে ২৫ হাজার টাকা এবং যাঁরা দুর্ঘটনা থেকে ফিরে এসে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তাঁদের জন্য ১০ হাজার টাকা দেবে বাংলার সরকার। এমনকী আগামী তিন মাস সকল পরিবারকে ২ হাজার টাকা করে মাসিক এবং চাল, ডাল–সহ হেলথ কিট দেবে নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘‌কটক, ভুবনেশ্বর, মেদিনীপুর, কলকাতা মিলিয়ে ২০০ জনের চিকিৎসা চলছে। আর ৬৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কটক থেকে মেদিনীপুরে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করব। আমি চাই সত্য বেরিয়ে আসুক। সেটা আমাদের জানা দরকার। আর এই দুর্ঘটনায় আহত যে সকল মানুষ ১০০ দিনের কাজ করতেন, কেন্দ্র যাদের টাকা মেটায়নি, তাঁদের টাকা দেবে রাজ্য সরকার।’‌