ভয়াল কেউটের সঙ্গে রাত কাটালেন ট্রেন যাত্রীরা, তিস্তা–তোর্সা এক্সপ্রেসে মিলল সাপ

করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। বুকে ভয় নিয়েই ট্রেন সফর করছেন যাত্রীরা। তার মধ্যে বাড়তি ভয়–আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হবে কেউ বুঝতে পারেননি। এমনকী ভয়াল কেউটে সাপের সঙ্গে ট্রেন সফর করতে হবে এটাও কেউ ভাবতে পারেননি। কিন্তু এই ঘটনাই ঘটেছে দুরপাল্লার ট্রেনে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা চাক্ষুষ করে কেউ দৌড়ে অন্যত্র পালিয়েছেন। আবার কেউ ভয়ে নিজের আসনে সিঁটিয়ে সারারাত জেগে কাটিয়েছেন বলে অভিযোগ। এই ভয়ানক ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় হয়ে যায় শিয়ালদা স্টেশন।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ যাত্রীদের সূত্রে খবর, এবার এক্সপ্রেস ট্রেনে কেউটে আতঙ্ক দেখা দিল। গরমের ছুটি অনেক পরিবারই উত্তরবঙ্গে সফরে গিয়েছিলেন। এবার স্কুল খুলবে তাই ফিরছেন তাঁরা। আর তাই তিস্তা–তোর্সা এক্সপ্রেস ধরে ফিরছিলেন যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে তিস্তা–তোর্সা এক্সপ্রেসে ওঠেন যাত্রীরা। বেশ কিছুক্ষণ পর যখন এক যাত্রী তাঁর লাগেজ রাখতে যাচ্ছিলেন তখন এস–১ কামরার এক নম্বর আসনের তলায় দেখতে পান জ্যান্ত কেউটে সাপকে। তাঁর চিৎকারে বাকি যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। রাতারাতি ওই কামরা ফাঁকা হয়ে যায়। ভয়ে সিঁটিয়ে থাকেন যাত্রীরা। শিয়ালদায় এসে নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে রেলের বিরুদ্ধে তুমুল ক্ষোভ উগরে দিলেন যাত্রীরা।

তারপর ঠিক কী ঘটল?‌ যাত্রীদের চেঁচেমিচিতে বিপাকে পড়ে যান রেলের কর্তারা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দ্রুত কন্ট্রোল রুমের মাধ‌্যমে ট্রেনে কেউটে আতঙ্কের খবর পৌঁছে যায় আলুয়াবাড়ি রোডের আরপিএফের কাছে। তারপর নির্দেশ মতো আরপিএফ ইসলামপুরে সাপ ধরতে অভ‌্যস্ত সাপুড়ের দ্বারস্থ হন। তিনি তখন আলুয়াবাড়ি স্টেশনে হাজির হন সাপ ধরার যন্ত্র নিয়ে। দ্রুত তিনটি কামরা ফাঁকা করে একঘণ্টার চেষ্টাতেও খুঁজে পাওয়া যায়নি ভয়াল কেউটে সাপকে। আসলে ততক্ষণে ওই সাপ সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

যাত্রীদের ঠিক অভিযোগ কী?‌ সাপুড়ে সাপ খুঁজে না পেলেও যাত্রীরা নাগকে সচক্ষে দর্শন করেছেন। ফলে আতঙ্ক কাটেনি। ওই অবস্থাতেই ট্রেনটি গন্তব্যের দিকে রওনা দেয। সাপের আতঙ্ক নিয়েই সারা রাত কাটে যাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, ‘‌রাতে ঘুম হয়নি। আতঙ্কে সবাই লাগেজ তুলে রেখেছিলাম। সাপ খুঁজে পাওয়া না গেলেও আমরা তা নিজের চোখে দেখেছি। তাই ভয়েই রাত জাগতে হয়েছে।’‌ এই ঘটনার পর শিয়ালদায় নেমে যাত্রীদের তুমুল ক্ষোভ উগড়ে দেন। তাতে চাপে পড়ে যান রেল কর্তারা। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে উদাসীনতা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।