Protesting wrestlers welcome to compete for the Asian Games

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) থেকে তদন্তের নিশ্চয়তা পাওয়ার পর কুস্তিগীররা তাদের আন্দোলন ১৫ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছে। এবার কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে তাঁরা। যৌন হেনস্থায় (Wrestlers Protest) অভিযুক্ত সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের (Wrestling Federation Of India) সভাপতি তথা বিজেপি (BJP) সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিং-য়ের   (Brij Bhushan Sharan Singh) বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করার দাবি মেনেও নিয়েছে কেন্দ্র। এরপরই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন কুস্তিগীররা। আসন্ন এশিয়ান গেমসে (Asian Games) অংশগ্রহণ করতে চাইছেন কুস্তিগীররা। সেইজন্য ট্রায়ালের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik), ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat), বজরং পুনিয়ারা (Bajrang Punia) মতো প্রথমসারিরি প্রতিবাদী কুস্তিগীররা। 

অবশ্য পুরো ব্যাপারটা কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী (Sports Minister) অনুরাগ ঠাকুরের (Anurag Thakur) জন্য সম্ভব হল। তিনি বলেন, “কুস্তিগীরদের জায়গা রিং-এ। যন্তর মন্তরে নয়। যে ঘটনার জন্য কুস্তিগীররা প্রতিবাদ করেছে সেটা দুর্ভাগ্যজনক। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। আর তাই আমি চাই কুস্তিগীররা অনুশীলনে যোগ দিক। ওদের জন্য ট্রায়ালের ব্যবস্থা করা হয়েছে।” ক্রীড়ামন্ত্রী ফের যোগ করেন, “১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এশিয়ান চ্য়াম্পিয়নশিপের জন্য দল চূড়ান্ত করতে হবে। এরপর সেই তালিকা পাঠাবে হবে অলিম্পিক্স কাউন্সিল অফ এশিয়াকে। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত চিনের হাংঝৌতে বসবে এশিয়ান গেমসের আসর।” এদিকে আন্দোলনকারী কুস্তিগীররা বলেন, “আমরা ট্রায়ালে অংশ নিতে চাই কিন্তু প্রস্তুতি নিতে আমাদের প্রায় একমাস সময় লাগবে।” 

দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীরদের সমস্যা মেটাতে আগেই আসরে নেমেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। আর এবার সমস্যার সমাধান করতে উদ্যোগ নিলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী।  প্রতিবাদী কুস্তিগীরদের সঙ্গে আলোচনার জন্য টুইট করেছিলেন অনুরাগ। আর এরপরেই তাঁর সঙ্গে দেখা করে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ব্রিজভূষণের গ্রেফতার-সহ আরও চার দাবি নিয়ে সরব সাক্ষী মালিক-ভিনেশ ফোগাট-বজরং পুনিয়ারা। 

আরও পড়ুন: MS Dhoni: চলে এল বড় আপডেট, আগামী আইপিএল-এ চেন্নাইয়ের ব্যাটন থাকবে ধোনির হাতেই

আরও পড়ুন: Lionel Messi VS Xavi: বন্ধুত্বে চিড়! ইন্টার মিয়ামিতে যেতেই মেসিকে খোঁচা দিলেন জাভি, কী বললেন?

অনুরাগ ঠাকুরের কাছে কোন পাঁচ দাবি জানালেন কুস্তিগীররা? দেখে নিন: 

১) অভিযুক্ত ব্রিজভূষণকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।জাতীয় কুস্তি সংস্থায় অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে।

২) ভবিষ্যতে  ব্রিজভূষণ এবং তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য জাতীয় কুস্তি সংস্থার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না।

৩) নতুন সংসদ ভবনের সামনে প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় কুস্তিগীরদের বিরুদ্ধে থানায় যে অভিযোগ জানানো হয়েছে সেগুলো খারিজ করতে হবে।

৪) জাতীয় কুস্তি সংস্থায় অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে।

৫) জাতীয় কুস্তি সংস্থার প্রধানের পদে অভিজ্ঞ মহিলাকে নিয়োগ করতে হবে।

বুধবার অর্থাৎ ৭ জুন সকালে অনুরাগ ঠাকুরের বাড়িতে পৌঁছে যান কুস্তিগীররা। সঙ্গে কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েতও। রোদ-ঝড়-জল উপেক্ষা করে, পুলিশের হাতে মারধর খাওয়ার পরও আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। কখনও বিজেপির মহিলা সাংসদদের চিঠি লিখে পাশে দাঁড়ানোর আরজি জানিয়েছেন তো কখনও কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ব্রিজভূষণের গ্রেপ্তারির সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। আবার গত শনিবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গেও দেখা করেন আন্তর্জাতিক স্তরে পদকজয়ী কুস্তিগিররা। কিন্তু সেখানেও অধরা থেকে যায় রফাসূত্র। এবার তাঁদের আমন্ত্রণ জানালেন অনুরাগ ঠাকুর। 

এদিকে দিল্লি পুলিসের (Delhi Police) এসআইটি-র তদন্তকারী দল রবিবার রাতেই ব্রিজভূষণের পৈতৃক বাসভবন বিষ্ণোহরপুরে পৌঁছে গিয়েছিল। সেখানে ১২ জনের বক্তব্য রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে রয়েছেন এমপির ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন, সহযোগী ও নিরাপত্তাকর্মীরা। SIT এর আগে ১২৫ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করে। ফলে এখন কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্তা করার ঘটনায় বয়ান নেওয়া ১৩৭-এ পৌঁছল। গোন্ডা থেকে কয়েকজনের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ও পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছে তদন্ত দল। যদিও দিল্লি পুলিস প্রথমে জানিয়েছিল যে, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পায়নি তারা।

এসআইটি ইতমধ্যেই গোন্ডার মানুষের বয়ান রেকর্ড করেছে। দেশের পাশাপাশি বিদেশে কুস্তি প্রতিযোগিতা চলাকালীন এমপির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত চলেছে। মহিলা কুস্তিগীরদের দাবি সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার করা হয়নি। মঙ্গলবার, যখন সাক্ষী মালিক আবার রেলের চাকরিতে ফিরেছেন, তখন তিনি আন্দোলন থেকে সরে এসে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন এমন খবরে বাজার সরগরম হয়ে ওঠে। বজরং পুনিয়ার ক্ষেত্রেও একই রকম ঘটনা ঘটেছে। তবে সে খবরও অস্বীকার করেছেন। সাক্ষী মালিক এবং বজরং পুনিয়া বলেছিলেন যে তাঁরা অবশ্যই চাকরিতে যোগ দিতে এসেছেন। কিন্তু এর মানে এই নয় যে তাদের আন্দোলন শেষ। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই চলছে। সেটা কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীর উদ্যোগের পর বেশ বোঝা গেল। 

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)