মহাকাশযাত্রীদের নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এল চমকে দেওয়ার মতো তথ্য। বিভিন্ন মহাকাশ অভিযান থেকে ফিরে আসা মহাকাশযাত্রীদের মধ্যে ৩০ জনকে নিয়ে এই পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়। তাতেই পাওয়া গিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা গিয়েছে, অভিযান শেষে ফিরে আসা মহাকাশযাত্রীদের মস্তিষ্কের কোষ ফুলে গিয়েছে। মস্তিষ্কের মধ্যে থাকা ভেন্ট্রিকল নামের একটি গহ্বরই আকারে বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে ফুলে উঠেছে মস্তিষ্ক। এমনকী খুলির মধ্যে মস্তিষ্ক স্বাভাবিক জায়গা থেকে কিছুটা উপরে উঠে গিয়েছে। যাদের উপর পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়, তাদের মধ্যে কেউই এক বছরের বেশি থাকেননি মহাশূন্যে। ফলে বেশি সময় থাকলে কী হতে পারে সেই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে হুহু করে বাড়ছে গাধার সংখ্যা! কী করা হয় এদের? ব্যবসা না অন্য কিছু
আরও পড়ুন: ডায়াবিটিস, রক্তচাপের ভূরি ভূরি রোগী ভারতে, আইসিএমআরের খতিয়ান আঁতকে ওঠার মতো
কেন এমন ঘটনা ঘটছে? বিজ্ঞানীরা জানান, মহাশূন্যে পৃথিবীর মাধ্যকর্ষণ বল কাজ করে না। এর ফলে কোনওকিছুর উপরেই নিয়ন্ত্রণ থাকে না মাধ্যকর্ষণ বলের। সেই কারণেই মস্তিষ্কের ভেন্ট্রিকল ফুলে গিয়েছে। একইসঙ্গে বিজ্ঞানীরা বলেন, এর মধ্যে একটি বিশেষ ধরনের তরল থাকে। সেই তরল মস্তিষ্কে জলের ভারসাম্য ঠিক রাখে। এমনকী মস্তিষ্ককে রক্ষা করে। এর থেকে মস্তিষ্কের কী বিপদ হতে পারে তা এখনও জানা যায়নি। তবে পৃথিবীতে ফিরে আসার পর মস্তিষ্ক স্বাভাবিক হতে প্রায় তিন বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩০ জন মহাকাশযাত্রীদের উপর এই পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্যে আটজন দুই সপ্তাহ মহাকাশে ছিলেন। ১৮ জন মহাকাশে ছয় মাসের অভিযান সম্পূর্ণ করে ফিরেছেন। অন্যদিকে চারজন পুরো এক বছর কাটিয়েছেন পৃথিবীর কক্ষপথে।
ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক র্যাচেল সিডলার বলেন, ‘মহাকাশচারীরা মহাকাশে যত বেশি সময় কাটাচ্ছেন, ততই ফুলে যাচ্ছে মস্তিষ্ক।’ তবে পরীক্ষানিরীক্ষার পর দেখা গিয়েছে, দুই সপ্তাহ কাটিয়ে ফেলার পর মস্তিষ্কের বড়সড় কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। ছয় মাস পর এই বদল থেমে যায় বলেই অনুমান বিজ্ঞানীদের। এই ঘটনার ফলে তাঁদের মত, মহাকাশে বেশি সময় কাটালেও মস্তিষ্কে এর থেকে বেশি প্রভাব পড়বে না। এক দিক থেকে এটা ভালো বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যেহেতু এই পরিবর্তন উত্তরোত্তর বাড়ছে না, তাই কোনওরকম বিপদের আশঙ্কাও কম বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।