পাহাড়ে বিজেপির নেতৃত্বে তৈরি হল ‘মহাজোট’, ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছে তৃণমূল?

দু’দশক পর পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন হচ্ছে। ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হতেই সেখানে নিজেদের হাত শক্ত করে ফেলল বিজেপি। পাহাড়ে বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে মহাজোট গড়ে ফেলল গেরুয়া শিবির। রবিবার বিজেপির নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে ‘যৌথ গোর্খা মঞ্চ’। সেই মঞ্চই এখন পাহাড়-রাজনীতির চর্চায়। তবে কি পাহাড়ে কোণঠাসা হচ্ছে তৃণমূল?

উত্তর হিসাবে নানা প্রসঙ্গ উঠে আসছে। যে ভাবে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি ভাঙিয়ে অনীত থাপার ও তৃণমূল দার্জিলিং পুরসভা দখল করে তা ভালো ভাবে নেয়নি পাহাড়ের মানুষ। অজয় রাজ্য সরকারের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে চাইছিলেন। কিন্তু সেই জায়গায় কার্যত তাঁকে পিছন থেকে ‘ছুরি মেরেছে’ শাসকদল। অন্যদিকে বিজেপির সঙ্গে ত্যাগ করে তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলছিলেন বিমল গুরুং। কিন্তু পুর ভোটে ভালো ফল না হওয়ায় তাঁর সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখেনি দল। সব মিলিয়ে নানা ভাবে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হাওয়ার রাস্তা তৈরি করেছে শাসকদল, তেমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।

সেই সময় অজয়-গুরুংদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। তাঁর কথায়,’তৃণমূল ও তার সঙ্গীরা পাহাড়ে যা করেছে তা বলার নয়। দুর্নীতি, দলভাঙানো-সবই করেছে তারা। এর ফলে বাকিরা একজোট হয়েছে।’

প্রশ্ন উঠেছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার যাত্রা নিয়েও। দার্জিলিং-এ না হওয়ায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

পাহাড়ে তৃণমূলেরই এক নেতা উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘নেতারা এসেছেন নিজেদের চেনা লোকেদের সঙ্গে কথা বলে চলে গিয়েছেন। পাহাড়ে রাজনীতি বোঝার চেষ্টাই করেননি তাঁরা। তার ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।’ তবে পাহাড়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যেমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস একে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর কথায়, জিটিএ নির্বাচনে এই ভাবে একজোট হয়ে লড়াই করেছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পঞ্চায়েত ভোটেও একই পরিণতি হবে।’ (পড়ুন। সংখ্যালঘু ভোট পেতে মরিয়া? মালদায় জেলা পরিষদে ৩ মুসলিম প্রার্থী দিল বিজেপি)

মন্ত্রীর কথায় আত্মবিশ্বাসের ছাপ থাকলেও পাহাড়ে তৃণমূল নেতৃত্ব এই জোটে সিদুঁরে মেঘ দেখছেন। পঞ্চায়েতের পর বছর ঘুরেই লোকসভা ভোট। বিজেপির লক্ষ্য সেদিকেই। গেরুয়া শিবিরের এই রণনীতি সুদুর প্রসারী।