Calcutta High court: অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর ২৭ বছরের বেতনের বকেয়া সুদ সমেত মেটানোর নির্দেশ হাইকোর্টের

১৯৯২ সালে স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসেবে চাকরি পাকা হয়েছিল ব্যক্তির। কিন্তু সেই সময় থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তাঁকে স্থায়ী কর্মীর মতো বেতন দেওয়া হয়নি। সেই সংক্রান্ত মামলায় অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মীর ২৭ বছরের বকেয়া বেতন সুদ সমেত মেটানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আট সপ্তাহের মধ্যে সেই বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কত পরিমাণ সুদ দিতে হবে তাও ধার্য করে দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ ৬ শতাংশ সুদ দিতে হবে।

অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মীর নাম গনেশ চন্দ্র টিকাদার। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার নারায়ণপুর মহিমচন্দ্র জুনিয়র হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। ১৯৭৬ সালের তিনি ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্দেশে কাজে যোগদান করেন। পরে ১৯৭৯ সালে স্কুলটি সরকারি স্বীকৃতি পায়। কিন্তু গণেশের চাকরি স্থায়ী হয়নি। তাই স্থায়ী চাকরির দাবিতে তিনি ১৯৮৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। প্রায় চার বছর ধরে মামলা চলার পর তৎকালীন বিচারপতি মহিতোষ মজুমদার শিক্ষা অধিকর্তাকে বিষয়টি বিবেচনা করার নির্দেশ দেন। কিন্তু তৎকালীন শিক্ষা অধিকর্তা সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর গণেশবাবু আবার কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন। ১৯৯২ সালে সেই সময় বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ওই বছরই স্কুলের আর একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী অবসর নিয়েছেন। তাই গণেশের চাকরি পাকা করা উচিত। সে বিষয়টি বিবেচনার জন্য শিক্ষা অধিকর্তার কাছে পাঠায় কলকাতা হাইকোর্ট। অবশেষে শিক্ষা অধিকর্তা গণেশের চাকরি পাকা করেন। কিন্তু, ১৯৯২ সাল থেকে তাঁর বকেয়া মেটানো হয়নি। উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে তাঁর চাকরি পাকা করা হয়। আবার স্থায়ী করা হলেও সেই হারে তাঁকে বেতন দেওয়া হয়নি।

এরপর আবার ২০১০ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই কর্মী। তাঁর অভিযোগ, বকেয়া মেটানো হয়নি। বছরের পর বছর তাঁকে বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে। আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরে কোনও কাজ হয়নি। মামলাটি ওঠে বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের এজলাসে। অবশেষে গত সপ্তাহে বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ওই কর্মীর বেতনের বকেয়া সুদ সমেত মেটানোর নির্দেশ দেন। বিচারপতি নির্দেশে বলেন, ওই কর্মীকে স্থায়ী হিসেবে দেখানর হলেও তাঁকে স্থায়ী কর্মীর মতো বেতন দেওয়া হয়নি। যদিও সরকারি আইনজীবী তাতে আপত্তি জানান। তবে আদালত জানিয়ে দেয়, এই বঞ্চনার শেষ হওয়া উচিত।