নাইট ক্লাবে বাঁদর ছানাকে শিকল পরিয়ে পার্টি, অমানবিক ঘটনায় গ্রেফতার ২ ব্যক্তি

কলকাতার একটি নাইট ক্লাবে দেখা গিয়েছিল অমানবিক দৃশ্য। একটি বাঁদর ছানাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে রাতভর চলেছিল উদ্যম সার্কাস পার্টি। সেই ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম হল মহম্মদ কায়ুমউদ্দিন এবং মহম্মদ রফি। ধৃতরা দুজনেই পেশায় মাদারি। তাদের গ্রেফতার করার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে দুটি প্রাপ্তবয়স্ক বাঁদর এবং একটি বাঁদর শাবক উদ্ধার হয়েছে। সেগুলিকে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই মাদারিকে বেনিয়াপুকুরের বাঁদরপট্টি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শুক্রবার রাতে হো চি মিন সরণির একটি নাইট ক্লাবে বাঁদর ছানাকে শিকল দিয়ে বেঁধে সার্কাস পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে দেখা যায় কখনও বাঁদর ছানা গানের ছন্দে নাচছে, আবার কখনও ক্লান্ত হয়ে ঝিমিয়ে পড়ছে। আবার কখনও নাইট ক্লাবে আগত যুবক-যুবতী বাঁদর শাবককে নিয়ে টানটানি করছেন। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই সমালোচনার ঝড় ওঠে। পশুপ্রেমীরা এই ঘটনায় সরব হয়ে ওঠেন। তারা এ নিয়ে শেক্সপিয়ার সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ আইনের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে। অভিযোগ পেয়ে অবশেষে পদক্ষেপ করল পুলিশ।

যদিও নাইট ক্লাব কর্তৃপক্ষ এর জন্য ক্ষমা চেয়েছে। তবে বাঁদর ছানাকে নাইট ক্লাবে আনার জন্য তাদের কোনও ভূমিকা নেই বলে দাবি করেছে ওই ক্লাব কর্তৃপক্ষ। বাঁদর ছানাকে কোনওরকম আঘাত বা নিগ্রহ করা হয়নি বলেও দাবি করেছে নাইট ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

তাদের আরও বক্তব্য, বেনিয়াপুকুর থেকে মাদারিরা ওই নাইট ক্লাবের সামনে এসে বসেন। তারা নাইট ক্লাবে ঢোকার জন্য অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু, তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারা নাইট ক্লাবে ঢোকার মুখে সিঁড়িতে বসেছিলেন। নাইট ক্লাব কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তারাও বন্যপ্রাণীদের উপর সংবেদনশীল। প্রসঙ্গত, নাইট ক্লাবের সার্কাস পার্টিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। সেই পার্টিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে বাঁদর ছানা নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ নেটিজেনদের।

অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে নাইট ক্লাবে বাঁদরকে শিকল পড়ানো সেই ভিডিয়ো শেয়ার করে তীব্র সমালোচনা করেন। এমনকী বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান। তারপরে দু’জন মাদারিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ঘটনায় নাইট ক্লাব কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও খতিয়ে যাচ্ছে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ।