বাংলার গণপরিবহণের বাস্তব চিত্রটা এবার সামনে এল। জয়েন্ট ফোরাম অফ ট্রান্সপোর্ট অপারেটর্স মঞ্চের তরফে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি, অ্য়াপ ক্যাব মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার গাড়ি রাস্তাতেই নামতে পারছে না। একেবারে বসে রয়েছে গাড়িগুলি। কিন্তু কেন এই গাড়িগুলি রাস্তায় নামতে পারছে না?
সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, বহু গাড়ির কাগজপত্রের সমস্যা রয়েছে। তারা রাস্তায় বেরলেই পুলিশ ধরবে। তখন আবার তাদের জরিমানা দিতে হবে। মূলত বহু গাড়ির কর বাকি থেকে গিয়েছে, পারমিটের বয়স পেরিয়ে গিয়েছে, সার্টিফিকেট অফ ফিটনেস নিয়েও নানা গলদ। তার জেরে তাদের জরিমানা করা হয়েছে। অথচ সেই জরিমানাও তারা দিতে পারছে না। এদিকে সেই বিপুল জরিমানা দেওয়ার পরে ফের গাড়িগুলিকে রাস্তায় নামানো অনেকের পক্ষেই সম্ভব হচ্ছে না। আবার রাস্তায় বের হলে পুলিশের জুলুমের মুখে পড়তে হতে পারে সেই আশঙ্কায় তারা কোনওভাবেই আর রাস্তায় বের হতে পারছে না। এর জেরে সমস্যা ক্রমশই বাড়ছে।
উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ একাধিক বেসরকারি গণপরিবহণ সংস্থার কর্তারা এই চিঠিতে সই করেছেন। তার মধ্যে অনলাইন অ্য়াপ ক্যাব অপারেটরস গিল্ড, নর্থ বেঙ্গল প্যাসেঞ্জার ট্রান্সপোর্ট অপারেটর কো অর্ডিনেশন কমিটি, অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমণ্বয় সমিতি, সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেস, পুলকার ওয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সহ একাধিক সংগঠন একযোগে এই চিঠি পাঠিয়েছেন।
বেসরকারি গাড়ি ব্যবসার সঙ্গে যুক্তদের একাংশের মতে, একে তো গাড়ির যন্ত্রাংশের দাম ক্রমেই বাড়ছে। সেই সঙ্গেই রাস্তায় বের হলেই মোটা অঙ্কের জরিমানা। আতঙ্কে গাড়ি নিয়ে বের হতে ভরসা পাচ্ছেন না গাড়ি চালকরা।
সংগঠনের তরফে আবেদন করা হয়েছে, আপাতত কিছু জরিমানা নিয়ে গাড়ি গুলিকে রাস্তায় নামার সুযোগ করে দেওয়া হোক। না হলে প্রচুর পরিবার এই বেসরকারি গণপরিবহণের উপর নির্ভরশীল। মারাত্মক সমস্য়ায় পড়েছে তারা। সেই সঙ্গেই বিভিন্ন রুটে বাসের সংখ্য়া কমে গিয়েছে। যার জেরে যাত্রীদের ভিড়ও বাড়ছে। সেক্ষেত্রে মঞ্চের দাবি, এই ২৫ হাজার গাড়ি রাস্তায় নামলে সাধারণ যাত্রীদেরও অনেকটাই সুবিধা হবে। এর মধ্য়ে প্রায় ১০ হাজার বাস মিনিবাস ও ১৫ হাজার ট্যাক্সি, অ্য়াপ ক্যাব রয়েছে। এজন্য তারা পরিবহণ দফতরের কাছে ৬০ দিন সময় চেয়েছে। দফতর অনুমতি দিলে পুজোর আগে বেসরকারি পরিবহণ নিয়ে আর ভোগান্তি হবে না যাত্রীদের।