হুক্কার পাইপ–মদের বোতল পড়ে রয়েছে ঘরে, হুগলিতে আত্মঘাতী তরতাজা যুবক

হুগলিতে এবার আত্মহত্যা করলেন এক তরতাজা যুবক। নতুন চাকরি নিয়ে ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন ব্যান্ডেলে। এরপর ওই যুবকের জীবনে আসে প্রেম। নতুন অফিস থেকেই সেই প্রেম–পর্বের শুরু। এই অফিসের এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শুরুতে বন্ধুত্ব নিমেষে বদলে যায় প্রেমে। এই প্রেমের খবর যুবকের বাড়ির সদস্যরা জানতেন না। বরং ভাল চাকরি পেয়েছে ছেলে এটাই সন্তুষ্টির জায়গা হয়ে উঠেছিল বাবা–মার মনে। কিন্তু এভাবে ছেলের জীবন চলে যাবে সেটা তাঁরা ভাবতেও পারেননি। তাই যুবকের বাড়িতে এখন শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এই যুবক আসলে দাদপুরের বাদিনান গ্রামে বাসিন্দা। চাকরি নিয়েই ওই যুবক আসেন ব্যান্ডেলে। এখানে একটি ঘর ভাড়া নেন। অফিসে কাজের সূত্রে পরিচয় হয়েছিল তরুণীর সঙ্গে। যা বন্ধত্ব থেকে রূপ নিয়েছিল প্রেমের। আবার ছেলে ভাল বেতনের চাকরি পেয়েছে জেনে খুশির হাওয়া বইছিল মা–বাবার হৃদয়ে। কিন্তু সেই খুশির স্থায়ীত্ব যে ক্ষণিকের তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি। একটি অনলাইন বিপণন সংস্থায় কাজ পান দাদপুরের বাদিনান গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত মালিক (‌২৮)‌। প্রেমের সম্পর্ক বেড়ে ওঠায় ব্যান্ডেলের ভাড়া ঘরে প্রায়ই আসতেন ওই তরুণী প্রেমিকা। কিন্তু আজ, রবিবার ওই ঘর থেকেই উদ্ধার হয় রঞ্জিতের ঝুলন্ত দেহ।

কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল?‌ সূত্রের খবর, যুবক রঞ্জিতের সঙ্গে কিছুদিন ধরে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল ওই তরুণীর। এমনকী তাঁদের মধ্যে ঝামেলাও শুরু হয়েছিল। তখন ওই তরুণী তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন। আর অফিসে তাঁর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করবেন বলেও হুমকি দেন ওই তরুণী। যা মেনে নিতে পারেননি যুবক রঞ্জিত। অবশেষে সে নিজেকেই শেষ করে দিলেন। পরিবার সূত্রে খবর, ছেলে একটা সমস্যায় পড়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু সে নিজে মুখে কিছু জানাতে চায়নি। জানতে চাইলেও বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছিল। তা বলে এমন কাণ্ড ঘটবে তা কল্পনাও করতে পারছেন না মা–বাবা।

আরও পড়ুন:‌ মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারের দিনেই পাহাড় সফরে রাজ্যপাল, আজ বৈঠক রাজীবের সঙ্গে

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ এই ঘটনার খবর চাউর হতেই চুঁচুড়া থানার পুলিশ সেখানে হাজির হয়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই তরুণীর খোঁজ করা হচ্ছে। অফিসেও যোগাযোগ করা হয়েছে। ঘরের ভিতর থেকে হুক্কার পাইপ, মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। আর যুবক রঞ্জিত মালিকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে রঞ্জিতের বাবা অনিল মালিক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘ভাল বেতনের চাকরি পেয়েছিল। ওর যে মন খারাপ সেটা আমরা বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু, কিছু খুলে বলেনি। বান্ধবীর সঙ্গে ঝামেলা চলছে একবার মুখ ফস্কে বলে ফেলেছিল। তাই ছেলের অজান্তেই আমরা ব্যান্ডেলে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ফোন করে পাচ্ছিলাম না। তখন বাড়ির মালিককে খবর দিতে বললাম। তিনি জানালেন, ঘরের দরজা বন্ধ। তারপর এসে তো দেখি পড়ে রয়েছে নিথর দেহ।’‌