Mamata Banerjee injury update: উত্তরবঙ্গে কপ্টার দুর্যোগে চোট মমতার, খুঁড়িয়ে ঢুকলেন SSKM-এ, নিলেন না হুইলচেয়ার

চোট পাওয়ায় উত্তরবঙ্গ থেকে সোজা এসএসকেএমে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে হুইলচেয়ার প্রস্তুত রাখা হলেও গাড়িতে থেকে নেমে হেঁটে-হেঁটে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে যান মমতা। তবে তাঁকে কিছুটা খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা গিয়েছে। সেইসময় একজন তাঁকে ধরেও ছিলেন। সূত্রের খবর, মমতার কোমর এবং পায়ে যে চোট লেগেছে, সেজন্য ইতিমধ্যে এসএসকেএমে চিকিৎসকদের দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। তারইমধ্যে চোটের খবর জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কেমন আছেন মমতা, সে বিষয়ে খোঁজ নেন। বড়সড় কোনও বিপদ না হওয়ায় স্বস্তিপ্রকাশ করেন রাজ্যপাল।

কীভাবে চোট পেলেন মমতা? 

পঞ্চায়েত ভোটের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে জলপাইগুড়ির মালবাজারে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর আকাশপথে বাগডোগরার উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়ে তড়িঘড়ি হেলিকপ্টার মুখ ঘুরিয়ে নেন পাইলট। জরুরি অবতরণ করেন সেবকের বায়ুঘাঁটিতে। সূত্রের খবর, হেলিকপ্টার থেকে নামার সময় কোমর এবং পায়ে চোট পান মমতা।

আরও পড়ুন: ‘‌একদিন ওদের থোঁতা মুখ ভোঁতা হয়ে যাবে’‌, বিজেপি বিরোধী জোটের অবস্থান স্পষ্ট মমতার

সেই পরিস্থিতিতে কলকাতায় ফিরে নিজেই গাড়িতে করে এসএসকেএম হাসপাতালে চলে আসেন মমতা। ততক্ষণে এসএসকেএম পৌঁছে যান রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এসে যান এসএসকেএম হাসপাতালের অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়। কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়। তৈরি রাখা হয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।

তারইমধ্যে হাসপাতালে এসে যান মমতা। তাঁর গাড়ির সামনে হুইলচেয়ার আনা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করেন। বরং নিজের গাড়ির সামনের আসন থেকে নেমে নিজেই হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসময় নিজের বাঁ পায়ের দিকে ইশারা করেন। তাঁকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যে হাঁটতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে মমতাকে ধরে-ধরে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্রের খবর, তাঁকে উডবার্ন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হবে। যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন চিকিৎসকরা। বিশেষত দু’বছর আগে বিধানসভা ভোটের আগে মমতা চোট পাওয়ায় কোনওরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ চিকিৎসকরা।

বিরোধীদের তোপ দেবাংশুর

মমতার চোট নিয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দ্রুত সুস্থতা কামনা করলেও সুকান্তের খোঁচা, আজ ভোপাল থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যে কথা বলেছেন, তাতে তাঁর রক্তচাপ বাড়ার কথা ছিল। সেই মন্তব্যের পালটা দিয়েছেন তৃণমূলের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহত হলে কিংবা দুর্ঘটনার কবলে পড়লে যাঁরা যাঁরা পৈশাচিক আনন্দ পান.. তাঁদের সেই অসহায় আর্তনাদ শুনে কষ্ট পাই না, বরং তৃপ্তি পাই। একজন মানুষ কতটা শক্তিশালী আর অপরাজেয় হলে তাঁর আহত হওয়া কিংবা ক্ষতি কামনা করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না!’

দেবাংশ বলেন, ‘বেশি গরম পড়লে আপনি সূর্যকে গালাগাল করতে পারেন কিংবা ঘন মেঘ চেয়ে তাকে কিছুক্ষণ আড়াল করে রাখার কামনা করতে পারেন বড়জোর, এর বেশি ক্ষমতা তো আপনার নেই! সূর্যকে নেভানো কি আমার, আপনার আয়ত্তে আছে?বাম-বিজেপির যে সকল মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে পৈশাচিক আনন্দ করছেন, তাঁদের বলি, চালিয়ে যান। আপনাদের কুদৃষ্টি তাঁর আঁচলে ফুল হয়ে ঝরে পড়বে এবারও.. কারণ, আজ বিপত্তারিণী পুজো। মা সর্বদা তাঁর প্রকৃত সন্তানদের বিপদ হরণ করেন.. আজও তাই করেছেন।’