ধনঞ্জয় চৌবে হত্যাকাণ্ডের কিনারা করল পুলিশ, পাঁচদিনেই গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত

পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে খুন করা হয় পুরুলিয়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে। পুরুলিয়ার আদ্রা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করে অজ্ঞাতপরিচয়ের শার্প শুটাররা। এবার এই খুনের কিনারা করল পুলিশ। পাঁচদিনেই রেলশহর আদ্রায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতার হত্যাকাণ্ডের কিনারা করে ফেলল পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত তথা রেলের সিন্ডিকেটের মাথাকে আগ্নেয়াস্ত্র–সহ গ্রেফতার করল পুলিশ। বেআইনি কাজে বাধা দেওয়ায় এই খুন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।

এই খুনের ঘটনায় পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ‘সিট’ গঠন করা হয়েছিল। এই সিট–এ আছেন পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লানকুসুম ঘোষ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল এবং রঘুনাথপুর এসডিপিও যোধাবর অবিনাশ ভীমরাও। তারপরই এবার মাস্টারমাইন্ডকে ধরে ফেলল পুলিশ। তাঁকে জেরা করে শার্প শুটারদের হদিশ জানতে পারবে পুলিশ। তখন পরবর্তী অপারেশন করা হবে বলে সূত্রের খবর। আদ্রার পুরাতন বাজারের কাছে তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান দলের আদ্রা শহর সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে। গুলিবিদ্ধ হন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীও। এই ঘটনায় আগেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আর তাদেরকে জেরা করেই খুনের মূল ষড়যন্ত্রকারীকে পাকড়াও করা হল।

এদিকে এই খুনের ঘটনার পর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ধনঞ্জয়ের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোন করে কথা বলেছিলেন। ধনঞ্জয় চৌবের আড়রা গ্রামের বাড়িতে যান রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। এই খুনের ঘটনায় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলেছিল। তিনটি গুলি লেগেছিল ধনঞ্জয়ের শরীরে। আর নিরাপত্তারক্ষীর লেগেছিল একটি গুলি। তবে আদ্রা ডিভিশনের রেলের সিন্ডিকেটের মাথাকে গ্রেফতার করার ঘটনা পুরুলিয়া জেলা পুলিশের বড় সাফল্য। এটা না হলে ধনঞ্জয় চৌবের হত্যাকাণ্ডের কিনারা করা সম্ভব হতো না।

আরও পড়ুন:‌ উপাচার্যদের বেতন দিতে হবে, রাজ্যপালের নিয়োগ বৈধ বলে সিলমোহর কলকাতা হাইকোর্টের

পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে?‌ অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তের নাম আরজু মালি। তার আদি বাড়ি বিহারের জামুই এলাকায়। তবে বহুদিন ধরে সে ঝাড়খণ্ডের বোকারোতে থাকত। কারণ এখান থেকেই সে রেলের সিন্ডিকেট চালাত। তার কাছ থেকে ৭.৬৫ এমএম পিস্তল উদ্ধার হয়েছে। বিহারের জামুই থেকেই তাকে ট্র্যাক করা হয়েছিল। নিতুড়িয়ার ইনানপুরে মাঝরাতে তাকে গ্রেফতার করে সিটের সদস্যরা। এই বিষয়ে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‌ধনঞ্জয় চৌবের খুনের ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রকারী তথা রেলের সিন্ডিকেটের মাথাকে আগ্নেয়াস্ত্র–সহ গ্রেফতার করা হয়েছে।’‌ আরজু মালির সঙ্গে আদ্রার বেনিয়াশোলের বাসিন্দা মহম্মদ জামালের পূর্বপরিচয় ছিল। এরা দু’জনেই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।