Patna meeting: পাটনা বৈঠকের পর TMC-র বিরুদ্ধে CPIM-এর অবস্থান কি বদল হল? স্পষ্ট করলেন সেলিম

বিজেপির সঙ্গে তলায় তলায় জোট বেঁধেছে বাম-কংগ্রেস। পঞ্চায়েতের ভোটের প্রচারে এমনটাই বলেছে শাসকদল। খোদ তৃণমূল নেত্রী যাকে বলছেন ‘মহাঘোঁট’। আবার বিজেপি বলছে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাম-কংগ্রেসের লড়াই আসলে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’। তারাই প্রকৃত বিরোধী হিসাবে লড়াই করছেন। বামেদের স্বাধীন পরিসর দিতে চায় না বলেই কেন্দ্র-রাজ্যের শাসকদল এই প্রচার কৌশল নিয়েছে। মানুষ আবার তাদের দিকে ফিরছেন বলেই এই ‘অপপ্রচার’, বলে মনে করেছেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। পটনায় মহা-বৈঠকের পরও রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই জারি থাকছে বলে প্রেস ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে তিনি জানিয়েছেন।

(পড়তে পারেন। বিজেপির অন্দরে এখন মিঠুন–স্বপন–অনির্বাণের লড়াই তুঙ্গে, তিন নেতার দাবি কী?‌)

পাটনার মহা-বৈঠক

পটনায় মহা-বৈঠকের পর প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল-কংগ্রেস-সিপিএম, সেখানে রাজ্যের রণ কৌশল কী হবে? আগেই অবস্থান জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেছেন,’কেন্দ্রে লড়াইয়ের কৌশল যাই হোক না কেন, রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে দল।’ অন্য দিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি কোচবিহারের জনসভা থেকে বলেছেন, ‘আমরা দিল্লিতে বিজেপির বিরুদ্ধে মহাজোট করব। আর এখানে সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি মহাঘোঁট করছে। মহাঘোঁট আমরা ভেঙে দেব। দিল্লিতে মহাজোটই হবে।’

বুধবার কলকাতা প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে মহম্মদ সেলিম বলেন,’পাটনার বৈঠক দেখিয়ে এক দল প্রচার চালাচ্ছে, তৃণমূলের সঙ্গে বামেদের জোট হয়েছে। আর একদল রাম-বাম জোট বলে বিজেপির মিছিলে সিপিএমের পতাকা খুঁজে বেড়াচ্ছে। রাজনীতিদের কেউ স্বাধীন পরিসরই দিচ্ছে না বামেদের।’

সেলিম এদিন জানিয়ে দিয়েছেন, পাটনার পর শিমলায় জোট নিয়ে চর্চা হবে, কিন্তু তাদের রাজ্যে তাঁদের লড়াই থাকবে শাসক দলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের কথায়,’রাজ্যে বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী বিজেপির ফ্যাসিবাদী আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে, ভবিষ্যতেও তা হবে। নবান্নের দুর্নীতি ও দুষ্কৃতীরাজ থেকে ৫৬ ইঞ্চি এসে মানুষকে বাঁচাবে না।’ সেলিম মনে করিয়ে দেন, এই সিদ্ধান্ত তাঁদের কান্নুরে পার্টি কংগ্রেসেই হয়েছিল।

‘জোট’ তকমা কেন?

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের যুক্তি, আসলে বাংলার মানুষ তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হচ্ছেন। বামপন্থীদের পুনরুত্থান হচ্ছে। তাই কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদল ভয় পাচ্ছে। তাঁর দাবি, যদি সুষ্ঠ ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয় তবে বামেদের পুনরুত্থানের ছবিটা আরও স্পষ্ট হবে।

কী বলছে শাসকদল

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ-সহ একাধিক নেতার দাবি, গ্রামের দেওয়ালে, পোস্টারে-ব্যানারে যে ভাবে কোথাও সিপিএম-বিজেপি, কোথাও আবার বিজেপি-কংগ্রেসের যৌথ প্রচারের ছবি উঠে আসছে, তাতে স্পষ্ট তিন বিরোধীদলের তলায় তলায় আঁতাত হয়েছে। তৃণমূল নেত্রীর কথায়,’রাম-বাম-শ্যাম’ জোট। সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ সুন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি বুথে কংগ্রেস-বিজেপির প্রার্থীর যৌথ পোস্টার শাসকদলের দাবিকে আরও জল বাতাস দিয়েছে। যদিও দুই প্রার্থীই দাবি করেছেন, তাঁরা জানেনই না কে ওই পোস্টার দিয়েছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সমবায় সমিতির ভোটে বাম-বিজেপি জোট করে লড়াই করেছে। যদিও সিপিআইএম একে মান্যতা দেয়নি।

প্রশ্ন হল রাজ্যে ‘ঠাই ঠাই’ আর কেন্দ্রে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ভাই ভাই’, আদৌ কি সম্ভাব্য ‘মহাগটবন্ধন’ কে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করাবে? সেই প্রশ্নই এখন গুরুত্বপূর্ণ।