আগামী বছর চড়বেন নাকি টাইটান সাবমেরিনে? এখনও জ্বলজ্বল করছে বিজ্ঞাপন

নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটানের খোঁজ মিলল সবেমাত্র গতকাল। নতুন করে সমুদ্রের তলদেশে টাইটানিক দেখতে যাওয়ার বিজ্ঞাপন দিল টাইটান সাবমেরিনের পরিচালনকারী সংস্থা ওশানগেট। এক শতাব্দী আগে দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়া টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া এতদিন ছিল মানুষের কল্পনার অতীত। দুনিয়াকে বিস্মিত করে সেই অভিযানেই গিয়েছিল সাবমার্সিবল সাবমেরিনটি। যান্ত্রিক ত্রুটি আর জলের অত্যাধিক চাপে ধ্বংস হয় সেটি। দীর্ঘ দশ দিন ধ্বংসপ্রাপ্ত সাবমেরিনটির খোঁজ ছিল না কোনও। 

পাঁচ অভিযাত্রীর রহস্যময় মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই বিশ্ববাসী সাক্ষী হল আর এক আশ্চর্যের। টাইটান পরিচালনকারী সংস্থা ওশানগেট এখনও তাদের ওয়েবসাইটে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনের জন্য বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। অনিশ্চিত এক যাত্রার মর্মান্তিক পরিণতির পরেও কোন যুক্তিতে এখনও এই বিজ্ঞাপন, প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। 

ওশানগেট ওয়েবসাইট অনুসারে, সংস্থাটি আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে দুটি সমুদ্রের গভীরে যাত্রার পরিকল্পনা করেছে। ২৫০,০০০ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ১২ জুন থেকে ২০ জুন এবং ২১ জুন থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত দুটি ভ্রমণের জন্য অভিযাত্রীদের নাম নথিবদ্ধ করা হচ্ছে৷ উল্লেখ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভ্রমণকারী বলা হয়েছে ফরাসি ডুবুরি পিএইচ নারজিওলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিতে, দুর্ভাগ্যক্রমে যিনি এই মাসের শুরুতে টাইটান ডুবোজাহাজ ধ্বংসের ফলে মারা গেছেন। 

সূত্রের খবর কোম্পানির প্রধান স্টকটন রাশ, ব্রিটিশ ধনকুবের হামিশ হার্ডিং, ফরাসি ডাইভিং বিশেষজ্ঞ পল-হেনরি নারজিওলেট এবং পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ এবং তাঁর ছেলে সুলেমান মারা যাওয়ার পরে সংস্থাটি এই অভিযানগুলি ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ বন্ধ করে দেয়। কিন্ত তারপরেও কেন এখনও ওশানগেটের সাইটে জ্বলজ্বল করছে ‘২৪ সালের সমুদ্রের গভীরে যাওয়ার বিজ্ঞাপন, এই প্রশ্নের উত্তর নেই আপাতত। টাইটানের অনুসন্ধান চলাকালীনও কোম্পানিটি তাদের ওয়েবসাইটে সাবপাইলট পদের জন্যও একটি চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে। পরে তীব্র সমালোচনার মুখে এটি সরিয়ে ফেলে তারা।

সম্প্রতি, ইউএস কোস্ট গার্ডের ব্যাপক অনুসন্ধানের পরে টাইটানের খোঁজ মেলে সমুদ্রের পৃষ্ঠ থেকে দুই মাইলেরও বেশি  নীচে এবং দূরত্বে বিচারে নিউফাউন্ডল্যান্ডের উপকূল থেকে 400 মাইল দূরে। বিস্ফোরণে ধ্বংস প্রাপ্ত টাইটানে মানব দেহের অস্তিত্ব আছে কিনা তদন্ত করবেন চিকিৎসক দল। ধ্বংসাবশেষটি পাওয়ার ফলে ঠিক কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তাও জানার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেল। এত কিছুর মাঝেই নতুন করে নেটনাগরিকদের মনে দাগ কেটেছে ওশানগেট সাইটের বিজ্ঞাপন।